পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল ভারত

নতুন বলে দারুণ বোলিংয়ে সুর বেঁধে দিলেন ভুবনেশ্বর কুমার, জাসপ্রিত বুমরাহ। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লক্ষ্যটা ছোট রাখলেন অনিয়মিত স্পিনার কেদার যাদব। বোলারদের দেখানো পথ ধরে সহজ জয় এনে দিলেন ব্যাটসম্যানরা। এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল ভারত।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2018, 03:36 PM
Updated : 19 Sept 2018, 06:26 PM

‘এ’ গ্রুপ থেকে আগেই সুপার ফোর নিশ্চিত করা দুই দলের লড়াইয়ে ৮ উইকেটে জিতেছে ভারত। গত বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের পর এই প্রথম মুখোমুখি হল চির প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ। 

১৬৩ রানের লক্ষ্য ১২৬ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় ভারত। থামলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাকিস্তানের জয়রথ। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে টানা ১৪ ম্যাচ জয়ের পর হারলো তারা।

এক জুটির ওপর নির্ভর করে বেশিদূর যেতে পারেনি পাকিস্তান। দলটির ইনিংসে নেই কোনো ফিফটি, পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি মোটে একটি।

দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের ব্যাটে ভালো শুরুর পর পিছনে তাকাতে হয়নি ভারতকে। বাকিটা সহজেই সারেন অম্বাতি রাইডু ও দিনেশ কার্তিক।

দুবাই ইন্টারন্যাশল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার শুরুটা ভালো হয়নি পাকিস্তানের। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দলটিকে চেপে ধরেন ভুবনেশ্বর ও বুমরাহ। ইমাম-উল-হক ও ফখর জামানকে জায়গা দেননি দুই ভারতীয় পেসার। স্টাম্প সোজা বলে রানের জন্য ছটফট করে দ্রুত ফিরেন দুই ওপেনার।

পরপর দুই ওভারে ইমাম ও জামানকে বিদায় করেন ভুবনেশ্বর। বেরিয়ে এসে তাকে উড়ানোর চেষ্টায় কট বিহাইন্ড হন ইমাম। পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন জামান।

এরপর নিজেদের সেরা জুটি পেয়ে যায় পাকিস্তান। তৃতীয় উইকেটে ৮২ রান যোগ করেন বাবর আজম ও শোয়েব মালিক। কুলদীপের গুগলি বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বাবর বোল্ড হলে ভাঙে প্রতিরোধ। ৬ চারে ৪৭ রান করেন তিনি।

২৬ রানে মহেন্দ্র সিং ধোনি, ৩৭ রানে ভুবনেশ্বরের হাতে জীবন পাওয়া মালিক ফিরেন রান আউট হয়ে। একটি করে ছক্কা-চারে অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান করেন ৪৩। আর কেউ যেতে পারেননি ত্রিশ পর্যন্ত।

মালিক-বাবরের পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটির বাইরে পাকিস্তানের আর একটি জুটি কেবল ২০ পর্যন্ত যেতে পেরেছে। অষ্টম উইকেটে মোহাম্মদ আমিরের সঙ্গে ৩৭ রানের জুটিতে দলকে দেড়শ রানে নিয়ে যান ফাহিম আশরাফ।

বুমরাহ আশরাফকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর বেশি দূর যেতে পারেনি পাকিস্তান। দলটির ইনিংস গুটিয়ে যায় ৪১ বল বাকি থাকতে।

নিজের পঞ্চম ওভারটি করার সময় চোট পাওয়া হার্দিক পান্ডিয়া মাঠ ছাড়েন স্ট্রেচারে করে। দারুণ বোলিং করে তার অভাব বুঝতেই দেননি অনিয়মিত স্পিনার কেদার।

দুই মূল স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চেহেলকে সহজেই খেলেছেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। তবে তাদের খুব ভুগিয়েছেন কেদার, নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২৩ রানে নিয়েছেন তিন উইকেট।

ভুবনেশ্বর ১৫ রানে নিয়েছেন তিনটি উইকেট। শুরুর দুর্দান্ত বোলিং তাকে এনে দেয় ম্যাচ সেরার পুরস্কার। নতুন বলে তার সঙ্গী বুমরাহ ২ উইকেট নিয়েছেন ২৩ রানে। 

ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ১৩.১ ওভার স্থায়ী ৮৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা ভালো করে ভারত। পাকিস্তানের তিন মূল পেসার আমির, হাসান আলি ও উসমান খানকে সহজেই সামলান রোহিত-ধাওয়ান।

নিজেকে একটু গুটিয়ে রেখেছিলেন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ধাওয়ান। বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন রোহিত। তার ব্যাটে দ্রুত এগোয় ভারত। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ৩৯ বলে ৬ চার আর ৩ ছক্কায় ৫২ রান করা অধিনায়ককে ফিরিয়ে শুরুর জুটি ভাঙেন শাদাব খান।

নিজের প্রথম বলেই উইকেট নেওয়া শাদাব চোট পেয়ে মাত্র ৯ বল করেই মাঠ ছাড়েন। তার অনুপস্থিতিতে শক্তি হারানো পাকিস্তান স্পিনেও চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি।

আশরাফকে পয়েন্টের ফিল্ডার বরাবর কাট করে বিদায় নেন ধাওয়ান। ৫৪ বলে খেলা তার ৪৬ রানের ইনিংসে ৬ চারের পাশে একটি ছক্কা।

অবিচ্ছিন্ন ৬০ রানের জুটিতে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন রাইডু ও কার্তিক। দুই জনেই অপরাজিত থাকেন ৩১ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ৪৩.১ ওভারে ১৬২ (ইমাম ২, ফখর ০, বাবর ৪৭, মালিক ৪৩, সরফরাজ ৬, আসিফ ৯, শাদাব ৮, ফাহিম ২১, আমির ১৮*, হাসান ১, উসমান ০; ভুবনেশ্বর ৩/১৫, বুমরাহ ২/২৩, পান্ডিয়া ০/২৪, চেহেল ০/৩৪, কুলদীপ ১/৩৭, কেদার ৩/২৩)

ভারত: ২৯ ওভারে ১৬৪/২ (রোহিত ৫২, ধাওয়ান ৪৬, রাইডু ৩১*, কার্তিক ৩১*; আমির ০/২৩, উসমান ০/২৭, হাসান ০/৩৩, আশরাফ ১/৩১, শাদাব ১/৬, জামান ০/২৫, মালিক ০/১৯)

ফল: ভারত ৮ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ভুবনেশ্বর কুমার