হোপের অসাধারণ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের হার

জয়ের লক্ষ্যে চোখ রেখে শুরু, প্রায় একাই দলকে সেই লক্ষ্যে নিয়ে শেষ। অসাধারণ এক ইনিংস খেলে শেই হোপ বলতে গেলে একাই হারিয়ে দিলেন বাংলাদেশকে। ৪ উইকেটের জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2018, 06:35 AM
Updated : 11 Dec 2018, 03:29 PM

দুর্দান্ত হোপ, সমতায় উইন্ডিজ

ওপেন করতে নেমে শেই হোপ ফিরেছেন দলের জয় সঙ্গে নিয়ে। ৪৩তম ওয়ানডে খেলতে নামা ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে অপরাজিত ১৪৪ বলে ১৪৬ রান করে। ১২ চারের পাশে ইনিংসে ছক্কা ৩টি।

শেষ দিকে কাজ অনেকটাই কঠিন হয়ে উঠেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য। ৩ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৩২ রান। হোপ মিলিয়েছেন সেই সমীকরণ। মাথার ওপর থেকে ছক্কা মেরেছেন রুবেলকে। মুস্তাফিজের বোলিংয়ে ৪৯তম ওভারে এসেছে ১৬ রান। মাহমুদউল্লাহর শেষ ওভারে জয় এসেছে ২ বল বাকি থাকতেই।

ম্যাচ জেতানো সপ্তম উইকেট জুটিতে হোপকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন পল। অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৬৪ বলে এসেছে ৭১ রান।

আগামী শুক্রবার সিলেটে শেষ ওয়ানডেতে হবে সিরিজের ফয়সালা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৫৫/৭ (তামিম ৫০, লিটন ৮, ইমরুল ০, মুশফিক ৬২, সাকিব ৬৫, মাহমুদউল্লাহ ৩০, সৌম্য ৬, মাশরাফি ৬*, মিরাজ ১০*; রোচ ১/৩৯, টমাস ৩/৫৪, চেইস ০/২২, পল ১/৬৮, বিশু ১/২৭, পাওয়েল ১/৪১)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৯.২ ওভারে ২৫৬/৬( হেমরাজ ৩, হোপ ১৪৬*, ব্রাভো ২৭, স্যামুয়েলস ২৬, হেটমায়ার ০, পাওয়েল ১, চেইস ৯, পল ১৮*; সাকিব ০/২৮, মিরাজ ১/৩৯, মুস্তাফিজ ২/৬৩, মাশরাফি ১/৫২, মাহমুদউল্লাহ ০/১২, রুবেল ২/৪৭)।

সপ্তম জুটির ফিফটি

হারের শঙ্কা থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের সম্ভাবনায় ফেরাল সপ্তম উইকেট জুটি। অসাধারণ ব্যাট করলেন হোপ, এক-দুই করে নিয়ে সঙ্গ দিয়ে গেলেন কিমো পল। জুটির পঞ্চাশ হলো ৫৫ বলে।

আবারও রক্ষা পেল পল

রুবেলের শর্ট বলে পুল করেছিলেন কিমো পল। ডিপ স্কয়ার লেগে বলের ফ্লাইটই ঠিক মতো বুঝতে পারলেন না বদলি ফিল্ডার নাজমুল ইসলাম অপু। চার ফেরালেও পারলেন না ক্যাচ নিতে। ৬ রানে জীবন পাওয়ার পর পল আবার বেঁচে গেলেন ১২ রানে।

জীবন পেলেন পল

মেহেদী হাসান মিরাজের বলে স্লগ করেছিলেন কিমো পল। মিড উইকেট সীমানা থেকে ছোটা শুরু করতে একটু সময় নিয়েছিলেন বদলি ফিল্ডার নাজমুল ইসলাম অপু। এরপরও প্রায় পৌঁছে গিয়েছিলেন বলের কাছে। ডাইভ দিয়েছিলেন সামনে। বল তার হাতে লাগলেও মুঠোবন্দী করতে পারেননি। ৬ রানে বেঁচে গেলেন পল।

