লিটনের সেঞ্চুরি ছাপিয়ে নায়ক নাঈম

এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তৃতীয় সেঞ্চুরি উপহার দিলেন লিটন দাস। তবে সেঞ্চুরি না করেও দিনশেষে তাকে ছাপিয়ে গেলেন তরুণ আরেক ওপেনার। ৮৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলের জয়ের ভিত গড়ে দিলেন মোহাম্মদ নাঈম। লিটনের প্রাইম দোলেশ্বরকে হারিয়ে দিল রূপগঞ্জ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2018, 01:48 PM
Updated : 27 March 2018, 01:48 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগে শিরোপা লড়াইয়ে টিকে থাকার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার লিটনের ১০৭ রান ও শেষ দিকে ইকবাল আব্দুল্লাহর ঝড়ো ইনিংসে দোলেশ্বর তুলেছিল ৫০ ওভারে ২৫৭ রান। নাঈমের দারুণ ব্যাটিং ও আব্দুল মজিদের সঙ্গে দুর্দান্ত উদ্বোধনী জুটির পর রূপগঞ্জ ম্যাচ জিতে যায় ৮ বল বাকি রেখে।

এবারের লিগে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে তৃতীয় সেঞ্চুরি করলেন লিটন। তবে আগে তিন সেঞ্চুরি করা মোহাম্মদ আশরাফুল খেলেছেন ১১ ম্যাচ। লিটন করলেন ৭ ম্যাচেই।

লিটন ও ইমতিয়াজ হোসেনের উদ্বোধনী জুটি দোলেশ্বরকে এনে দেয় ৬৯ রান। তবে জুটিতে লেগে যায় ২০ ওভারের বেশি। খানিকটা মন্থর উইকেটে ইমতিয়াজের ব্যাট ছিল আরও বেশি মন্থর। ২৯ রান করতে বল খেলেন ৬৬টি।

ফজলে মাহমুদকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ১১৩ রানের জুটি গড়েন লিটন। তবে রানের গতিতে ততটা জোয়ার আসেনি এই জুটিতেও।

লিটন সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ১২৩ বলে। ফজলে মাহমুদ ৪৬ করেন ৬৪ বলে। সেঞ্চুরির পর নাঈম ইসলামকে দারুণ এক ছক্কায় ঝড় তোলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন লিটন। কিন্তু আউট হয়ে যান শর্ট কাভারে ক্যাচ দিয়ে।

সেই ঝড় দেখা যায় ইকবাল আব্দুল্লাহর ব্যাটে। ৪ ছক্কায় ভারতীয় অলরাউন্ডার করেন ২২ বলে ৪২। আরেক পাশে ফরহাদ রেজার ব্যাটে ২২ বলে ২৯।

শেষ ৩ ওভারে দোলেশ্বর তোলে ৪৫ রান। মোহাম্মদ শহিদের করা শেষ ওভার থেকেই ৩ ছক্কায় আসে ১৯ রান।

ব্যাটে বল আসছিল খানিকটা ধীরে। রান তাড়ার কাজটি তাই সহজ ছিল না। সেটিই সহজ করে দেয় মোহাম্মদ নাঈম ও আব্দুল মজিদের দারুণ জুটি। ঠাণ্ডা মাথার উদ্বোধনী জুটিতে দুজন দলকে এনে দেন ১৪০ রান। খুব বেশি তাড়াহুড়ো না করে, ঝুঁকিপূর্ণ শট না খেলেই দুজন ধরে রাখেন প্রত্যাশিত রান রেটের কাছাকাছি গতি।

৯০ বলে ৫৮ রান করা মজিদের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। আরেক পাশে নাঈম ছিলেন তুলনামূলক বেশি আগ্রাসী। উইকেট ধরে রেখেছেন যেমন, তেমনি বাজে বলকে উড়িয়েছেন মাঠের বাইরে। এ বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলে আসা বাঁহাতি ওপেনার ৮৮ করেছেন ১০১ বলে। ৬ চারের পাশে ইনিংসে ছক্কা ছিল ৫টি।

রূপগঞ্জের পরের ব্যাটসম্যানরা সবাই ব্যাট করেছেন রানরেটের প্রত্যাশিত গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে। তিনে নেমে মুশফিকুর রহিম ৩৬ বলে ৪১ করেছেন ২ ছক্কায়। অধিনায়ক নাঈম ইসলাম ২ ছক্কায় ৩১। পাঁচে নেমে ভারতীয় অলরাউন্ডার পারভেজ রসুল করেছেন ১৯ বলে ২৩। অভিষেক মিত্রের ছক্কায় ম্যাচ শেষ হয়েছে শেষ ওভারের আগেই।

এই জয়ে ১৬ পয়েন্ট হলো রূপগঞ্জের। একই দিন ফতুল্লায় আবাহনীকে হারিয়ে ১৬ পয়েন্ট শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবেরও। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আবাহনী।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম দোলেশ্বর: ৫০ ওভারে ২৫৭/৫ (ইমতিয়াজ ২৯, লিটন ১০৭, ফজলে মাহমুদ ৪৬, মার্শাল ০, ফরহাদ রেজা ২৯, আব্দুল্লাহ ৪২*, শরিফউল্লাহ ০*; শহিদ ১/৫০, রাসেল ০/৪৩, মোশাররফ ০/৩৭, আসিফ ১/৪৫, রসুল ০/৫৪, নাঈম ২/২৮)।

রূপগঞ্জ: ৪৮.৪ ওভারে ২৬০/৫ (মজিদ ৫৮, মোহাম্মদ নাঈম ৮৮, মুশফিক ৪১, নাঈম ইসলাম ৩১, রসুল ২৩, অভিষেক ৬*, মিলন ৬*; আব্দুল্লাহ ১/৩৫, শরিফউল্লাহ ০/৪৮, মামুন ০/৩৭, ফরহাদ রেজা ২/৫৪, আরফাত সানি ০/৩৪, শাহানুর ১/৩০, ফজলে মাহমুদ ১/১৯)।

ফল: লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৫ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ নাঈম