১০ হাজারের ঠিকানায় গেইল

প্রয়োজন ছিল ৩ রান। প্রথম ওভারে নিলেন দুটি সিঙ্গেল। এরপর খানিকটা অপেক্ষা। আবার স্ট্রাইক পেলেন চতুর্থ ওভারে। প্রথম দু বলে রান নেই। পরের বলে ব্যাটের কানায় লেগে বল থার্ডম্যানে। একটি রান। ক্রিস গেইল স্পর্শ করলেন ১০ হাজার রান!

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2017, 03:08 PM
Updated : 18 April 2017, 03:58 PM

টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে অসাধারণ এই মাইলফলক ছুঁলেন গেইল। মঙ্গলবার রাজকোটে আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে ম্যাচে পা রাখলেন ১০ হাজারের ঠিকানায়।

ক্ষণ গনণা চলছিল টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই। অর্জনটা গেইলের ব্যক্তিগত বটে, তবে ক্রিকেটের নবতম সংস্করণে প্রথম কারও ১০ হাজার রান তো খেলাটির জন্যও একটি মাইলফলক!

টুর্নমেন্টের শুরুতে প্রয়োজন ছিল ৬৩ রান। সেই রান করতেই চার ম্যাচ লেগে গেল গেইলের। ২৯০ ম্যাচে স্পর্শ করলেন ১০ হাজার।

মাইলফলকের ম্যাচ দিয়ে ফর্মেও ফিরলেন গেইল। এই ম্যাচের আগে সময়টা খুব সুবিধার ছিল না। গত কিছুদিন ধরেই ছিল না ব্যাটে সেই রানের স্রোত আর ছক্কার ফোয়ারা। গত বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে ৫ ম্যাচে করেছিলেন ১০৯ রান। এরপর পাকিস্তান সুপার লিগে ৯ ম্যাচে কোনো অর্ধশতক করতে পারেননি। ১৬০ রান করেছিলেন মাত্র ১১৫ স্ট্রাইক রেটে।

আইপিএলের শুরুটাও তেমন ভালো হয়নি। বয়স হয়ে গেছে ৩৭। রিফ্লেক্সে বয়সের থাবা পড়েছে বলেও ধারণা করছেন অনেকে। একাদশ থেকে বাদ পড়েছিলেন। এই ম্যাচ খেলতে পারছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স চোট পাওয়ায়।

এই ম্যাচে আবার বুঝিয়ে দিলেন, সেরা সময়টা পেছনে ফেললেও নিজের দিনে এখনও তিনি চালাতে পারেন তাণ্ডব। ১০ হাজার ছোঁয়ার পর ওই ওভারেই মেরেছেন ছক্কা। এরপর ছক্কার ঝড় চালিয়েছেন আরও কিছুক্ষণ। ৭ ছক্কায় করেছেন ৩৮ বলে ৭৭।

এই ম্যাচের আগে সাম্প্রতিক ফর্ম ভালো না হলেও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ছোট্ট ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে প্রভাব জাগানিয়া ব্যাটসম্যান। বছরের পর বছর ধরে মাতিয়ে আসছেন ক্রিকেট বিশ্বের নানা প্রান্ত। ম্যাচের পর ম্যাচ তুলোধুনো করেছেন বোলারদের। বিস্ফোরক ব্যাটিংকে নিয়ে গেছেন নতুন উচ্চতায়।

শুধু ১০ হাজারে প্রথম ব্যাটসম্যান বলেই নয়, টি-টোয়েন্টিতে তার রেকর্ড প্রায় সব দিক থেকেই বলা যায় অতিমানবীয়। ১০ হাজার কেন, টি-টোয়েন্টিতে ৮ হাজার রানও নেই আর কারও। ৭ হাজার ৫২৪ রান নিয়ে দুইয়ে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম।

তার ১৮ সেঞ্চুরির ধারেকাছেও নেই কেউ। এখন অনেকটা পেছনে থেকে দুইয়ে ম্যাককালাম, সেঞ্চুরি ৭টি। গেইলের ৬০টি অর্ধশতকও টি-টোয়েন্টির রেকর্ড।

প্রায় এক যুগের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার বিবেচনায় তার ৪০.৪৭ গড় ও ১৪৯.২০ স্ট্রাইক রেট একরকম অবিশ্বাস্য। ক্যারিয়ারে ছক্কা ও চার মারার পরিমাণ প্রায় কাছাকাছি। ৭৬৪টি মেরেছেন চার, ছক্কা ৭৩৬টি। বিশ্বরেকর্ড এই দুটিও।

টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড তার (৩০ বলে)। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস (১৭৫*), এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কা (১৭টি), এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি রান (১ হাজার ৬৬৫), সব রেকর্ডই গেইলের।

নিজেকে গেইল দাবি করেন ‘ওয়ার্ল্ড বস’। সেটি না হলেও টি-টোয়েন্টির বস তিনিই!