৩৪ বছর বয়স এমনিতে এই যুগে খুব বেশি নয়। তবে একের পর এক চোটই হয়তো তাকে প্রভাবিত করেছে ক্যারিয়ারের ইতি টানতে। পিছু না ছাড়া চোটের কারণে গত দেড় বছরে কেবল ৬টি ম্যাচ খেলতে পেরেছেন ফিল্যান্ডার।
সেঞ্চুরিয়নে বক্সিং ডে টেস্ট দিয়ে শুরু হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার ৪ ম্যাচের সিরিজ।
ক্যারিয়ারের শেষ সিরিজ শুরুর আগে ৬০ টেস্টে ২১৬ উইকেট নিয়েছেন ফিল্যান্ডার। ৫ উইকেটের দেখা পেয়েছেন ১৩ বার, ২ বার পেয়েছেন ১০ উইকেটের স্বাদ। তার বোলিং গড় ২২.১৬, কমপক্ষে ২০০ উইকেট শিকারি বোলাদের মধ্যে টেস্ট ইতিহাসের ষষ্ঠ সেরা গড়।
রঙিন পোশাকে অবশ্য ততটা উজ্জ্বল নয় ক্যারিয়ার। ৩০ ওয়ানডেতে উইকেট ৪১টি, ৭ টি-টোয়েন্টিতে উইকেট ৪টি।
মন্দ ছিল না তার ব্যাটের হাতও। ক্যারিয়ারের শুরুতে সম্ভাবনাময় অলরাউন্ডার হিসেবেই ভাবা হচ্ছিল তাকে। সেই প্রতিশ্রুতি পূর্ণতা না পেলেও টেস্টে আছে ৮টি ফিফটি। রান করেছেন দেড় হাজারের বেশি।
তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটা অবশ্য রঙিন পোশাক দিয়েই। ২০০৭ সালে ওয়ানডে অভিষেকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিয়েছিলেন ১২ রানে ৪ উইকেট। তবে পরের চার ওয়ানডে মিলিয়ে ২ উইকেট নিলে বাদ পড়ে যান।
সেই বছর দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ দিয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়। কিন্তু ৭ ম্যাচ খেলে টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ক্যারিয়ার থমকেও যায় সে বছরই।
৩ বছর বাইরে থাকার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন নতুন রূপে। টেস্ট ক্রিকেট দিয়ে শুরু হয় তার ক্যারিয়ারের সফলতম অধ্যায়ের।
২০১১ সালে টেস্ট অভিষেকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ইনিংস মিলিয়ে নেন ৮ উইকেট। নিজেরা এক ইনিংসে ৯৬ রানে গুটিয়ে গিয়েও অস্ট্রেলিয়াকে ৪৭ রানে অলআউট করে পরে ম্যাচ জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। স্মরণীয় সেই জয়ে ম্যাচ সেরা ছিলেন ফিল্যান্ডার।
তার অবিশ্বাস্য পথচলা চলতে থাকে এরপরও। ৫ উইকেটের দেখা পান দ্বিতীয় টেস্টেও। তৃতীয় টেস্টে পান ম্যাচে ১০ উইকেটের স্বাদ। ৭ টেস্টে স্পর্শ করে পঞ্চাশ উইকেট, টেস্ট ইতিহাসেই যা দ্বিতীয় দ্রুততম। প্রথম ১৫ টেস্টে ৫ উইকেটের দেখা পেয়েছেন ৯ বার!
অভিষেকের পর থেকেই লাল বলে দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম ভরসা। সহায়ক কন্ডিশনে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর পেসারদের একজন। দেশের মাটিতে ও ইংল্যান্ড-নিউ জিল্যান্ডে তাই তার রেকর্ড দারুণ। উপমহাদেশের পেস বিরুদ্ধ কন্ডিশনে অবশ্য ধুঁকেছেন বরাবরই। এশিয়ায় ১০ টেস্ট খেলে উইকেট মোটে ১৬টি।
টেস্ট সাফল্যের এই সময়টাতেও সেভাবে সাফল্য পাননি ওয়ানডেতে। পারেননি কখনও থিতু হতে। অভিষেকের সেই পারফরম্যান্সই এই সংস্করণে তার সেরা বোলিং।
চোটের সঙ্গে লড়াইয়ের কারণেই হয়তো সাম্প্রতিক সময়ে তার বোলিংয়ে ধার কম বলে মনে হচ্ছিল। তিনিও তাই মেনে নিয়েছেন নিয়তি।
ভবিষ্যৎ পথচলা নিয়ে এখনও সেভাবে সিদ্ধান্ত নেননি। তবে জানিয়ে রেখেছেন, কাজ করতে চান তরুণ ও উঠতি ক্রিকেটারদের নিয়ে।