টেইলরের দারুণ ইনিংসে সমতায় নিউ জিল্যান্ড

ওয়ানডে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এক ইনিংস খেলে রস টেইলর নিউ জিল্যান্ডকে এনে দিয়েছেন দারুণ জয়। বাঁচিয়ে রেখেছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের আশা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2018, 07:31 AM
Updated : 7 March 2018, 07:32 AM

ডানেডিনে বুধবার ৫ উইকেটে জিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-২ সমতা এনেছে নিউ জিল্যান্ড। ইংল্যান্ডের ৩৩৫ রান তিন বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় স্বাগতিকরা।

দুই ইংলিশ ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো ও জো রুটের সেঞ্চুরি ছাপিয়ে চতুর্থ ওয়ানডের নায়ক টেইলর। সিরিজে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পাওয়া মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন ১৮১ রানে।

দুই দলের শুরু আর শেষ দুই রকমের। ইংল্যান্ডের শুরুটা ছিল দারুণ, শেষটা বিবর্ণ। নিউ জিল্যান্ডের শুরুটা ছিল বাজে। শেষটা টেইলরের সৌজন্যে দুর্দান্ত।

তিনশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়ায় তৃতীয় ওভারে রস টেইলর যখন ক্রিজে আসেন তখন দলের স্কোর ২/২। দুই ওপেনার তখন ফিরেছেন শূন্য রানে। কলিন মানরো পান গোল্ডেন ডাকের স্বাদ। ১০ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি মার্টিন গাপটিল।

কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে প্রাথমিক মেরামতের কাজটা করেন টেইলর। দ্রুত রান তোলা অধিনায়ককে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন বেন স্টোকস। এরপরই নিজেদের সেরা জুটি পেয়ে যায় নিউ জিল্যান্ড।

চতুর্থ উইকেটে টম ল্যাথামের সঙ্গে টেইলর উপহার দেন ১৮৭ রানের জুটি। এই জুটিই দলকে জয়ের পথে নিয়ে যায়। ৬৭ বলে তিনটি ছক্কা ও দুটি চারে ৭১ রান করা ল্যাথামকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন টম কারান। দুটি করে ছক্কা-চারে ১২ বলে ২৩ রান করা কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকেও বিদায় করেন তিনি।

ততক্ষণে ম্যাচ নিউ জিল্যান্ডের দিকে ঘুরে গেছে। সেখান থেকে আর ম্যাচে ফিরতে পারেননি ইংল্যান্ড।

সেঞ্চুরিতে পৌঁছানোর পর ঝুঁকিপূর্ণ দুই রান নিতে গিয়ে ঊরুতে চোট পান টেইলর। ইনিংসের শেষ এক-তৃতীয়াংশ তাকে প্রায় চোট নিয়েই খেলতে হয়েছে। সেই অবস্থাতেই খেলেছেন অসাধারণ সব শট। অদম্য টেইলরকে থামাতে ওয়েন মর্গ্যানের কোনো চেষ্টাই কাজে আসেনি। 

আগের সেরা অপরাজিত ১৩১ ছাড়িয়ে ম্যাচ সেরা টেইলর এবার অপরাজিত থাকেন ১৮১ রানে। তার ১৯তম সেঞ্চুরি আসে ৯৮ বলে। পরের ৪৯ বলে অতিথিদের ওপর যেন তাণ্ডব চালান এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তার ১৪৭ বলের ইনিংসে ১৭টি চারের পাশে ছক্কা ৬টি। ছক্কায় ম্যাচ শেষ করা হেনরি নিকোলস অপরাজিত থাকেন ১৩ রানে।

ইউনিভার্সিটি ওভালে বুধবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের শুরুটা ছিল দারুণ। জেসন রয়ের সঙ্গে ৭৭ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন বেয়ারস্টো। দ্বিতীয় উইকেটে রুটের সঙ্গে ২৭.২ ওভারে যোগ করেন ১৯০ রান।

তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি পাওয়া বেয়ারস্টো ১০৬ বলে ১৪টি চার ও ৭টি ছক্কায় ফিরেন ১৩৮ রান করে। এক সময়ে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ১ উইকেটে ২৬৭। পরের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ৩১৩ পর্যন্ত যেতে ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলে অতিথিরা।

টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের বাইরে দুই অঙ্কে যান কেবল আদিল রশিদ ও কারান। এক সময়ে অনেক বড় স্কোরের সম্ভাবনা জাগালেও শেষের দিকে দ্রুত উইকেট হারানোয় সাড়ে তিনশ রানের আগেই থেমে যায় ইংল্যান্ড।

অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ৬ চার ও দুই ছক্কায় ১০১ বলে ১০২ রান করেন রুট। ওয়ানডেতে এটি তার একাদশ সেঞ্চুরি।

৫৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নিউ জিল্যান্ডের সেরা বোলার ইশ সোধি। দুটি করে উইকেট নেন মানরো ও টেন্ট্র বোল্ট।

আগামী শনিবার ক্রাইস্টচার্চে হবে পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডে।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৩৫/৯ (রয় ৪২, বেয়ারস্টো ১৩৮, রুট ১০২, বাটলার ০, মর্গ্যান ৫, স্টোকস ১, মইন ৩, ওকস ৩, রশিদ ১১, কারান ২২*, উড ৩*; সাউদি ১/৮৭, বোল্ট ২/৫৬, ডি গ্র্যান্ডহোম ০/২৩, স্যান্টনার ০/৫৭, সোধি ৪/৫৮, মানরো ২/৫৩)

নিউ জিল্যান্ড: ৪৯.৩ ওভারে ৩৩৯/৫ (গাপটিল ০, মানরো ০, উইলিয়ামসন ৪৫, টেইলর ১৮১*, ল্যাথাম ৭১, ডি গ্র্যান্ডহোম ২৩, নিকোলস ১৩*; ওকস ১/৪২, উড ১/৬৫, রশিদ ০/৭৪, কারান ২/৫৭, স্টোকস ১/৪৫, মইন ০/৫২)

ফল: নিউ জিল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রস টেইলর