২০১৯: বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুঃস্বপ্নের বছর

মাঠের পারফরম্যান্সের ছিল জীর্ণ দশা। মাঠের বাইরের পরিস্থিতি জর্জর ছিল আন্দোলন-বিতর্কের থাবায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটের অধরা শিরোপা যদিও অবশেষে ধরা দিয়েছে এই বছরই। কিন্তু সেই ছোট সাফল্য চাপা পড়ে গেছে বড় সব ব্যর্থতার আড়ালে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভুলে যাওয়ার মতো একটি বছর ২০১৯।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2019, 02:03 AM
Updated : 30 Dec 2019, 02:05 AM

ভুলে যাওয়ার মতো হলেও আসলে ভুলে যাওয়া হবে কঠিন। বিদায়ী বছরের সবচেয়ে বড় ধাক্কা ছিল যেটি, সেটির জেরে নতুন বছরেও ১০ মাস ভুগতে হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে। সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞা!

নিষিদ্ধ সাকিব

এই বছরের সবচেয়ে আলোচিত অধ্যায় তো বটেই, সম্ভবত বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম বড় ঘটনা এটি। জুয়ারির সঙ্গে কথোপকথন গোপন করায় এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন সাকিবকে।

বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কাঁপিয়ে দেয় সাকিবের নিষেধাজ্ঞা। নাড়িয়ে দেয় গোটা ক্রিকেট বিশ্বকেই।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসি জানায়, ২০১৮ সালে চার মাসের মধ্যে তিনবার জুয়ারির সঙ্গে কথা হলেও তা সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গোপন রাখেন সাকিব। জুয়ারির সঙ্গে তিনি দেখাও করতে চেয়েছিলেন। সব মিলিয়েই তাকে দেওয়া হয় শাস্তি। সাকিব অপরাধ ও শাস্তি মেনে নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন।

নতুন করে আইসিসির বিধি না ভাঙলে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর শেষ হবে তার নিষেধাজ্ঞা। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রাথমিক পর্ব তো বটেই, দ্বিতীয় পর্বে উঠলে সেখানেও বাংলাদেশের দুটি ম্যাচ ততদিনে শেষ হয়ে যাবে।

সাকিবের নিষেধাজ্ঞার খবর যেদিন এলো, তার পরদিনই ভারত সফরে যাওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের। দলের সেরা পারফরমারই শুধু নয়, সাকিব ছিলেন দুই সংস্করণের অধিনায়ক। নিয়মিত অধিনায়ককে হারিয়ে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে নতুন অধিনায়ক নিয়ে ভারত সফরে যায় বাংলাদেশ।

সাকিবের নিষেধাজ্ঞার ধাক্কাটি এসেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের টালমাটাল কয়েকটি দিনের পর। ক্রিকেটারদের নজিরবিহীন ধর্মঘটে প্রায় অচল ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট। সেটির পুরোভাগেও ছিলেন সাকিব।

ক্রিকেটারদের ধর্মঘট

জাতীয় লিগের খেলা চলছিল তখন। দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা শেষ হওয়ার পরদিন থেকে শুরু হয় মাঠের বাইরের খেলা।

২১ অক্টোবর সকালে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন ৬০ জনের মতো ক্রিকেটার। নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর দুপুরের দিকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তারা জানান ১১ দফা দাবি। একেকজন ক্রিকেটার উত্থাপন করেন একেকটি দাবি। ক্রিকেটাদের পক্ষ থেকে সাকিব আল হাসান জানিয়ে দেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন তারা।

দাবিগুলোর মধ্যে ছিল ক্রিকেটারদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়া, ঘরোয়া ক্রিকেটের সংস্কৃতি ও অবকাঠামোর উন্নয়ন, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো, ম্যাচ ফি ও অন্যান্য ভাতা বাড়ানো, বিপিএল ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে পারিশ্রমিকের ধারা বদল, আম্পায়ারিংয়ের মানোন্নয়ন, টুর্নামেন্ট বাড়ানো, সুনির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার মেনে চলা, আম্পায়ার-মাঠকর্মী সবার পারিশ্রমিক বাড়ানোসহ আরও কিছু দাবি।

