সহজ জয়ে সিরিজ অস্ট্রেলিয়ার

জন হেস্টিংসের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের পর ঝড়ো ব্যাংটিয়ে অস্ট্রেলিয়ার দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড স্পর্শ করলেন অ্যারন ফিঞ্চ। ম্যাচ শেষ করে এলেন ছন্দে থাকা জর্জ বেইলি। চতুর্থ ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার পেল অনায়াস জয়। দেশের মাটিতে টানা তৃতীয়বার অস্ট্রেলিয়ার কাছে ওয়ানডে সিরিজ হারল শ্রীলঙ্কা।  

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2016, 04:50 PM
Updated : 31 August 2016, 04:50 PM

৬ উইকেটের জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ২০০৪ ও ২০১১ সালে ৩-২ ব্যবধানে জিতে ফিরেছিল অতিথিরা।

বুধবার রনগিরি ডাম্বুলা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শেষ বলে ২১২ রানে অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। জবাবে ৩১ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া।

ব্যাটিংয়ের সময় চোট পাওয়া অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ফিল্ডিং করেননি। তার অনুপস্থিতিতে শ্রীলঙ্কা পরিণত হয় এক পেসারের বোলিং ইউনিটে। সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা।

থিসারা পেরেরার প্রথম ওভারটি মেডেন খেলেন ডেভিড ওয়ার্নার। পরের ওভারেই আমিল আপন্সোর ওপর চড়াও হন ফিঞ্চ। ১৭ রানের সেই ওভারের দ্বিতীয় বলে থিসারার হতে জীবন পান অস্ট্রেলিয়ার এই মারকুটে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।

ফিঞ্চের মন্ত্রই ছিল আক্রমণ, তাতে সফলও তিনি। ভাগ্যটাও সঙ্গে ছিল তার। কখনও ঠিক মতো টাইমিং না হলেও বা ব্যাটের কানা নিলেও বেঁচে গেছেন তিনি। ১৫ বলে ৪৯ রানে পৌঁছে যাওয়া ফিঞ্চ হাতছাড়া করেন বিশ্ব রেকর্ড স্পর্শ করার সুযোগ। কিন্তু স্পিনে পূর্ণ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে উড়ন্ত সূচনা দরকার ছিল তিনি ঠিকই এনে দিয়েছেন।  

১৮ বলে অর্ধশতক করে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্রুততম অর্ধশতকের সাইমন ও’ডোনেল ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের রেকর্ড স্পর্শ করা ফিঞ্চ ফিরেন ৫৫ রান করে। ১৯ বলে ৮টি চার আর তিনটি ছক্কায়।

ফিঞ্চকে ফেরানোর পর দ্রুত উসমান খাওয়াজা ও ওয়ার্নারকে বিদায় করেন সাচিথ পাথিরানা। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে ওয়ার্নার ফেরার সময় অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৯৭ রান।

১৩ রানে একবার আউট হলেও ‘নো’ বলের জন্য বেঁচে যান ট্র্যাভিস হেড। সেই দিলরুয়ান পেরেরার বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ার আগে করেন ৪০ রান। বেইলির সঙ্গে গড়েন ১০০ রানের জুটি।  

ফিঞ্চ যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই যেন শুরু করেন বেইলি। শুরুতে স্বাগতিক বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে চাপ সরিয়ে নেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। আগে দুইবার দলকে জয়ের কাছে নিয়ে বিদায় নিয়েছিলেন তিনি, এবার এলেন ম্যাচ শেষ করে। 

ম্যাথু ওয়েড ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেওয়ার সময় ৯০ রানে অপরাজিত ছিলেন বেইলি। তার ৮৫ বলের ইনিংসটি গড়া ১১টি চার ও ১টি ছক্কায়।

এর আগে বিরপীত অভিজ্ঞতা হয় শ্রীলঙ্কার দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের। এত দিন মিডল অর্ডার-লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা প্রথমবারের মতো ইনিংস উদ্বোধন করেন আর অভিষেক হয় অভিস্কা ফার্নান্দো।

শ্রীলঙ্কার হয়ে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের প্রথম ইনিংস সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন ডি সিলভা। যাকে ভাবা হচ্ছে আগের ম্যাচেই ওয়ানডেতে বিদায় জানানো তিলকারত্নে দিলশানের বিকল্প হিসেবে। ৭৬ রান করে ডি সিলভা ছাড়িয়ে যান সনাৎ জয়াসুরিয়াকে (৭৪)।

অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ফার্নান্দো ফিরেন শূন্য রানে। স্বাগতিকদের প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের পাঁচ জনই এদিন দুই অঙ্কে যেতে পারেননি। ডি সিলভার সঙ্গে ইনিংস পুনর্গঠনের এক পর্যায়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ম্যাথিউস। পরে ব্যাটিয়ে ফিরে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন তিনি।

শুরুতে শ্রীলঙ্কা কাঁপিয়ে দেওয়া হেস্টিংস শেষের দিকে ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ পাওয়া উইকেট এই পেসার হয়েছেন ম্যাচ সেরা। ৪৫ রানে তার ৬ উইকেট শ্রীলঙ্কায় অস্ট্রেলিয়ার কোনো বোলারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং। মিচেল জনসনের ৩১ রানে ৬ উইকেট এখনও সেরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২১২ (ডি সিলভা ৭৬, ফার্নান্দো ০, মেন্ডিস ১, চান্দিমাল ৫, ম্যাথিউস ৪০, অ্যাঞ্জেলো পেরেরা ৭, কুসল পেরেরা ৬, থিসারা ১৩, পাথিরানা ২৪, দিলরুয়ান ১৮, আপন্সো ১*; স্টার্ক ১/৫১, হেস্টিংস ৬/৪৫, বোল্যান্ড ১/৩৬, ফকনার ০/৩৯, জ্যামপা ১/৩০, হেড ১/৫)

অস্ট্রেলিয়া: ৩১ ওভারে ২১৭/৪ (ওয়ার্নার ১৯, ফিঞ্চ ৫৫, খাওয়াজা ০, বেইলি ৯০*, হেড ৪০, ওয়েড ৮*; থিসারা ০/২৪, আপন্সো ০/৫৯, দিলরুয়ান ১/৬৯, পাথিরানা ৩/৩৭, ডি সিলভা ০/২১, অ্যাঞ্জেলো পেরেরা ০/৫)

ফল: অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী

ম্যাচ সেরা: জন হেস্টিংস