সবচেয়ে বড় মঞ্চের জন্য মার্শালের প্রস্তুতি

টেস্ট খেলার স্বপ্ন দেখা ক্রিকেটাররা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন জাতীয় ক্রিকেট লিগ বা এনসিএলের জন্য। তাদের একজন মার্শাল আইয়ুব। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান মনে করেন, জাতীয় দলের বাইরে থাকাদের নিজেদের প্রমাণের সবচেয়ে বড় মঞ্চ এনসিএল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2019, 02:13 PM
Updated : 5 Oct 2019, 02:13 PM

বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটের সঙ্গে বেশ মানানসই মার্শালের ব্যাটিং। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করে ডাক পান টেস্ট দলে। ২০১৩ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রামে হয় টেস্ট অভিষেক। পরের বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে খেলার পর বাদ পড়েন দল থেকে।

৩ টেস্টে থমকে আছে ৩০ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের টেস্ট ক্যারিয়ার। চন্দিকা হাথুরুসিংহে দায়িত্ব নেওয়ার পর টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে পাল্টে যায় বাংলাদেশের ভাবনা। স্পিন সহায়ক উইকেটে দ্রুত রান তোলার আশায় খেলানো হয় সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকারের মতো মারকুটে ব্যাটসম্যানদের। তুষার ইমরান, নাঈম ইসলাম, রকিবুল হাসান, মার্শালরা ঘরোয়া লিগে রান পেলেও জাতীয় দলের দুয়ার তাদের জন্য আর খোলেনি।  

তা নিয়ে অবশ্য বসে নেই ক্রিকেটাররা। নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে উজ্জীবিত রাখেন নিজেদের। মার্শালের যেমন প্রতিদ্বন্দী শামসুর রহমান কিংবা মেহরাব হোসেন। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হওয়ায় টেস্টের প্রতি বেড়েছে আগ্রহ। মার্শালের মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দেরও নাড়া দিচ্ছে এই টুর্নামেন্ট।

“মৌসুম শুরুর আগে একটা তাগিদ থাকে ভালো কিছু করার। যতটা গত বছর করেছি এর চেয়ে কিছুটা হলেও, এক পারসেন্ট, দুই পারসেন্ট যতটা পারি উন্নতি করার ইচ্ছা থাকে।”

“আমাদের ঢাকায় মাঠ তো অনেক কম, জায়গা পাওয়া যায় না। মাঠ তেমন পাওয়া যায় না….এবছর (নাজমুল আবেদীন) ফাহিম স্যার, (মিজানুর রহমান) বাবুল ভাই, শাহিন এদের সঙ্গে কাজ করেছি।”

এবার এনসিএলের প্রথম দিকে খেলবেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। ভারত সফরকে সামনে রেখে এবারের লিগের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। তবে মার্শাল মনে করেন, জাতীয় দলের বাইরে থাকা খেলোয়াড়দের জন্য এই টুর্নামেন্ট এমনিতেই অনেক বেশি গুরুত্ব পায়।

“এটি অবশ্যই একটি ভালো প্রতিযোগিতা। এটার প্রভাব আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও পড়বে আশা করি। আমাদের খেলোয়াড়রা সবাই এটি নিয়ে ভাবছে। এই মৌসুমটা ভালো কিছু করার কথা ভাবছে। আমরা যারা আছি জাতীয় দলের বাইরে তাদের জন্য এই লিগটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একটা পর্যায়ে আছি, এখানে পারফরম্যান্স দেখানো আসলে খুব গুরুত্বপূর্ণ।”

“আমার কাছে মনে হয় জাতীয় লিগ খুবই প্রতিযোগিতামূলক হয়। এখন টায়ার ১, টায়ার ২ হয়েছে। এখানে ওঠার একটি ব্যাপার আছে। একারণেই আমি মনে করি, এখানে লড়াই হয় আগের চেয়ে বেশি।”

এক সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে পার্থক্য অনেক বেশি ছিল। এখন সেটা কিছুটা কমেছে বলে বিশ্বাস ঢাকা মেট্রোর এই ব্যাটসম্যানের।

“আপনি ২০১৩ সালের পর থেকে দেখবেন যে আমাদের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে পরিবর্তন এসেছে। এর আগে সেঞ্চুরি হতো দুইটা বা তিনটা। এখন সেঞ্চুরি হয় অনেকগুলো। আপনি ডাবল সেঞ্চুরিও পাবেন। দুইশ কিংবা আড়াইশ ধারাবাহিকভাবে তিন চারটা কিন্তু হচ্ছে এখন। মানে আমরা দিন দিন উন্নতি করছি। ইনশাল্লাহ সামনে এমন আরও হবে।”

খেলার মান ভালো করার জন্য ভালো উইকেটের কোনো বিকল্প দেখেন না মার্শাল। তার মতে, ভালো উইকেট ঘরোয়া ক্রিকেটকে নিয়ে যেতে পারে নতুন উচ্চতায়।

“আমাদের উইকেট তো ফ্যাক্ট একটা। উইকেট যদি আরেকটু ভালো হতো, মিরপুরে যেমন স্পোর্টিং উইকেট থাকে, বগুড়া এবং রাজশাহীতে তেমন উইকেট থাকলে ফলাফল আসতো।”

ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেট যেমনই হোক, নজর কাড়তে রানের বিকল্প দেখেন না মার্শাল। তিনি জোর দিচ্ছেন ধারাবাহিকভারে রান করার অভ্যাসের দিকে। ঘরোয়া ক্রিকেটে এই অভ্যাস গড়ে তুলে সেটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিতে যেতে পারলে উন্নতি না করার কোনো কারণ তিনি দেখেন না।

“আমাদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেতে হলে আমাদের ব্যাটসম্যানদের আরও মনোযোগী হওয়া উচিত। ধারাবাহিকতা একটা অভ্যাস, যেমন দেখেন (এনামুল হক) বিজয় ধারাবাহিকভাবে রান করতেই থাকে। ওর একটা অভ্যাস হয়ে গেছে রান করার। ঘরোয়া ক্রিকেটে যদি দেখেন, আমি উদাহরণ হিসেবে বিজয়ের কথা বলছি। এই অভ্যাস যদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে টেস্টে আমরা আরও ভালো করব।”