দাবিগুলোর বেশির ভাগই ছিল মৌলিক, একটি টেস্ট খেলুড়ে দেশে এমনিতেই যেসব থাকার কথা।  

ক্রিকেটারদের এই আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য একটি দিক ছিল, ওয়ানডে অধিনায়ক ও সিনিয়র ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজার অনুপস্থিতি। তাকে নিয়ে নানা ধুম্রজালের মধ্যে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, তাকে কিছু জানানো হয়নি বলেই ছিলেন না। তবে দাবিগুলোর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন তিনি।

ধর্মঘটের পরদিন সভায় বসে বিসিবি। সভার পর জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এই ধর্মঘটকে বিশেষ মহলের চক্রান্ত বলে উষ্মা প্রকাশ করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। ক্রিকেটারদের নিয়ে আপত্তিকর অনেক কথা বলে আলোচনার জন্ম দেন নতুন করে। তবে ক্রিকেটারদের আলোচনায় বসার আহবানও জানান তিনি।

ধর্মঘটের তৃতীয় দিন রাজধানীর একটি হোটেল আবারও একত্রিত হন ক্রিকেটাররা। আগের ১১ দফায় দাবির সঙ্গে যোগ হয় আরও দাবি। বিসিবিতে আলোচনার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন বিসিবি কর্তারা। দিনভর উত্তেজনা শেষে রাতে ক্রিকেটাররা বোর্ডে যান আলোচনা করতে। রাত ১১টায় আসে ধর্মঘট শেষের ঘোষণা। ক্রিকেটারদের দাবির কয়েকটি মানা হয় কিছুটা, বাকিগুলো নিয়ে মেলে আশ্বাস।

বছর শুরুর অঘটন

বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বছরের শুরুটাই ছিল মাঠের বাইরের ঘটনায় শিরোণাম হয়ে। নিউ জিল্যান্ড সফরে যাওয়া বাংলাদেশ অল্পের জন্য বেঁচে যায় বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া থেকে।

ক্রাইস্টচার্চের একটি মসজিদে জুমার নামাজে মিলিটারি ধাঁচের ক্যামোফ্লাজড পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি অটোমেটিক রাইফেল হাতে ঢুকে প্রায় ২০ মিনিট ধরে গুলি চালায়। গোলাগুলি শুরুর একটু পর মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। পরিস্থিতি বুঝে তারা দ্রুত সরে যান সেখান থেকে।

সেই ঘটনার পর বাতিল করা হয় সিরিজের তৃতীয় টেস্ট। বাংলাদেশ দলকে ফিরিয়ে আনা হয় দেশে।

প্রথম শিরোপা

বিশ্বকাপে বড় কিছুর স্বপ্ন নিয়ে প্রায় ৩ মাসের লম্বা সফরে দেশ ছেড়েছিল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ছিল প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট। সেই টুর্নামেন্টই বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিল আনন্দের উপলক্ষ্য। অবসান হয়েছিল দীর্ঘ প্রতীক্ষার। আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে হওয়া ত্রিদেশীয় আসরের শিরোপা জিতে বাংলাদেশ পায় প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফির ছোঁয়া।

ডাবলিনে ফাইনালে বাংলাদেশ হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ক্যারিবিয়ানদের অবশ্য সেরা দলটি খেলেনি সেই টুর্নামেন্টে। বৃষ্টিবিঘ্নিত ফাইনাল তারপরও জমেছিল দারুণ। কঠিন রান তাড়ায় বাংলাদেশ জিতে যায় মোসাদ্দেক হোসেনের ২৭ বলে ৫২ রানের দুর্দান্ত অপরাজিত ইনিংসে।

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্নের পালে আরও জোর হাওয়া লাগে সেই সাফল্যে।

বিশ্বকাপ হতাশা ও সাকিব-বিস্ময়

লম্বা টুর্নামেন্ট, পরস্পরের সঙ্গে লড়াই সব দলের। বিশ্বকাপ তাই বাংলাদেশের জন্য ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ। তারপরও আশা ছিল আকাশ ছোঁয়া।