হোপের সেঞ্চুরিতে আশায় উইন্ডিজ

স্রোতের বিপরীতে ব্যাট করে দলকে টেনে নিচ্ছেন শেই হোপ। দুর্দান্ত ব্যাট করে ক্যারিবিয়ান ওপেনার পেয়ে গেলেন সেঞ্চুরি। ৪৩ ওয়ানডেতে তৃতীয় সেঞ্চুরি স্পর্শ করলেন ১১৮ বলে।

মুস্তাফিজের শিকার চেইস

মুস্তাফিজের হাতে বল তুলে দিয়ে লং অফ ও লং অনকে ভেতরে এনে মিড অন ও মিড অফ রাখলেন অধিনায়ক মাশরাফি। বৃত্তের ওপর দিয়ে খেলার ঝুঁকি নেওয়ার আমন্ত্রণ। সেই ফাঁদে পা দিয়েই আউট হলেন রোস্টন চেইস। মুস্তাফিজের কাটারে ক্যাচ দিলেন মিড অনে তামিমের হাতে।

১৬ বলে ৮ রান করে ফিরলেন চেইস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৩৯ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৫।

অধিনায়কের শিকার অধিনায়ক

হেটমায়ারের উইকেটের হাত ধরেই এলো আরও একটি উইকেট। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েলকে ফেরালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। শর্ট অব লেংথ বল ড্রাইভে উড়িয়ে মারতে গিয়ে পাওয়েল ক্যাচ দেন মিড অনে সৌম্য সরকারের হাতে।

১ রানে ফিরলেন পাওয়েল। ৩৩.৪ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৫ উইকেটে ১৫৭।

রুবেলেরই শিকার হেটমায়ার

যার বলে জীবন পেয়েছিলেন হেটমায়ার, আউট হলেন সেই রুবেলের বলেই। জীবন দেওয়ার ক্যাচটি হাতছাড়া করে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ইমরুল, তার বদলে মাঠে আসা নাজমুল ইসলাম অপু ক্যাচ নিয়ে ফেরালেন তাকে।

ব্যাক অব লেংথে পিচ করা বলে ফ্লিক আর পুলের মাঝামাঝি কোনো শট খেললেন হেটমায়ার। কিন্তু জোর হয়নি মারে। বল যায় মিড উইকেটে নাজমুল অপুর হাতে।

১০ বলে ১৪ করে ফিরলেন হেটমায়ার। ৩৩ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৪ উইকেটে ১৫৫।

জীবন পেলেন হেটমায়ার

বিপজ্জনক শিমরন হেটমায়ারকে শুরুতেই ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ক্যাচ নিতে পারলেন না ইমরুল কায়েস।

রুবেলের লেগ স্টাম্পে থাকা শর্ট বলে পুল করেছিলেন হেটমায়ার। শর্ট ফাইন লেগে ইমরুলের সোজাসুজিই এসেছিল বল। কিন্তু ইমরুল পারেননি ধরতে। শূন্য রানেই রক্ষা পেলেন হেটমায়ার।

জুটি ভাঙলেন মুস্তাফিজ

বাংলাদেশকে দুর্ভাবনায় ফেলে দেওয়া আরেকটি জুটির অবসান। এবার মারলন স্যামুয়েলসকে ফেরালেন মুস্তাফিজুর রহমান।

এই ওভারে স্যামুয়েলসকে বেশ ভুগিয়েছেন মুস্তাফিজ। সেটির ধারাবাহিকতায়ই এসেছে উইকেট। মুস্তাফিজের কাটার অ্যাঙ্গেলে বেরিয়ে যাওয়ার পথে ছুঁয়ে যায় স্যামুয়েলসের ব্যাটের কানা।

৪৫ বলে ২৬ রান করে আউট হলেন স্যামুয়েলস। তৃতীয় উইকেটে হোপের সঙ্গে জুটি ছিল ৬২ রানের। ৩০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৩ উইকেটে ১৩২।

