সবুজ উইকেটে ফজলে মাহমুদের সেঞ্চুরি, শফিউলের আগুনে বোলিং

উইকেট দেখে ধন্দে পড়ে যেতে পারেন যে কেউ, বাংলাদেশই তো! মাঠ থেকে উইকেট আলাদা করাই কঠিন, এতটা সবুজ চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের ২২ গজ। সেখানেই চোখধাঁধানো সব স্ট্রোকের ফোয়ারা ছুটিয়ে দ্যুতিময় সেঞ্চুরি উপহার দিলেন ফজলে রাব্বি মাহমুদ। পরে আগুন ঝরা বোলিংয়ে ৫ উইকেট নিলেন শফিউল ইসলাম। এক ওভারেই নিয়েছেন ৪ উইকেট!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2020, 01:39 PM
Updated : 31 Jan 2020, 01:59 PM

বিসিএলের নতুন আসরের প্রথম দিনে চট্টগ্রাম দেখল এক দিনেই ১৫ উইকেটের পতন। দক্ষিণাঞ্চল অলআউট ২৬৭ রানে। উত্তরাঞ্চল শুক্রবার দিন শেষ করেছে ৫ উইকেটে ৪৬ রান নিয়ে।

দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে ১৭ চার ও ৩ ছক্কায় ১২৫ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছেন ফজলে মাহমুদ। পরে দুর্দান্ত স্পেলে ৫ উইকেট নিয়ে উত্তরাঞ্চলকে ভুগিয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের পেসার শফিউল। চার জনকেই করেছেন বোল্ড!

ঘাসে ভরা উইকেটে টস জিতে উত্তরাঞ্চল নামে বোলিংয়ে। উইকেট অবশ্য একেবারে ব্যাটসম্যানদের বধ্যভূমি ছিল না। সুইং ও বাউন্স মিলেছে বটে, তবে খুব গতিময় ছিল না। ফজলে মাহমুদ দেখালেন, চাইলে এখানেও খেলা যায় দারুণ।

ম্যাচ শুরু হয় প্রথম বলেই উইকেট দিয়ে। তাসকিন আহমেদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন শাহরিয়ার নাফিস। ফজলে মাহমুদ উইকেটে যান এরপরই।

দক্ষিণাঞ্চলের আরেক ওপেনার এনামুল হককে ১০ রানে বোল্ড করে দেন ইবাদত। চারে নেমে শামসুর রহমান বেছে নেন পাল্টা আক্রমণের পথ। খুব বেশিদূর অবশ্য যেতে পারেননি। ৫ চারে ২৭ রান করা ব্যাটসম্যান বোল্ড হন তাসকিনের বলে।

ফাইল ছবি

চতুর্থ উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৭১ রানের জুটি গড়েন ফজলে মাহমুদ। উইকেটে জমে গিয়েও মাহমুদউল্লাহ বিদায় নেন ৩১ রান করে।পায়ে ক্র্যাম্প করায় লাঞ্চের পর ২ বল করে আর বল করতে পারেননি তাসকিন। তবে সুমন খান, ইবাদত হোসেন, আরিফুল হক নিয়মিত উইকেট এনে দিয়েছেন উত্তরাঞ্চলকে। তাদেরকে সামলেই দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে এগিয়েছেন ফজলে মাহমুদ।

চা বিরতির একটু আগে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি ১৩৯ বলে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার নবম সেঞ্চুরি।

১৬৪ বলে ১২৫ করে ফজলে মাহমুদ আউট হন তানবীর হায়দারের বলে। সারা দিনে স্পিনে উইকেট পড়েছে ওই একটিই। উত্তরাঞ্চলের পেসারদের সামনে ৩৮ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে দক্ষিণাঞ্চল।

উত্তরাঞ্চলের সেই স্বস্তি উবে যায় ব্যাটিংয়ে নেমে। শফিউলের তোপে প্রথম ওভারেই হারায় তারা চার উইকেট!

ইনিংসের প্রথম বলে উইকেট হারিয়েছে তারাও। শফিউলের বলে এলবিডব্লিউ লিটন দাস।

নতুন ব্যাটসম্যান জুনায়েদ সিদ্দিক প্রথম বলে নেন ২ রান। পরের বলেই তিনি বোল্ড। মিজানুর রহমান উইকেটে গিয়ে বোল্ড প্রথম বলেই। ওভারের পঞ্চম বলে নাঈম ইসলাম নেন ২ রান। শেষ বলে তিনিও বোল্ড!

এরপর রনি তালুকদার ও সানজামুল ইসলাম চেষ্টা করেছিলেন প্রতিরোধের। শফিউল শেষ করে দেন সেই প্রচেষ্টাও। সানজামুলকে ফিরিয়ে ভাঙেন ৪২ রানের জুটি। পূর্ণ করেন নিজের ৫ উইকেট।

৬০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে শফিউল মাত্র চতুর্থবার পেলেন ৫ উইকেট।

উত্তরাঞ্চলকে স্বস্তি দিয়ে দিনের খেলা শেষ এর পরপরই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণাঞ্চল: ৬৭.৪ ওভারে ২৬২ (শাহরিয়ার ০, এনামুল ১০, ফজলে মাহমুদ ১২৫, শামসুর ২৭, মাহমুদউল্লাহ ৩১, আল আমিন ২, সোহান ২৬, রাজ্জাক ১৭, কামরুল রাব্বি ১, শফিউল ১৬, আল আমিন ০*; তাসকিন ৯.২-০-৩৩-২, ইবাদত ১৮-৬-৫১-২, সুমন ১৯.৪-২-৬৭-৩, সানজামুল ৭-০-৪২-০, আরিফুল ৭-১-৩০-২, নাঈম ০.৪-০-৫-০, তানবীর ৬-০-৩১-১)।

উত্তরাঞ্চল: ১২ ওভারে ৪৬/৫ (লিটন ০, রনি ২৬*, জুনায়েদ ২, মিজানুর ০, নাঈম ২, সানজামুল ১৬, তানবীর ০*; শফিউল ৬-১-৩০-৫, আল আমিন ৫-০-১৬-০, কামরুল রাব্বি ১-১-০-০)।