গেইলের ব্যাটে রংপুরের জয়

শুরুতে ঝড় তুললেন ক্রিস গেইল-ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। শেষটায় রবি বোপারার তাণ্ডবে লড়াইয়ের পুঁজি পেল রংপুর রাইডার্স। সাব্বির রহমানের দারুণ ইনিংসে জয়ের আশা জাগাল সিলেট সিক্সার্স। কিন্তু মাশরাফি বিন মুর্তজা, রুবেল হোসেনদের দারুণ বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ী রংপুরই।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2017, 04:16 PM
Updated : 20 Nov 2017, 04:21 PM

মিরপুর শের-ই-বাংল জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ রানে জিতেছে মাশরাফির দল। টানা তিন ম্যাচে হারা রংপুর জয়ে ফেরার সঙ্গে উঠে এল পয়েন্ট টেবিলের তলানি থেকে।

রংপুরের ১৬৯ রান তাড়ায় সিলেট থেমেছে ১৬২ রানে। প্রথম তিন ম্যাচে জেতা দলটির অষ্টম ম্যাচে এটি চতুর্থ পরাজয়। পরিত্যক্ত হয়েছে অন্য ম্যাচটি।

রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি সিলেটের। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান ফিরেন দ্রুত। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দানুশকা গুনাথিলকাকে ফিরিয়ে দেন সোহাগ গাজী। বিপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচে সুবিধা করতে পারেননি বাবর আজম। মাশরাফিকে উড়ানোর চেষ্টায় ফিরেন রবি বোপারাকে ক্যাচ দিয়ে।  

রুবেলের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে মোহাম্মদ মিঠুনকে ক্যাচ দেন আন্দ্রে ফ্লেচার। চার ওভার শেষে ২৫ রানে নেই ৩ উইকেট।

নাসির হোসেনের সঙ্গে সাব্বিরের ১১৭ রানের জুটিতে লড়াইয়ে ফেরে সিলেট। দুই জনের জুটিতে অগ্রণী ছিলেন আগের ম্যাচে ছন্দে ফেরা সাব্বির। তার দারুণ সব শটে বানের স্রোতের মতো আসছিল রান। 

শেষ ৪ ওভারে সিলেটের প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান। মাশরাফি দারুণ এক ওভারে মাত্র দুই রান দিয়ে সমীকরণটা কঠিন করে ফেলেন সাব্বির-নাসিরের জন্য। বাউন্ডারির জন্য মরিয়া সাব্বিরকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন থিসারা পেরেরা। ৪৯ বলে খেলা সাব্বিরের ৭০ রানের ইনিংসটি গড়া ৭টি চার ও দুটি ছক্কায়। নাসির আর টিম ব্রেসনান সেখান থেকে মেলাতে পারেননি জয়ের সমীকরণ। একের পর এক ফুল লেংথ বল দিয়ে তাদের বেঁধে রেখেছিলেন রংপুরের পেসাররা।

শেষ চার ওভারে মাত্র একটি বাউন্ডারি হাঁকাতে পেরেছে সিলেট। সেটিও ফল অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর। জয়ের জন্য শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। সে সময়ে ছক্কা হাঁকান টিম ব্রেননান।

৫০ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক নাসির। তার ৪৩ বলের ইনিংসে মাত্র দুটি বাউন্ডারি। একটি করে চার-ছক্কা।

১৮ রান দিয়ে এক উইকেট নেন মাশরাফি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট নেওয়া সোহাগ আর বোলিং পাননি। রুবেল ৩০ রানে নেন এক উইকেট।    

এর আগে অফ স্পিন আরও একবার শুরুতে ভুগিয়েছে গেইলকে। নাসিরের প্রথম দুই ওভারের ১১ বল খেলে নিতে পারেননি এক রানও। সেই নাসিরকে ছক্কা হাঁকিয়ে ডানা মেলেন গেইল। গুনাথিলকার পরের ওভারে চারের সঙ্গে তুলে নেন দুটি বিশাল ছক্কা।

গেইলের নড়বড়ে শুরুর সময়টায় দলকে টানেন ম্যাককালাম। শুভাগত হোম চৌধুরীকে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে হাঁকান দুটি ছক্কা। ব্যক্তিগত ১৪ রানে গুনাথিলকাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান ম্যাককালাম।

ম্যাককালামই ফিরেন আগে। নাসিরকে চার হাঁকানোর পর ছক্কার চেষ্টায় লংঅনে ক্যাচ দেন লিয়াম প্লানকেটকে। ভাঙে ৮০ রানের উদ্বোধনী জুটি।

দ্বাদশ বলে রানের খাতা খোলা গেইল ছক্কায় এগোচ্ছিলেন দ্রুত। ৩৮ বলে আসে তার ফিফটি, ফিরেন পরের বলেই। আবুল হাসানের প্রথম ওভারে লেগ স্টাম্পের বল ফ্লিক করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন গেইল। ৩৯ বলে খেলা তার ৫০ রানের ইনিংসটি ২টি চারের পাশে ছক্কা পাঁচটি।

গেইল ঝড় থামার নিয়মিত উইকেট হারানো রংপুর লড়াইয়ের পুঁজি গড়ে মিঠুন ও বোপারার ব্যাটে। ২১ বলে ২৫ রান করে ফিরেন তিন নম্বরে নামা মিঠুন। আগের দিন মন্থর ব্যাটিংয়ে সমালোচনার মুখে পড়া বোপারা ১২ বলে খেলেন ২৮ রানের ঝড়ো ইনিংস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৬৯/৭ (ম্যাককালাম ৩৩, গেইল ৫০, মিঠুন ২৫, নাফীস ৮, থিসারা ১৫, বোপারা ২৮, জিয়া ১*, মাশরাফি ৩, গাজী ০*; নাসির ১/২৭, শুভাগত ০/১২, গুনাথিলকা ০/২৪, ব্রেসনান ১/২৩, প্লানকেট ১/৪৯, হাসান ২/২৪, তাইজুল ০/৮)

সিলেট সিক্সার্স: ২০ ওভারে ১৬২/৪ (গুনাথিলকা ৮, ফ্লেচার ১২, বাবর ২, নাসির ৫০*, সাব্বির ৭০, ব্রেসনান ১২*; মাশরাফি ১/১৮, সোহাগ ১/৬, রুবেল ১/৩০, জহির ০/২৯, বোপারা ০/২১, থিসারা ১/৪৩, জিয়া ০/১০)

ফল: রংপুর রাইডার্স ৭ রানে জয়ী