তৃতীয় জুটির ফিফটি

ব্রাভোর বিদায়ের পর হোপকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন মারলন স্যামুয়েলস। দ্বিতীয় উইকেটের মতো তৃতীয় উইকেট জুটিতেও এসেছে ফিফটি। হোপ ও স্যামুয়েলস জুটির পঞ্চাশ এসেছে ৬৯ বলে। দুজন এগিয়েছে প্রায় সমান তালেই। হোপের অবদান ছিল ২৩ রান, স্যামুয়েলসের ২১।

উইন্ডিজের একশ

মন্থর সূচনার পর ক্যারিবিয়ানরা নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে অনেকটাই। শেই হোপ দারুণ ব্যাট করে এগিয়ে নিচ্ছেন দলকে। ২৪ ওভারে স্পর্শ করেছে তারা ১০০, উইকেট হারিয়েছে দুটি।

হোপের ফিফটি

আগের ম্যাচে ফিফটির কাছে গিয়ে আউট হয়েছিলেন। এবার ভুল করেননি শেই হোপ। দারুণ খেলে ক্যারিবিয়ান ওপেনার করেছেন ফিফটি।

শুরুটা তার ছিল মন্থর। এক পর্যায়ে রান ছিল ২৪ বলে ৭। মুস্তাফিজকে দারুণ এক ছক্কায় ডানা মেলার শুরু। তার পর থেকে উড়ে চলেছেন। মাশরাফিকে পরে ছক্কা মেরেছেন আরেকটি। ফিফটি করেছেন ৬৭ বলে।

জুটি ভাঙলেন রুবেল

বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠা জুটি অবশেষে ভাঙলেন রুবেল হোসেন। নিজের প্রথম ওভারেই বোল্ড করে দিলেন ড্যারেন ব্রাভোকে।

আউটে অবশ্য ব্যাটসম্যানেরই দায়ই বেশি। লেগ স্টাম্পে পিচ করা বলে আলতো করে ক্লিপ করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি ব্রাভো। ব্যাটে-বলে হয়নি, বল তার পায়ের পেছন দিয়ে গিয়ে উড়িয়ে দেয় বেলস।

২৭ রানে ফিরলেন ব্রাভো। ভাঙল দ্বিতীয় উইকেটে ৬৫ রানের জুটি।

হোপ-ব্রাভো জুটির ফিফটি

চন্দ্রপল হেমরাজকে শুরুতে হারানোর ধাক্কা ভাবেই সামলে নিয়েছেন শেই হোপ ও ড্যারেন ব্রাভো। শুরুতে সময় নিয়েছেন দুজন। সপ্তম ওভারের শেষ বলে এসেছে ইনিংসের প্রথম চার। তবে থিতু হওয়ার পর বাড়াচ্ছেন রান। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনের জুটিতে ফিফটি এসেছে ৭৮ বলে। মাশরাফির বলে হোপের বিশাল এক ছক্কায় জুটি স্পর্শ করেছে ফিফটি।

ঝড় উঠল না শেষে

শেষ দিকে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারলেন না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। আড়াইশ পেরিয়ে গেলেও এরপর খুব বেশিদূর এগোতে পারেনি বাংলাদেশ। ৫০ ওভারে করেছে ৭ উইকেটে ২৫৫ রান।

এই উইকেটে ২৫৬ রানের লক্ষ্য খুব সহজ নয়। তবে একসময় সম্ভাবনা জেগেছিল বাংলাদেশের আরও বড় স্কোরের। কিন্তু তিন ব্যাটসম্যান ফিফটি, একজন ৩০ করলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউ। শেষ দিকেও রান আসেনি প্রত্যাশিত দ্রুততায়। মাশরাফি ও মিরাজ শেষ ২ ওভার থেকে নিতে পেরেছেন কেবল ৫ রান। শেষ ৫ ওভারে এসেছে মাত্র ২৬ রান।

