‘এ’ দলে সুযোগের আশায় তুষার ইমরান

ঘরোয়া ক্রিকেটের রানের স্রোত কি মিলবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মোহনায়? তুষার ইমরান স্বপ্নটা দেখেন ঠিকই। পাশাপাশি বোঝেন বাস্তবতাও। জানেন কাজটা কতটা কঠিন। জানেন বলেই সেই স্বপ্নের ঠিকানায় পা রাখতে চান ধাপে ধাপে। অপেক্ষা করছেন সুযোগের। যদি বাংলাদেশ ‘এ’ দলে অন্তত সুযোগ মেলে, তাহলে সেখানে পারফর্ম করেই জানাতে চান জাতীয় দলে দাবি। 

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2018, 02:07 PM
Updated : 15 April 2018, 02:07 PM

নিজের ক্যারিয়ারের ৫ টেস্টের সবশেষটি খেলেছেন তুষার ২০০৭ সালের জুলাইয়ে। সেই বছরেরই শেষ দিনে খেলেছেন ৪১ ওয়ানডের সবশেষটি। এরপর আর সুযোগ মেলেনি জাতীয় দলে। ঘরোয়া ক্রিকেটে অবশ্য বরাবরই নিয়মিত পারফর্ম করেছেন। সেই পারফরম্যান্সকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন গত কয়েক মৌসুমে। ঘরোয়া বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচে হয়ে উঠেছেন রান মেশিন।

সাদা পোশাকে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে করেছেন ১০ হাজার রান। তার ২৮ সেঞ্চুরিও বাংলাদেশের রেকর্ড। গত মৌসুমেই করেছেন এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড।

এবার জাতীয় লিগে ৬ ম্যাচে ৫৩.৮৬ গড়ে করেছেন ৩৭৭ রান। বিসিএলে এখনও পর্যন্ত ৪ ম্যাচে ৪ সেঞ্চুরিতে ৫৫৮ রান করেছেন ১১১.৬০ গড়ে।

বাংলাদেশের বাস্তবতায় ৩৪ বছর বয়সী একজন ক্রিকেটারের জাতীয় দলে ফেরা কঠিন। তবে তুষারের পারফরম্যান্স আর ধারাবাহিকতা অতিমানবীয় বলে আলোচনায় তিনি উঠে আসছেন নিয়মিতই। অভিজ্ঞতায় এখন যতটা সমৃ্দ্ধ, তাতে টেস্ট দলে তার জায়গা দেখেন অনেকেই।

তুষার নিজে অবশ্য জানেন, জায়গা বের করা কঠিন। তবে তাতে হাল ছেড়ে দিচ্ছেন না। বরং রানের জোয়ারেই ভাসিয়ে দিতে চান সেই কঠিন দেয়াল।

“এখন যে দলটা খেলছে বাংলাদেশের হয়ে, তাদেরকে পেছনে ফেলা অনেক কঠিন। অনেক দিন ধরেই একসঙ্গে খেলে যাচ্ছে। বিশেষ করে আমি যে পজিশনে ব্যাট করি, সে পজিশনে মুশফিক আছে, রিয়াদ আছে, সাকিব আছে, মুমিনুল আছে। ওরা তো জাতীয় দলের হয়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে যাচ্ছে।”

“আমি আমার মতোই চেষ্টা করছি কাউকে পেছনে ফেলা যায় কি না। ওদেরকে পেছনে ফেলতে হলে হয়তো আরও অনেক বেশি রান করতে হবে। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর প্রমাণের একটাই জায়গা, ঘরোয়া ক্রিকেটে। আমি এখানে সুযোগ পাচ্ছি, ভালো করে যাচ্ছি, ইনশাল্লাহ সামনেও করব। যদি নির্বাচকরা মনে করে এটা যথেষ্ট, আমাকে নিতে চায়, আমি প্রস্তুত আছি।”

সেই সুযোগ যে সরাসরি জাতীয় দলেই হতে হবে, তেমনও নয়। ‘এ’ দলের চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে আসতেও আপত্তি নেই তুষারের। বিসিএলের সবশেষ রাউন্ডে এক ম্যাচের দুই ইনিংসেই করেছিলেন সেঞ্চুরি। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ছিলেন মাঠে। সেটিই আশান্বিত করেছে তুষারকে।

সামনেই বাংলাদেশ সফরে আসবে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দল। এরপর বাংলাদেশ ‘এ’ দল যাবে আয়ারল্যান্ড সফরে। এই সিরিজগুলোতে বাংলাদেশ ‘এ’ দলে সুযোগ পাবেন, এই আশায় বুক বাঁধছেন তুষার।

“নান্নু ভাই (প্রধান নির্বাচক) ছিলেন গত ম্যাচে, পুরো ম্যাচ উপভোগ করেছেন। যদি প্রয়োজন মনে করেন যে ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার আগে একটা টেস্ট দেওয়া উচিত, তাহলে ‘এ’ দলের সফর আছে সামনে, শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দল আসবে। আরও যারা সিনিয়র আছে, শাহরিয়ার নাফীস, অলক কাপালী, নাঈম ইসলাম এবং রাজ্জাকেরও সুযোগ আসতে পারে। যদি সুযোগ হয় ‘এ’ দলে, তাহলে সেখানে পারফর্ম করেই জাতীয় দলে জায়গা নিতে প্রস্তুত আছে সবাই।”