ইংল্যান্ডের সবসময়ের সেরা পেসারদের একজন মনে করা হয় তাকে। ৬ ফুট ৬ ইঙ্গি উচ্চতার একহারা গড়নের তরুণ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতেন বল হাতে। সেই সময়ের ক্যারিবিয়ান ও অস্ট্রেলিয়ান পেস ব্যাটারির ইংলিশ জবাব বলা হতো উইলিসের আগ্রাসী বোলিংকে।
১৯৭১ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত উইলিস খেলেন ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত। খেলা ছাড়ার সময় তার নামের পাশে ছিল ৯০ টেস্টে ৩২৫ উইকেট। তখন তিনি ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সফলতম টেস্ট বোলার। তার অবসরের দীর্ঘদিন পরও তাকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছেন ইংল্যান্ডের কেবল তিন বোলার, ইয়ান বোথাম (৩৮৩), স্টুয়ার্ট ব্রড (৪৭১) ও জিমি অ্যান্ডারসন (৫৭৫)।
ইংল্যান্ডকে ১৮ টেস্ট ও ২৯ ওয়ানডেতে নেতৃত্বও দিয়েছিলেন উইলিস। ৬৪ ওয়ানডেতে তার উইকেট ৮০টি। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ১৯৭৯ বিশ্বকাপে, নেতৃত্ব দিয়েছেন ১৯৮৩ বিশ্বকাপে।
উইলিস ক্রিকেট ইতিহাসে আলাদা জায়গা নিয়ে থাকবেন চোটকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রবল প্রতাপে খেলে যাওয়ার বিস্ময়কর সামর্থ্যের কারণেও। ১৯৭৫ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে অস্ত্রোপচার হয়েছিল তার দুই হাঁটুতেই। একজন ফাস্ট বোলারের জন্য সেই ধাক্কা সামলে শীর্ষ পর্যায়ে খেলা চালিয়ে যাওয়া কঠিন। কিন্তু উইলিস সম্ভব করেছিলেন প্রায় অসম্ভবকে। প্রচণ্ড ব্যথা সয়ে খেলেছেন দিনের পর দিন। পায়ের শক্তি ফিরে পেতে একটা পর্যায়ে প্রতিদিন দৌড়েছেন ৫ মাইল। কিন্তু হার মানেননি। জোড়া অস্ত্রোপচারের পরও সব সংশয় উড়িয়ে আরও ৯ বছর খেলে গেছেন দাপটে। নিজেকে তুলে নেন সর্বকালের সেরাদের উচ্চতায়।
খেলা ছাড়ার পর উইলিস নাম লেখান ধারাভাষ্যে। কাজ করেন বিবিসি ও স্কাই স্পোর্টসে। খেলোয়াড়ী জীবনে অনেক লড়াইয়ের সঙ্গী বোথামের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে তুলেছিলেন মাইক্রোফোন হাতেও।
বিশ্লেষক হিসেবেও উইলিস রেখেছেন আলাদা ছাপ। সমালোচনায় রাখঢাক রাখতেন সামান্যই, তবে সেখানেও দারুণ রস মিশিয়ে পেয়েছিলেন জনপ্রিয়তা। সবশেষ ইংলিশ মৌসুমেও কাজ করেছেন বিশ্লেষক হিসেবে। সব স্মৃতি রেখে চলে গেলেন তিনি সবকিছুর উর্ধ্বে।