যথেষ্ট ভালো বোলিং করেছে ক্যারিবিয়ান বোলাররা। বাংলাদেশ যতবার জুটি গড়েছে এবং ভয়ঙ্কর হতে শুরু করেছে, ততবারই ম্যাচে ফিরেছে তারা। অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েলের বোলিং পরিবর্তনও ছিল দারুণ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৫৫/৭ (তামিম ৫০, লিটন ৮, ইমরুল ০, মুশফিক ৬২, সাকিব ৬৫, মাহমুদউল্লাহ ৩০, সৌম্য ৬, মাশরাফি ৬*, মিরাজ ১০*; রোচ ১/৩৯, টমাস ৩/৫৪, চেইস ০/২২, পল ১/৬৮, বিশু ১/২৭, পাওয়েল ১/৪১)

সাকিবকে থামালেন রোচ

দারুণ খেলতে থাকা সাকিব থাকতে পারলেন না ইনিংসের শেষ পর্যন্ত। বোল্ড হলেন কেমার রোচের দারুণ এক স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে।

আগের বলেই শাফল করে প্যাডল খেলে চার মেরেছিলেন সাকিব। পরের বলটি রোচ করলেন স্লোয়ার লেংথ বল। পড়তে পারেননি সাকিব। পুল খেলে ফেলেছিলেন আগেই। বল তার ব্যাটের নিচ দিয়ে গিয়ে লাগে স্টাম্পে।

৬ চার ও ১ ছক্কায় ৬২ বলে ৬৫ করে ফিরলেন সাকিব। দলের রান ৪৭ ওভারে ৭ উইকেটে ২৩৯।

উড়িয়ে মেরে লিটনের বিদায়

চোট কাটিয়ে উইকেটে ফিরে খুব বেশি সুবিধা করতে পারলেন না লিটন দাস। আউট হয়েছেন অবশ্য সময়ের দাবি মেটাতে গিয়েই।

কিমো পলের বলে স্লগ করে চেষ্টা করেছিলেন ছক্কা। টাইমিং ঠিকমতো হয়নি। লং অন থেকে ওয়াইড লং অনে ছুটে ভালো ক্যাচ নেন শিমরন হেটমায়ার।

৮ রানে ফিরলেন লিটন। ৪৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ২৩৪।

সাকিবের ফিফটি

ক্যাচ দিয়ে নো বলে বেঁচে যাওয়ার পরের বলেই ফ্রি হিটে পুল করে ওশান টমাসকে ছক্কা, সাকিব স্পর্শ করলেন ফিফটি।

৫৪ বলে সাকিব ছুঁলেন ৪০তম ওয়ানডে ফিফটি। মাইলফলক উদযাপন করলেন পরের বলে আরেকটি চার মেরে।

ক্যাচ দিয়েও বাঁচলেন সাকিব

ওশান টমাসের বলে দারুণ এক স্কয়ার কাটে চার মারলেন সাকিব। পরে বলটি শর্ট, পুল করে সাকিব সহজ ক্যাচ দিলেন মিড উইকেটে। ফিল্ডার ক্যাচ নিলেন। কিন্তু ততক্ষণে এক হাত প্রসারিত করে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন আম্পায়ার, নো বল! রিপ্লেতে দেখা গেল, টমাসের পা ছিল দাগের বাইরে। ৪৬ রানে ক্যাচ দিয়ে বাঁচলেন সাকিব।

ব্যাটিং ফিরলেন লিটন

ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে টমাসের বলে পায়ে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন লিটন। স্ক্যান করিয়ে ধরা পড়েনি কেনো চিড়। সৌম্যর বিদায়ের পর আবার ব্যাটিংয়ে নামলেন তিনি ৪৩ ওভার শেষে।

টিকলেন না সৌম্য

ঝড় তোলার মঞ্চ ছিল প্রস্তুত। কিন্তু পারলেন না সৌম্য। আউট হলেন প্রিয় পেরিস্কোপ শটে।