মূল ক্রিকেটাররা দারুণ অভিজ্ঞ, আগের কয়েক বছরে দলের পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত। কন্ডিশন বাংলাদেশের জন্য প্রতিকূল হলেও স্বপ্ন দেখাটা অমূলক ছিল না।

শুরুটাও ছিল আশার হাওয়ায় ডানা মেলে। প্রথম ম্যাচে নিজেদের রেকর্ড রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়, পরের ম্যাচে জোর লড়াইয়ের পর নিউ জিল্যান্ডের কাছে হার। বাংলাদেশ ছড়িয়ে দিয়েছিল বড় কিছু করার বার্তা।

কিন্তু সময় যত গড়ায়, মলিন পারফরম্যান্সে মিলিয়ে যায় সেই বার্তা। মুখ খুবড়ে পড়ে স্বপ্ন। ম্যাচের পর ম্যাচ ব্যাটে-বলে অতিমানবীয় পারফরম্যান্স উপহার দেন সাকিব। কিন্তু সতীর্থদের ব্যর্থতায় বাংলাদেশের হারের তালিকা হয় লম্বা। প্রথম ম্যাচের পর দারুণ রান তাড়ায় জয় আসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে আসে প্রত্যাশিত জয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ ভেস্তে যায় বৃষ্টিতে। বাকি সব ম্যাচে সঙ্গী পরাজয়।

লক্ষ্য ছিল শেষ চারে জায়গা করে নেওয়া, ১০ দলের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ শেষ করে অষ্টম স্থানে থেকে।

দলের হতাশার এই টুর্নামেন্টও বিস্ময়কর সাফল্যে রাঙান সাকিব। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ছিলেন তিনি অনেক আগে থেকেই। এই টুর্নামেন্টে তবু নিজেকে চেনান নতুন করে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ছিলেন অনেক দিন থেকেই। কিন্তু বৈশ্বিক কোনো আসরে দাপুটে পারফরম্যান্সে ছিল ঘাটতি। সাকিব সেই দাবি মেটান বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা পারফরম্যান্সে।

৮ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরিতে ৬০৬ রান করেছিলেন সাকিব ৮৬.৫৭ গড়ে। উইকেট ছিল ১১টি। বিশ্বকাপের কোনো আসরে এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি আর কেউ। ১০ উইকেটের পাশে ৪০০ রানও ছিল না আগে আর কারও।

বিশ্বকাপে সাকিব যেমন উপহার দেন অভাবনীয় আনন্দ, অধিনায়ক মাশরাফি ততটাই ছিলেন বিষাদের প্রতিশব্দ। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে পাওয়া হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট তাকে ভোগায় বিশ্বকাপ জুড়ে। দেশের সফলতম ওয়ানডে বোলার এই আসরে ৮ ম্যাচে নিতে পেরেছিলেন কেবল এক উইকেট, বোলিংও ছিল ধারহীন। হতাশাজনক পারফরম্যান্স ছিল দেশের সফলতম ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালেরও।

এবং আরও যত হতাশা

শুধু বিশ্বকাপ নয়, আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রত্যাশিত সাফল্য বাদ দিলে বছর জুড়ে মাঠ থেকে কেবল হতাশাই দিয়েছে বাংলাদেশ দল।

বছরের শুরুতে নিউ জিল্যান্ডে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্টের সবকটি হারে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের পরপর শ্রীলঙ্কা সফরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হয় হোয়াইটওয়াশড।

সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচটি সম্ভবত বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে হতাশার ম্যাচগুলির একটি। টেস্টের নবীন দলের বিপক্ষে চট্টগ্রামে বড় ব্যবধানে হেরে বসে বাংলাদেশ। বৃষ্টির সৌজন্যে ড্র করার সুযোগ থাকলেও শেষ দিনে শেষ ঘণ্টার চ্যালেঞ্জে বাজেভাবে ভেঙে পড়ে দল।

বছরের শেষ দিকে ভারত সফর শুরু হয়েছিল প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দারুণ এক জয়ে। কিন্তু এরপর যথারীতি প্রাপ্তি বাকি সব ম্যাচে হার।

