সিনিয়র ক্রিকেটারদের সমালোচনায় বিসিবি সভাপতি

নিউ জিল্যান্ডে সব ম্যাচ হারা বাংলাদেশ দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের সমালোচনা করেছেন নাজমুল হাসান। বিসিবি সভাপতি মনে করছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে পারেননি তারা। দলের যখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল তাদের তখন তারা ব্যর্থ হয়েছেন।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2017, 01:49 PM
Updated : 24 Jan 2017, 01:49 PM

টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি তিন ধরনের ক্রিকেটেই নিউ জিল্যান্ডে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সব ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচেও হার ছিল তাদের সঙ্গী।  

মঙ্গলবার গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিসিবি প্রধান জানান, খেলোয়াড়দের নিবেদন নিয়ে তার মনে কোনো সংশয় নেই। তারা যদি দায়িত্বশীল ব্যাটিং করতেন তাহলে ফল এতো খারাপ হতো না।

“নিউ জিল্যান্ডে সবগুলো ম্যাচ হারের পেছনে দায়ী আমাদের ব্যাটিং, দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড। হাত থেকে সহজ সব ক্যাচ ছুটেছে। তবে ব্যাটিংই আমাদের সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে। আর এখানটায় খারাপ করার সবচেয়ে বড় কারণ ছিল, শট সিলেকশনে ভুল।”

বারবার স্বাগতিকদের ফাঁদে পা দিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। যখন দরকার ছিল সতর্ক ব্যাটিং তখনও খেলেছেন ঝুঁকিপূর্ণ শট। দলের বিপদের সময়ও কেন নিজের ঝুঁকিপূর্ণ প্রিয় শট খেলতেই হবে বুঝতে পারছেন না নাজমুল হাসান।

“অনেকের হয়তো খেলার স্টাইলই এই রকম। তারা হয়তো বলবে এভাবেই খেলে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু এই ধরনটা টেস্টের জন্য সহায়ক নয়। দলের জন্য যখন যেটা দরকার, দেশের জন্য যখন যেভাবে প্রয়োজন সেটাই তো করতে হবে। এটা শুধু একজন দুইজন খেলোয়াড় নয়, বেশিরভাগ সিনিয়র খেলোয়াড়দের মধ্যেই এই সমস্যা ছিল। ওরা যেভাবে খেলেছে এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এই ধরনের ব্যাটিং কোনভাবেই কেউ আশা করতে পারে না সিনিয়রদের কাছ থেকে।”

সীমানার বাইরে থাকা একমাত্র খেলোয়াড়কে শর্ট বলে টেস্টে ক্যাচ দিয়েছেন তামিম। ড্রাইভ করতে গিয়ে বারবার বল না পেলেও সেই একই শট খেলার চেষ্টায় ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ। পাঁচ ফিল্ডার রেখে সাকিব আল হাসানকে কাট করতে দিয়ে তার উইকেট নিয়েছে স্বাগতিকরা।

বিসিবি প্রধান মনে করছেন, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনা জরুরি।

“ওই সময়টাতে ওই সমস্ত শট খেলার কথাই না। আপনি যদি দেখেন, আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড়রা কি ধরনের শট খেলেছে- অবিশ্বাস্য লেগেছে। এখানে পরিকল্পনা ঘাটতি কোনো ভাবেই নেই। এটা পুরোটাই মানসিক ব্যাপার। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী খেলোয়াড়রা খেলতে পারেনি। ওটাই আমার কাছে দৃষ্টিকটু লেগেছে।”

“টেস্টে আপনি জিততে পারেন, ড্র করতে পারেন। হারার জন্য তো কেউ খেলে না, তারপরও হারতে পারেন। নিউ জিল্যান্ডে আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড়রা যেভাবে খেলেছে সেখানে মনে হয়েছে, তারা হারের জন্যই খেলছে। ইচ্ছে করে তো আর কেউ করেনি কিন্তু খেলা দেখে যে কেউ বলবে এ কথা। জয় কিংবা ড্রয়ের কোনো অপশনই তাদের মাথায় ছিল না।”

নাজমুল হাসান মনে করেন, মুশফিকুর রহিম, ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হকের মতো তিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যানের চোটে বাকিদের কাছ থেকে যতটা দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশিত ছিল তার ধারে কাছে ছিলেন না অন্যরা। 

“দলের গুরুত্বপূর্ণ তিনজন খেলোয়াড় যখন ইনজুরিতে, তখন যদি আপনি এসে মেরে বসেন। পরে বলেন, এই শটেই তো আমি রান পেয়েছি। ... অথচ তার উপরই সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব। বারবার একই শটে ওরা আউট হচ্ছে এটা মেনে নেওয়া কঠিন।”

“ওদের দায় এড়ানোর কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের সবাই জানে এবং সবাই দেখেছে কিভাবে আউট হয়েছে। নিউ জিল্যান্ডে আমাদের ম্যাচের যে পরিস্থিতিতে যা দরকার সেটা হয়নি। এটা হতেই পারে ক্রিকেটে। এটা থেকে আমরা কিভাবে বের হয়ে আসতে পারি তার জন্য আমাদের আরও মনোযোগ দিতে হবে।”