স্টাম্পের বাইরে ওশান টমাসের শর্ট বলে ব্যাট পেতে দিয়েছিলেন সৌম্য। কিন্তু জোর পাননি শটে। বল যায় থার্ডম্যানে দেবেন্দ্র বিশুর হাতে।

৬ রানে ফিরলেন সৌম্য। বাংলাদেশের রান ৪৩ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৮। 

বাংলাদেশের দুইশ

দলীয় ১৯৩ রানের মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর প্রথম বলেই ব্যাটের কানায় লেগে সৌম্য পেয়েছেন বাউন্ডারি। পরের ওভারেই দল পেয়েছে দুইশর দেখা। ৪১.১ ওভারে পূরণ হয়েছে বাংলাদেশের দুইশ।

বাজে শটে মাহমুদউল্লাহর বিদায়

আরেকটি সম্ভাবনাময় ইনিংসের অপমৃত্য বাজে শটে। জুটি যখন ভয়ঙ্কর হতে শুরু করেছে, তখনই প্রতিপক্ষকে স্বস্তির সুযোগ করে দিলেন মাহমুদউল্লাহ।

রভম্যান পাওয়েলের লেংথ বল ক্রস ব্যাটে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বল তার ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে ওঠে আকাশে। ক্যাচ নেন শিমরন হেটমায়ার।

৫১ বলে ৩০ রান করে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ। সাকিবের সঙ্গে জুটি ছিল ৬১ রানের। বাংলাদেশের রান ৪০.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৩।

সাকিব-মাহমুদউল্লাহ জুটির ফিফটি

অল্প সময়ের মধ্যে তামিম ও মুশফিককে হারানোর ধাক্বা সামাল দিয়েছে বাংলাদেশ। সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর জুটিতে শুরুতে রানের গতি একটু ধীর হলেও সময়ের সঙ্গে বাড়ছে রানের গতি। দুজনের জুটির রান ৭৭ বলে স্পর্শ করেছে পঞ্চাশ।

বাংলাদেশের দেড়শ

তামিম ও মুশফিকের বিদায়ে একটু কমে এসেছে বাংলাদেশের রানের গতি। সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ চেষ্টা করছেন জুটি গড়ে তোলার। ৩০.৪ ওভারে বাংলাদেশের রান স্পর্শ করেছে ১৫০।

উইকেট ছুঁড়ে এলেন মুশফিকও

তামিম ইকবালের পর ফিফটিকে বড় ইনিংসে রূপ দিতে পারলেন না মুশফিকও। দারুণ খেলে শেষ পর্যন্ত তিনিও বিলিয়ে এলেন উইকেট।

ওশান টমাসের বলটি ছিল অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। বলের কাছে না গিয়েই মুশফিক চাইলেন গ্লাইড করে থার্ডম্যানে পাঠাতে। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল কিপারের গ্লাভসে।

৮০ বলে ৬২ রান করে আউট হলেন মুশফিক। ২৬.৪ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১৩২।

ভাঙল শতরানের জুটি

দারুণ খেলতে থাকা তামিম নিজের উইকেট উপহার দিয়ে এলেন প্রতিপক্ষকে। দেবেন্দ্র বিশুর বলে স্লগ সুইপ খেলেছিলেন উড়িয়ে, মিড উইকেট সীমানায় বল হাতে জমান কেমার রোচ।

৬৩ বলে ৫০ করে ফিরলেন তামিম। ভাঙল ১১১ রানের জুটি। ২৩.৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১২৫।

তামিমের ফিফটি

চোট কাটিয়ে ফেরার পর দ্বিতীয় ম্যাচেই তামিম দেখা পেলেন ফিফটির। বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ারের ৪৩তম ওয়ানডে ফিফটি স্পর্শ করলেন ৬০ বলে।

