সিরিজের দুটি টেস্টই ছিল জমজমাট। একটা পর্যায় পর্যন্ত তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। দুটিই শেষ হয়েছে চারদিনে, তবে চতুর্থ দিনের আগ পর্যন্ত টিকে ছিল দুই দলেরই আশা। এমন একটি সিরিজ শেষ দুই ম্যাচেই। আরেকটি টেস্ট থাকলে সিরিজের ফয়সালার সুযোগ থাকত। তার চেয়ে বড় কথা, দুই দলের সামর্থ্য, চরিত্র, মানসিকতা, সবকিছুর দারুণ পরীক্ষা হতো।
মাশরাফির মতে, বাংলাদেশের সময় হয়েছে এখন আরও বেশি বেশি টেস্ট খেলার।
“ইংল্যান্ড আর শ্রীলঙ্কা সিরিজও ১-১ হয়েছিল। এবার এটি। আমাদের এখন সময় হয়েছে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলার। অন্তত দেশের মাটিতে। এটির জন্য আসলে প্রয়োজন বেশি বেশি টেস্ট খেলা।”
“আমাদের দল যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সেটা ধরে রাখতে হলে বা আরও উন্নতি করতে হলে বেশি খেলার বিকল্প নেই। বছরে ৪-৬ টেস্ট খেলে হবে না, অন্তত ৮-১০টি টেস্ট চাই। আর ম্যাচ বাড়াতে হলে এমনিতেই তিন ম্যাচের সিরিজ হয়ে যাবে।”
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার সিরিজটি দেখে ক্রিকেট দর্শক হিসেবে বেশ তৃপ্ত মাশরাফি। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ হারায় হতাশা আছে কিছুটা। তবে প্রতিপক্ষও দারুণ, সেটি মনে করিয়ে দিলেন।
“লড়াইয়ের দিক থেকে দারুণ সিরিজ হয়েছে। স্কিলের পরীক্ষা ছিল, দুদলই ভালো করেছে। চট্টগ্রামে আসলে আমরা পিছিয়ে গেছি প্রথম ইনিংসেই। আমাদের ব্যাটিং একটু ভালো হতে পারত। তবে লায়ন অসাধারণ বোলিং করেছে।”
“দুই টেস্টেই লায়ন দারুণ সব স্কিল দেখিয়েছে। ফ্লাইট বৈচিত্র, গতি বৈচিত্র, লাইন, টার্ন, আর বাড়তি বাউন্স মিলিয়ে আনপ্লেয়েবল ছিল প্রায়। কখনও কখনও প্রতিপক্ষকেও কৃতিত্ব দিতে হয়। মিরপুরে আমরা জিতেছি, চট্টগ্রামে ওরা বেশি ভালো খেলেই জিতেছে।”
শেষ টেস্ট জিততে না পারায় সমর্থকদের হা-হুতাশ দেখে একটু অবাক বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। অনুরোধ জানালেন আরেকটু গভীরভাবে ভেবে বাস্তবতা উপলব্ধির।
“দেশের মাটি বলেই হয়ত আমরা জয়ের আশা দেখছিলাম। তার পরও দলটা অস্ট্রেলিয়া, সেটা মাথায় রাখতে হবে। ভারতে গিয়ে সিরিজ জিততে না পারলেও এই দলটই কিন্তু একটা ম্যচে ওদের হারিয়েছে, বাকিগুলোয় লড়াই করেছে দারুণ। এখানে তাই সিরিজ শুরুর আগে ১-১ বললে আমরা মেনেই নিতাম হয়তো।”
“এগিয়ে যাওয়ার পর হয়ত সিরিজ জয়ের আশা করছিলাম আমরা। তবে মনে রাখতে হবে, সবই শেখার অংশ। বড় দলের বিপক্ষে এগিয়ে ছিলাম। এই চাপ সামলানোও একটা শিক্ষা। পরের বার কাজে লাগব। আমি সবাইকে বলব একটু সহনশীল হতে, এভাবে ভাবতে।”
এই জায়গাটায় প্রায় এক বিন্দুতে মিলে গেলেন দেশের ওয়ানডে ও টেস্ট অধিনায়ক। মাশরাফি বলছেন, ১-১ বেশ ভালো ফল। ম্যাচ শেষে মুশফিকুর রহিম বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সিরিজ ড্র করাও বড় প্রাপ্তি।