বিশ্বকাপ খেলতে রোববার ঢাকা ছাড়বে বাংলাদেশের মেয়েরা। দেশ ছাড়ার আগে দলের অফিসিয়াল ফটোসেশন ছিল বৃহস্পতিবার। সেই আনুষ্ঠানিকতা শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অধিনায়ক সালমা খাতুন জানালেন তাদের ভাবনা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনবার অংশ নিয়ে ১৩ ম্যাচে কেবল ২টি জিতেছে বাংলাদেশ। সেই জয় দুটি এসেছে ২০১৪ বিশ্বকাপে, নিজেদের মাটিতে আয়ারল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সবশেষ দুই আসরে ৮ ম্যাচে জয় নেই একটিও।
এবার সালমাদের লক্ষ্য, সেই জয় খরা কাটানো।
“আমরা তো আশা করে যাই যে ভালো করব, একটি-দুটি ম্যাচ জিতব। এবারও আশা করছি একটি-দুটি ম্যাচ জিতব। সেই আশা নিয়েই বিশ্বকাপে যাচ্ছি।”
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপে আছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের মতো মেয়েদের ক্রিকেটের শক্তিশালী দুই দল। তাদের বিপক্ষে আগে কখনোই খেলেনি বাংলাদেশ। তাদের বিপক্ষেই এবার খেলতে হবে বিরুদ্ধ কন্ডিশনে।
সালমা জানালেন, তারা চান ‘স্মার্ট’ ক্রিকেট খেলতে এবং নিজেদের সেরাটা দিতে।
“অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ড অনেক কঠিন প্রতিপক্ষ। তবে ওরা এখনও আমাদের সম্পর্কে জানে না, আমরাও ওদের সম্পর্কে জানি না। ভিডিওতে ওরা দেখেছে আমাদের, আমরাও দেখেছি ওদের। মাঠে যখন আমরা খেলব, তখনই বুঝতে পারব কে কার চেয়ে ভালো। অবশ্যই নিউ জিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া আমাদের চেয়ে ভালো। আমরা চেষ্টা করব স্মার্ট ক্রিকেট খেলতে।”
“আমরা চেষ্টা করব আমাদের সেরাটা দিতে। ওদেরটা তো ওদের ব্যাপার। আমরা যা শিখেছি, সেটিই ওখানে করার চেষ্টা করব।”
এই লক্ষ্যের পাশাপাশি একটি স্বপ্নও আছে সালমাদের। মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফলাফলের দিক থেকে শীর্ষ ৮ দল পরের আসরে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। বাংলাদেশ গত দুইবার পারেনি সেরা আটে থাকতে, বিশ্বকাপ খেলতে হয়েছে বাছাইপর্ব উতরে। সেই ঝামেলায় আর যেতে চান না সালমা।
“পরের বিশ্বকাপে যেন আমাদের কোয়ালিফাই খেলতে না হয়, সেটি চাইব।”
অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে গ্রুপে বাংলাদেশের অন্য দুই প্রতিপক্ষ ভারত ও শ্রীলঙ্কা। গত এশিয়া কাপে ভারতকে দুইবার হারিয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাস্তবতা হলো, ভারত অনেক শক্তিশালী বাংলাদেশের চেয়ে। তাই বাস্তব সম্ভাবনায় শ্রীলঙ্কাই হতে পারে বাংলাদেশের মূল ‘টার্গেট।’
সহ-অধিনায়ক ও দলের সেরা অলরাউন্ডার রুমানা আহমেদের কথায় সেটির ইঙ্গিতই মিলল।
“এশিয়া কাপ অনেক আগেই চলে গেছে। তারপর অনেক ম্যাচ খেলেছি আমরা। মেয়েরা ভালোই করেছে। এবার বিশ্বকাপে বড় বড় দলের সঙ্গে খেলা। সবটুকু দিয়ে অনেক ভালো করতে চেষ্টা করব।”
“অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ড অনেক ভালো দল। ভারতকে এশিয়া কাপে দুবার হারালেও কাজটা অনেক কঠিন। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভালো কিছু করতে পারব বলে আমরা আশা করি।”
আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসর। তবে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ দল চলে যাচ্ছে একটু আগেই।
আগামী ৭, ১০ ও ১২ ফেব্রুয়ারি নিজেদের ব্যবস্থায় তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ গোল্ডকোস্টে। এরপর ১৬ ও ২০ ফেব্রুয়ারি অফিসিয়াল দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড ও পাকিস্তান।
মূল বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২৪ ফেব্রুয়ারি, ভারতের বিপক্ষে পার্থে।
বাংলাদেশ দল: সালমা খাতুন (অধিনায়ক), রুমানা আহমেদ (সহ-অধিনায়ক), জাহানারা আলম, শামিমা সুলতানা, মুর্শিদা খাতুন, আয়েশা রহমান, নিগার সুলতানা, সানজিদা ইসলাম, খাদিজা-তুল-কুবরা, পান্না ঘোষ, ফারজানা হক, নাহিদা আক্তার, ফাহিমা খাতুন, রিতু মনি, সোবহানা মুস্তারি।
স্ট্যান্ড বাই: শায়লা শারমিন, সুরাইয়া আজমিন, লতা মণ্ডল, পুজা চক্রবর্তি, রাবেয়া