চূড়ায় তামিম-মুশফিক জুটি

দলের ১৪ রানে জুটি বেঁধেছিলেন তামিম ও মুশফিক, দারুণ ব্যাটিংয়ে দুজন এগিয়ে নিচ্ছেন দলকে। সেই পথচলায় দুজনের জুটি ছাড়িয়ে গেছে শতরান। দুজনে উঠেছেন একটি চূড়ায়। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি জুটি এখন এককভাবে এই জুটির।

১১২ বলে শতরান স্পর্শ করেছে দুজনের জুটি। তাতে মুশফিকের অবদান ছিল ৫১, তামিমের ৪৩।

দুজনের এটি পঞ্চম শতরানের জুটি। চারটি সেঞ্চুরি জুটি নিয়ে এতদিন এই জুটি শীর্ষে ছিল যৌথভাবে সাকিব ও মুশফিকর জুটির সঙ্গে। ৭৪ বার একসঙ্গে ব্যাট করে চারটি শতরানের জুটি গড়েছেন সাকিব ও মুশফিক। তামিম ও মুশফিক জুটি পেরিয়ে গেল জুটির ৪২ ইনিংসেই।

মুশফিকের ফিফটি

তামিমের পরে ব্যাটিংয়ে নামলেও পঞ্চাশে আগে পৌঁছলেন মুশফিক। আগের ম্যাচে অপরাজিত ফিফটি করেছিলেন রান তাড়ায়, অভিজ্ঞ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান এবার ফিফটি করলেন আগে ব্যাট করে। ৬২ বলে স্পর্শ করলেন ক্যারিয়ারের ৩২তম ওয়ানডে ফিফটি।

বাংলাদেশের একশ
 
শুরুর ধাক্কা সামলে তামিম ও মুশফিকের ব্যাটে দারুণ গতিতে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। নিয়েছে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ, বেড়েছে রানের গতি। ১০.৪ ওভারে পঞ্চাশ হয়েছিল দলের, একশ হয়ে গেলো ১৮.৩ ওভারে। ৪৫ রানে খেলছেন মুশফিক, ৩৯ রানে তামিম।

আশা আছে লিটনকে পাওয়ার
 
চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পর এক্স রে করতে নেওয়া হয়েছিল লিটনকে। সেখানে সুখবরই পেয়েছে দল। কোনো চিড় ধরা পড়েনি এই ওপেনারের পায়ে। ব্যথা কমলে তার ব্যাটিংয়ে নামার সম্ভাবনাও আছে।

বাংলাদেশের ফিফটি
 
লিটন দাসের চোট আর ইমরুল কায়েসের শূন্য রানে বিদায়ের ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল শুরু থেকেই খেলছেন আস্থার সঙ্গে। শুরুটা ভালো করেছেন মুশফিকুর রহিমও। দুজনের ব্যাটে বাংলাদেশ ছুঁয়েছে দলীয় অর্ধশত। 
 
১০.৪ ওভারে হলো বাংলাদেশের পঞ্চাশ। তামিম তখন ব্যাট করছেন ২০ রানে, ১৬ রানে মুশফিক। 
 
রিভিউ হারাল উইন্ডিজ
 
কেমার রোচের বলে মুশফিকুর রহিমের বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বল চলে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে। একমাত্র রিভিউটি হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

রান না করে ফিরলেন ইমরুল

ওশান টমাসের গতিতে ভড়কে আগের ম্যাচে বোল্ড হয়েছিলেন ইমরুল। এবার সেই টমাসের বলেই আউট হলেন কোনো রান না করে।

রাউন্ড দা উইকেটে স্টাম্পের অনেক দূর থেকে বল করেছিলেন টমাস। সেই অ্যাঙ্গেলই হয়তো বুঝতে পারেননি ইমরুল। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে খোঁচা মেরে ক্যাচ দিলেন উইকেটকিপারের কাছে।

শূন্য রানে ফিরলেন ইমরুল। ৩.৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ১৪।