এই সফরেই প্রথমবারের মতো দিন-রাতের টেস্ট খেলে বাংলাদেশ, কলকাতায়। সফরের ঠিক আগমুহূর্তে প্রস্তাব পেয়ে, কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়া গোলাপি বলে বাংলাদেশের খেলতে রাজি হওয়া নিয়ে ছিল অনেক প্রশ্ন। তবে দলের পারফরম্যান্স এত বাজে ছিল যে, চাপা পড়ে যায় সব পারিপার্শ্বিকতা।

সব মিলিয়ে এই বছরে ৫ টেস্ট খেলে সবকটি হেরেছে বাংলাদেশ, ১৮ ওয়ানডেতে জয় কেবল ৮টি, সাত টি-টোয়েন্টিতে জয় ৪টি।

গত ৭ বছরে এই প্রথমবার বছরের সব টেস্টে হারল বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে ১০টির বেশি ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ ফিরে এলো ৪ বছর পর।

২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ থাকলেও বিশ্বকাপের পর চাকরি হারান বাংলাদেশের প্রধান কোচ স্টিভ রোডস। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের কথায় যদিও ইঙ্গিত মেলে, তার পছন্দের একাদশ বদলে দেওয়া, বেশ কিছু ব্যাপারে মতবিরোধই ছিল কোচের চাকরি যাওয়ার মূল কারণ!

শুধু কোচের প্রসঙ্গেই নয়, নানা প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতির মন্তব্য, বক্তব্য, অতি উৎসাহী ভূমিকা আগের বছরগুলোর মতোই জন্ম দিয়েছে প্রবল আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্কের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বছর জুড়ে সবচেয়ে সমালোচিত মানুষটি সম্ভবত তিনিই।

ক্যাসিনোকাণ্ডে বিসিবির প্রভাবশালী পরিচালক ও বিসিবি প্রধানের বন্ধু লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন অস্ট্রেলিয়ার অর্থ পাচারের কথা। তিনি জেলে আছেন এখনও। আরেক বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনাম ছিলেন দুদকের সন্দেহের জালে। এখনও তার বিদেশ ভ্রমণে আছে নিষেধাজ্ঞা। সব মিলিয়ে বিসিবির ভাবমূর্তির সঙ্কট দেখা দিয়েছে প্রবলভাবে।

বিশ্বকাপ দিয়ে শেষ হয় বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের মেয়াদ। স্পিন কোচ সুনীল যোশির দায়িত্বও শেষ হয়। নতুন প্রধান কোচ হয়ে আসেন দক্ষিণ আফ্রিকার রাসেল ডমিঙ্গো। স্পিন কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয় নিউ জিল্যান্ডের কিংবদন্তি ড্যানিয়েল ভেটোরিকে, পেস বোলিং কোচ ডমিঙ্গোর স্বদেশি শার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট। বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ ছেড়ে নিজ দেশের দায়িত্বে নিতে ফিরে গেছেন ল্যাঙ্গাভেল্ট।

বিতর্কে ভরা বছরের শেষটায় ছিল একই দশা। আগের বছরের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে বিরোধ হওয়ায় বিসিবি ঘোষণা দেয় বিশেষ বিপিএল আয়োজনের। সব ফ্র্যাঞ্চাইজি রাখা হয় বিসিবির ব্যবস্থাপনায়। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীকে সামনে রেখে নামকরণ করা হয় ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএল।’

বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, ইতিহাসের সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ উদ্বোধন হবে এই বিপিএলের। তবে সেই উদ্বোধনী আয়োজন প্রশংসা পেয়েছে সামান্যই, সমালোচনা হয়েছে প্রবল। মূল টুর্নামেন্টও শুরু হয় নানা অব্যবস্থাপনার মধ্যে।

সেই রেশ নিয়ে শেষ হচ্ছে বছর। নতুন বছরেও প্রথম মাসের অর্ধেক চলে যাবে বিপিএল দিয়েই। কাজেই ধরে নেওয়া যায়, নতুন বছরের শুরুতেও বিতর্কের উপকরণ থাকবে যথেষ্টই!