দুই দলের প্রথম দেখায় ৯ উইকেটে জিতেছিল সিলেট। ফিরতি লেগে নাসির হোসেনের দলকে ১০১ রানে বেঁধে রেখে এভিন লুইস আর শহিদ আফ্রিদির বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৭৩ বল বাকি রেখে ঢাকা জিতেছে ৮ উইকেটে।
তিন ম্যাচে ঢাকার এটি দ্বিতীয় জয়। অন্য দিকে পাঁচ ম্যাচে টানা দ্বিতীয় হারের স্বাদ পেল নাসির।
কোথায় বল ফেলবেন যেন ভেবে পাচ্ছিলেন না সিলেটের বোলাররা। খুনে মেজাজে ছিলেন চলতি আসরে প্রথমবারের মতো মাঠে নামা আফ্রিদি। ছোট রান তাড়ায় টর্নেডো ইনিংসে দুর্দান্ত সূচনা এনে দেন তিনি। ৪ ওভারেই উঠে যায় ৫৯ রান।
১৭ বলে একটি চার আর পাঁচটি ছক্কায় ৩৭ রান করা আফ্রিদিকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন টিম ব্রেসনান। পরের বলে ফেরান ক্যামেরন ডেলপোর্টকে।
আফ্রিদির ঝড় তোলার সময় তাকে সঙ্গ দিয়ে যাওয়া লুইস অধিনায়ক সাকিবকে নিয়ে শেষ করেন বাকিটুকু। ছক্কায় ম্যাচ শেষ করা লুইস অপরাজিত ছিলেন ৪৪ রানে। তার ১৮ বলের ইনিংসে দুটি চারের সঙ্গে ছক্কা পাঁচটি। সাকিব ১১ বলে অপরাজিত থাকেন ১৮ রানে।
ঢাকার ১০৬ রানের ৮৬ রানই আসে বাউন্ডারি থেকে। জীবনের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ভানিদু হাসারাঙ্গা ৫ বলে তিনটি ছক্কায় দেন ২০ রান। তাইজুল ২ ওভারে দেন ৩৫ রান। বাঁহাতি এই স্পিনার হজম করেন পাঁচটি ছক্কা।
ঢাকা পর্বের শুরুতে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ সিলেট। আফ্রিদি, সুনিল নারাইনের স্পিন ভুগিয়েছে তাদের। আবু হায়দারের পেস কাঁপিয়েছে।
শুরুটা বাঁহাতি পেসার হায়দারই করেন। দ্বিতীয় ওভারে ফিরিয়ে দেন উপুল থারাঙ্গাকে। পরের ওভারে বিদায় করেন দানুশকা গুনাথিলকাকে।
এর মাঝেই নারাইনের অফ স্পিনে ডেলপোর্টকে ক্যাচ দেন সাব্বির রহমান। অফ স্পিনার পরে বিদায় করেন রস হোয়াইটলি আর মোহাম্মদ শরিফকে। আফ্রিদির লেগ স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে ফিরেন নাসির, নুরুল হাসান, হাসারাঙ্গা আর ব্রেসনান।
পাওয়ার প্লেতে ব্যাটসম্যানরা ঝড় তুলতে পারেননি। উল্টো দেখা গেছে উইকেট বৃষ্টি। ৬ ওভারে ৩৩ রান তুলতেই সিলেট হারায় ৫ উইকেট। পরের সাত ওভারে মাত্র ২০ রান যোগ করতে দলটি হারায় আরও চার ব্যাটসম্যানকে।
কেউ খেলতে পারেননি দায়িত্ব নিয়ে। হয়নি বলার মতো কোনো জুটি। কিভাবে ব্যাটিং করা দরকার ছিল সেটাই দেখান আবুল হাসান ও তাইজুল ইসলাম। বিপিএলে দশম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন দুই জনে। অবশ্য তাদের অবিচ্ছিন্ন ৪৮ রানের জুটিতে কোনোমতে তিন অঙ্কে যায় সংগ্রহ। কিন্তু বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানে ঠাসা ঢাকাকে সেই রান চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেনি।
১২ রানে ৪ উইকেটের সঙ্গে ঝড়ো ৩৭ রানের ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন আফ্রিদি। নারাইন ৩ উইকেট নেন ১০ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট সিক্সার্স: ২০ ওভারে ১০১/৯ (গুনাথিলকা ১৫, থারাঙ্গা ১, সাব্বির ১, নাসির ১০, হোয়াইটলি ৬, নুরুল ৮, হাসারাঙ্গা ৮, ব্রেসনান ২, হাসান ৩০*, শরিফ ০, তাইজুল ১৬*; মোসাদ্দেক ০/৭, হায়দার ২/২৩, নারাইন ৩/১০, আফ্রিদি ৪/১২, সাকিব ০/১০, শহিদ ০/২১, ডেলপোর্ট ০/১০, খালেদ ০/৭)
ঢাকা ডায়নামাইটস: ৭.৫ ওভারে ১০৬/২ (লুইস ৪৪*, আফ্রিদি ৩৭, ডেলপোর্ট ০, সাকিব ১৮*; ব্রেসনান ২/২০, তাইজুল ০/৩৫, হাসান ০/১০, নাসির ০/১১, গুনাথিলকা ০/১০, হাসারাঙ্গা ০/২০)
ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ৮ উইকেটে জয়ী