স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়লেন লিটন

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মাঠ ছাড়লেন লিটন দাস। তবে আউট হয়ে নয়, চোট পেয়ে। ক্যারিবিয়ানদের গতিময় পেসার ওশান টমাসের একটি ইয়র্কার ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন, খেলতে পারেননি ঠিকমত। বল গিয়ে লাগে তার পেছনের পায়ের (ডান পা) গোড়ালির একটু ওপরে। কোনো রকমে একটি রান নিয়ে আরেকপ্রান্তে গিয়েই শুয়ে পড়েন তিনি।

মাঠে ফিজিও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছিলেন না লিটন। পরে মাঠ ছাড়েন স্ট্রেচারে করে। ৫ রানে লিটন গেলেন অবসরে। উইকেটে আসেন ইমরুল কায়েস।

পাঁচ সিনিয়রের একশ

মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ-বাংলাদেশের পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারের জন্য দারুণ এক মাইলফলকের ম্যাচ এটি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের পালাবদলের পাঁচ নায়ক, দেশের ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় তুলে নেওয়ার পাঁচ নায়ক একসঙ্গে খেলতে নামছেন শততম আন্তর্জাতিক ম্যাচ।

বিশ্ব ক্রিকেটে এটি এমনিতে খুব বিরল নয়। ৫ ক্রিকেটার একসঙ্গে একশ বা তার বেশি ম্যাচ খেলার নজির আছে ৬৪টি। তবে বাংলাদেশের কোনো পাঁচ ক্রিকেটার একসঙ্গে একশ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছেন এই প্রথম।

হাবিবুলের পাশে মাশরাফি

এই ম্যাচে টস করে অধিনায়ক মাশরাফির মুকুটে যোগ হলো আরেকটি পালক। বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ডে স্পর্শ করলেন হাবিবুল বাশারকে। ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে ৬৯টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হাবিবুল। অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফিরও এটি ৬৯তম ওয়ানডে। ৫০টি ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব আল হাসান।

সুযোগ পেলেন হেমরাজ

প্রথম ওয়ানডে থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশে পরিবর্তন একটি। টানা ব্যর্থতার চক্রে থাকা ওপেনার কাইরান পাওয়েল হারিয়েছেন জায়গা। তার বদলে সুযোগ পেয়েছেন আরেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান চন্দ্রপল হেমরাজ। গত অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভারত সফরে অভিষিক্ত ২৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান সেই সিরিজে ৪ ম্যাচ খেলে করেছিলেন ৭০ রান।

একই একাদশ

প্রথম ওয়ানডে জয়ী একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেনি বাংলাদেশ। বোলারদের দারুণ পারফরম্যান্সে পাওয়া সেই জয়ের ম্যাচেও খরুচে ছিলেন রুবেল হোসেন। তাকে নিয়ে আলোচনাও হয়েছিল প্রচুর। তবে ম্যাচ শেষে তার ওপর ভরসা রাখার কথা জানিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। একাদশেও সেটিও প্রতিফলন। রুবেল পেয়েছেন আরও একটি সুযোগ।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

প্রথম ওয়ানডের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও টস জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করে হেরে যাওয়ার পর এবার বদলে গেল তাদের পরিকল্পনা। অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল জানালেন, আগে বোলিং করবে ক্যারিবিয়ানরা।

সিরিজ জয় কিংবা সিরিজে ফেরা

প্রথম ওয়ানডে জিতে সিরিজে এগিয়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতলেই নিশ্চিত হয়ে যাবে আরও একটি সিরিজ জয়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য এই ম্যাচ সিরিজ বাঁচিয়ে রাখার লড়াই। বাংলাদেশ সফরে এবার এখনও পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেনি তারা। হেরেছে এমনকি ওয়ানডে সিরিজের আগে প্রস্তুতি ম্যাচও। টানা হারের সেই ধারা থেকে বের হতে না পারলে ক্যারিবিয়ানদের অপেক্ষায় সিরিজ হার।