রয়ের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারাল ইংল্যান্ড

অ্যাশেজ টেস্ট সিরিজের ব্যর্থতা ভুলে ওয়ানডে সিরিজে দারুণ সূচনা করেছে ইংল্যান্ড। জেসন রয়ের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে ওয়েন মর্গানের দল। বিফলে গেছে অ্যারন ফিঞ্চের সেঞ্চুরি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2018, 11:35 AM
Updated : 14 Jan 2018, 12:19 PM

মেলবোর্নে রোববার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ৩০৪ রান করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ৭ বল হাতে রেখে লক্ষ্য পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। ৫ উইকেটে জিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে অতিথিরা।

ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি পাওয়া রয় ফিরেন ১৮০ রান করে। তার ১৫১ বলের ইনিংসটি গড়া ১৬টি চার ও ৫টি ছক্কায়। ওয়ানডেতে এটাই ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। ২০১৬ সালের অগাস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে অ্যালেক্স হেলসের ১৭১ ছিল আগের সেরা।

ওয়ানডেতে সময়টা ভালো কাটছিল না রয়ের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজে একবারও যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তিন ম্যাচের দুটিতে ফিরেন এক অঙ্কে, অন্যটিতে করেন ১৩ রান। ব্যাটিং ব্যর্থতায় জায়গা হারান একাদশে।

গত সেপ্টেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একাদশে ফিরে খেলেন ৮৪ ও ৯৬ রানের দুটি চমৎকার ইনিংস। এবার খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস, অস্ট্রেলিয়ায় এসে দিশেহারা হয়ে পড়া দলকে দেখালেন পথ।

টেস্ট সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে পথ দেখানো ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথ সেই কাজ করতে পারেননি। মার্ক উডের বলে জো রুটকে ক্যাচ দিয়ে ২ রানে ফিরেন ওয়ার্নার। লেগ স্পিনার আদিল রশিদের বলে উইকেটরক্ষক জস বাটলারকে ক্যাচ দেন স্মিথ।

৭৮ রানে ৩ উইকেট হারানো স্বাগতিকরা ঘুরে দাঁড়ায় নবম সেঞ্চুরি পাওয়া ফিঞ্চ ও মিচেল মার্শের ব্যাটে। দুই জনে গড়েন ১১৮ রানের জুটি। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর বেশি দূর যেতে পারেননি ওপেনার ফিঞ্চ। ১১১ বলে ১০টি চার ও তিনটি ছক্কায় ফিরেন ১০৭ রান করে। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরপরই ফিরে যান মার্শ।

দুই থিতু ব্যাটসম্যানের দ্রুত বিদায়ের পর দলকে টানেন মার্কাস স্টয়নিস ও টিম পেইন। দুই জনে গড়েন ৮০ রানের জুটি। ৪০ বলে ৬০ রান করা স্টয়নিসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ক্রিস ওকস। শেষের দিকে দ্রুত উইকেট হারানোয় আরও বড় হয়নি স্বাগতিকদের সংগ্রহ।

৭১ রানে ৩ উইকেট নেন পেসার লিয়াম প্লানকেট। রশিদ ২ উইকেট নেন ৭৩ রানে। টেস্ট সিরিজে বিবর্ণ মইন আলি ১০ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। ম্যাচে সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং করেন এই অফ স্পিনারই।

রান তাড়ায় দ্রুত জনি বেয়ারস্টো ও হেলসকে হারায় ইংল্যান্ড। কিন্তু তার কোনো প্রভাব পড়তে দেননি রয়-রুট। তৃতীয় উইকেটে দুই জনে উপহার দেন ২৬১ রানের দারুণ এক জুটি। টেস্ট অধিনায়ক সঙ্গ দিয়ে যান ওপেনারকে। ডানহাতি রয় এলোমেলো করে দেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বোলিং।

রয়কে ফিরিয়ে ইংলিশদের জুটি ভাঙেন স্টার্ক। অধিনায়ক মর্গ্যান ও বাটলারের দ্রুত বিদায়ে খানিকটা আশা জাগে স্বাগতিকদের। কিন্তু মইনকে নিয়ে বাকিটা সহজেই সারেন রুট। ১১০ বলে ৫টি চারে ৯১ রানে অপরাজিত থাকেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

আগামী শুক্রবার ব্রিজবেনে হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ৩০৪/৮ (ফিঞ্চ ১০৭, ওয়ার্নার ২, স্মিথ ২৩, হেড ৫, মার্শ ৫০, স্টয়নিস ৬০, পেইন ২৭, কামিন্স ১২, স্টার্ক ০*, টাই ৪*; ওকস ১/৬৫, উড ১/৪৯, প্লানকেট ৩/৭১, রশিদ ২/৭৩, মইন ১/৩৯)

ইংল্যান্ড: ৪৮.৫ ওভারে ৩০৮/৫ (রয় ১৮০, বেয়ারস্টো ১৪, হেলস ৪, রুট ৯১*, মর্গান ১, বাটলার ৪, মইন ৫*; স্টার্ক ২/৭১, কামিন্স ২/৬৩, টাই ০/৪৩, স্টয়নিস ১/৩৩, জ্যাম্পা ০/৭২, মার্শ ০/১৫, হেড ০/৬)

ফল: ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে ইংল্যান্ড

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জেসন রয়