আজকেও ব্যাটিংয়ের সুযোগ হল না- ম্যাচ শেষে ড্রেসিং রুমে ফেরার সময় হাসতে হাসতেই বলছিলেন নাদিফ চৌধুরী। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে এখন পর্যন্ত ব্যাট হাতে মাঠে নামার সুযোগ মেলেনি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের। আবু হায়দার, পারভেজ রসুলের দারুণ বোলিংয়ে ছোটো লক্ষ্য পাওয়া গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স জিতেছে সহজেই।
Published : 20 Apr 2017, 07:07 PM
মোহামেডানকে ৭ উইকেটে হারিয়ে লিগ শুরু করা গাজী পরের ম্যাচে ভিক্টোরিয়াকে হারায় ৮ উইকেটে। এবার তারা লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে দিয়েছে হারের স্বাদ। নাসির হোসেনের দল জিতেছে ৮ উইকেটে।
দল জিতছে সহজেই, ব্যাটিং না পাওয়া নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই নাদিফের। আয়ারল্যান্ড সফরের দলে ডাক পাওয়া নাসিরও খুশি ম্যাচ শেষ করে আসায়। টানা তিন ম্যাচে অপরাজিত থাকলেন ‘দ্য ফিনিশার’ নামে পরিচিত এই ব্যাটসম্যান।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে নাসিরকে খুব বেশি কিছু করতে হয়নি। ১২ বলে তিনটি চারে অপরাজিত ছিলেন ১৫ রানে। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জহুরুল ইসলাম খেলেছেন ১০৬ বলে অপরাজিত ৬২ রানের দৃঢ়তা ভরা ইনিংস।
আসল কাজটা আগেই সেরে ফেলেছেন হায়দার ও ভারতীয় অলরাউন্ডার রসুল। বৃষ্টির জন্য ৪৭ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে রূপগঞ্জকে গুটিয়ে দিয়েছেন খুব কম রানে। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪৪ ওভারে মুশফিকুর রহিমের দল অলআউট ১৫৬ রানে। টানা তৃতীয় জয় পেতে গাজী হারায় ২ উইকেট, অব্যবহৃত থাকে ১১ ওভার।
ছোটো লক্ষ্য তাড়ায় এনামুল হকের সঙ্গে ৫৯ রানের জুটিতে দলকে ভালো সূচনা এনে দেন জহুরুল। ৪৫ বলে দুটি ছক্কা আর তিনটি চারে ৩৪ রান করা এনামুল হককে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ১০ ওভারের টানা স্পেলে ২৭ রান দিয়ে ওয়ানডে অধিনায়ক নেন এক উইকেট।
দ্বিতীয় উইকেটে ৭৯ রানের জুটিতে দলকে জয়ের একদম কাছে নিয়ে যান জহুরুল-মুমিনুল হক। মাহমুদুল হাসানকে উড়াতে গিয়ে সায়েম আলমের তালুবন্দি হয়ে ফিরেন মুমিনুল। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ৫৩ বলে খেলা ৪৪ রানের ইনিংসটি গড়া ৬টি চারে। বাকিটুকু সহজেই সেরেছেন জহুরুল-নাসির।
এর আগে ১২ রানের মধ্যে ফিরে যান রূপগঞ্জের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান। দলটির প্রথম আট ব্যাটসম্যানের মাত্র দুই জন পৌঁছান দুই অঙ্কে। মাহমুদুল হাসান ও মুশফিকুর রহিম পারেননি নিজেদের ইনিংস খুব একটা বড় করতে।
চোটের জন্য খেলেননি আগের ম্যাচে শতক করা নাঈম ইসলাম। তার অভাব পূরণ করতে পারেননি অন্য কেউ।
৯২ রানে ৮ উইকেট হারানো রূপগঞ্জের ইনিংস দেড়শ ছাড়ায় মোশাররফ হোসেন ও মোহাম্মদ শরীফের দৃঢ়তায়। তবে ম্যাচের ফলে তা কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
শুরুতে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেওয়া হায়দার পরে বিদায় করেন প্রতিরোধ গড়া মোশাররফ ও শরীফকে। ২৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তরুণ বাঁহাতি পেসার জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। রসুল আঁটসাঁট বোলিংয়ে ১৭ রানে নেন ৩ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৪৪ ওভারে ১৫৬ (এজাজ ১, হাসানুজ্জামান ৮, সায়েম ০, মাহমুদুল ৩০, মুশফিক ২৬, জাইদি ৮, ইয়াসির ৩, মাশরাফি ০, মোশাররফ ৩৭, শরীফ ২৯, আসিফ ৩*; হায়দার ৪/২৬, আলাউদ্দিন ১/২৬, শফিউল ০/৩৮, রসুল ৩/১৭, মেহেদী ২/২৮, শুভ ০/১৩)
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৩৬ ওভারে ১৫৭/২ (এনামুল ৩৪, জহুরুল ৬২*, মুমিনুল ৪৪, নাসির ১৫*; মাশরাফি ১/২৭, মোশাররফ ০/৩৯, জাইদি ০/২০, মাহমুদুল ১/২৭, শরীফ ০/১২, আসিফ ০/৩২)
ফল: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আবু হায়দার