অপরাজিত ফিফটিতে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন মোহাম্মদ মিঠুন। খুলনা টাইটানসের ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রেখে বাকিটা সারেন বোলাররা। রংপুরের ১৪৭ রান তাড়ায় খুলনা করে ১২৮ রান।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববারের দ্বিতীয় ম্যাচে ১৯ রানে জিতেছে রংপুর। ১১ ম্যাচে ষষ্ঠ জয়ে তাদের পয়েন্ট ১২। সমান ম্যাচে খুলনার পয়েন্ট ১৩।
রংপুরের জয়ে শেষ চারের আশা শেষ হয়ে গেছে সিলেট (১১ ম্যাচে ৯) ও গতবারের রানার্সআপ রাজশাহী কিংসের (১১ ম্যাচে ৮)।
রান তাড়ায় ৬০ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ভালো শুরু পায় খুলনা। অথচ শূন্য রানেই ভাঙতে পারত শুরুর জুটি। দ্বিতীয় বলে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ ছেড়ে দেন নাজমুল ইসলাম অপু।
বাঁহাতি এই স্পিনারই ফেরান শান্তকে। তবে তার আগে একটি করে ছক্কা-চারে ২০ রান করে ফেলেন শূন্য রানে জীবন পাওয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর নিয়মিত উইকেট হারিয়ে আর পেরে উঠেনি খুলনা। একটি ছক্কা হাঁকিয়ে ফিরেন আফিফ হোসেন। দলকে টানা মাইকেল ক্লিঙ্গারকে থামান রবি বোপারা। অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ ওপেনার ৪৫ বলে করেন ৪৪ রান।
দুই ব্যাটিং ভরসা মাহমুদউল্লাহ, কার্লোস ব্র্যাথওয়েট যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। রান আউট হয়ে ফিরেন নিকোলাস পুরান। ইসুরু উদানাকে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে খুলনাকে ম্যাচে ফেরানো জফরা আর্চার ফিরেন রান আউট হয়ে।
খুলনার আশা বাঁচিয়ে তখনও উইকেটে ছিলেন আরিফুল হক। উনিশতম ওভারের প্রথম বলে তাকে বিদায় করে দেন বোপারা। মাত্র ৪ রানে ২ উইকেট নিয়ে তিনিই দলের সেরা বোলার।
নাহিদুল ইসলাম, নাজমুল, সোহাগ গাজী আঁটসাঁট বোলিংয়ে নেন একটি করে উইকেট। কোনো উইকেট না পেলেও দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন মাশরাফি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই জিয়াউর রহমানকে হারায় রংপুর। আবু জায়েদকে ছক্কা হাঁকিয়ে পরের বলে শর্ট থার্ডম্যানে ধরা পড়েন জিয়া।
নড়বড়ে শুরুর পর ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিলেন ম্যাককালাম। শফিউল ইসলামকে পরপর দুই বলে হাঁকিয়েছিলেন চার-ছক্কা। কিন্তু ফিরেন এরপরই। অফ কাটারে ধরা পড়েন আরিফুলের হাতে।
অন্য প্রান্তে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন ক্রিস গেইল। আফিফের ওভারে দুই চার আর এক ছক্কায় ১৬ রান নিয়ে ডানা মেলেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং দানব। তাকে ফিরিয়ে খুলনা দলে স্বস্তি ফেরান লেগ স্পিনার মোহাম্মদ ইরফান। গেইলের ২৭ বলে খেলা ৩৮ রানের ইনিংসে দুটি ছক্কার পাশে চারটি চার।
গেইলের বিদায়ের পর কমে রানের গতি। বোপারা, চামারা কাপুগেদারা, নাহিদুলের দ্রুত বিদায়ে চাপে পড়ে রংপুর। সেখান থেকে দলকে দেড়শ রানের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব মিঠুন ও মাশরাফির।
দুই জনে অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেটে ২২ বলে গড়েন ৪২ রানের জুটি। দুটি চারে মাশরাফি অপরাজিত থাকেন ১৫ রানে।
৮ ও ২৬ রানে জীবন পাওয়া মিঠুন শেষ ওভারে শফিউল ইসলামের বলে তিনটি ছক্কায় নেন ২০ রান। শেষ বলে ছক্কায় মিঠুন ৩৫ বলে পেয়ে যান ফিফটি। তার ৫০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসে চার দুটি, ছক্কা চারটি।
মিঠুর, মাশরাফির শেষের ঝড়ে লড়াইয়ের পুঁজি পাওয়া রংপুর শেষ পর্যন্ত জিতেছে সহজেই। এই জয়ে শেষ দুইয়ে থাকার আশাও জাগিয়েছে দলটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৪৭/৬ (গেইল ৩৮, জিয়া ৮, ম্যাককালাম ১৫, মিঠুন ৫০, বোপারা ১১, কাপুগেদারা ২, নাহিদুল ৬, মাশরাফি ১৫*; জায়েদ ১/১৪, আফিফ ০/১৮, আর্চার ২/২৮, শফিউল ১/৪৮, ইরফান ১/২০, মাহমুদউল্লাহ ০/৮, ব্র্যাথওয়েট ১/১০)
খুলনা টাইটানস: ২০ ওভারে ১২৮/৮ (শান্ত ২০, ক্লিঙ্গার ৪৪, আফিফ ৮, মাহমুদউল্লাহ ৬, পুরান ১, ব্র্যাথওয়েট ৬, আরিফুল ৬, আর্চার ১৯, ইরফান ১*, শফিউল ৪*; সোহাগ ১/২৬, মাশরাফি ০/২১, উদানা ১/৩৭, নাহিদুল ১/১৬, নাজমুল ১/১৯, বোপারা ২/৪)
ফল: রংপুর রাইডার্স ১৯ রানে জয়ী