বিপিএল
অভিজ্ঞ জেসন হোল্ডারের ওভার একটি বাকি থাকলেও শেষ ওভারে তরুণ মুশফিক হাসানের হাতে বল তুলে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ, ম্যাচ হারার পর সেই সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করলেন খুলনা টাইগার্স অধিনায়ক।
Published : 06 Feb 2025, 08:30 AM
সংবাদ সম্মেলনে প্রথম প্রশ্নটিই হলো ম্যাচের শেষ ওভার নিয়ে। অভিজ্ঞ জেসন হোল্ডারের একটি ওভার বাকি থাকলেও শেষ ওভারে কেন বোলিংয়ে আনা হলো তরুণ মুশফিক হাসানকে? মাঠের হাজার হাজার দর্শক, টিভি পর্দার সামনে লাখো দর্শকের মনেও প্রশ্নটি জাগার কথা। ম্যাচের পর সেই সিদ্ধান্তের পেছনে নিজের ভাবনা ব্যাখ্যা করেন খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।
বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খুলনার বিপক্ষে জয়ের জন্য শেষ ওভারে চিটাগং কিংসের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। হোল্ডারের তখন বাকি ছিল এক ওভার, মুশফিকের দুটি।
হোল্ডারের এটি ২৭৩তম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। আইপিএল, সিপিএল, বিগ ব্যাশ, এসএ টোয়েন্টি, আইএল টি-টোয়েন্টি, কোথায় খেলেননি তিনি! প্রবল চাপের মধ্যে বোলিংয়ের অভিজ্ঞতাও প্রচুর আছে ৩৩ বছর বয়সী ক্রিকেটারের। মুশফিকের সেখানে এটি ছিল স্রেফ নবম ম্যাচ। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এমন প্রবল চাপ সামলানোর অভিজ্ঞতা আগে ছিল না ২২ বছর বয়সী পেসারের।
শেষ ওভারটি করার জন্য তবু মুশফিককেই বেছে নেন মিরাজ। সেই ওভারে চিটাগংয়ের লোয়ার অর্ডার ব্যাটার আরাফাত সানি ও শরিফুল ইসলামের একটি করে বাউন্ডারির পর শেষ বলে চার মেরে দলকে ফাইনালে নিয়ে যান আলিস আল ইসলাম।
মিরাজ পরে জানালেন, হোল্ডারের আগের ওভারের বোলিং দেখেই এই ক্যারিবিয়ানের ওপর আস্থা রাখতে পারেননি তিনি।
“পরিকল্পনা যেটা ছিল… হোল্ডার আগের ওভারে যে বোলিংটা করেছে, ১৪ বলে ওদের রান লাগত ৩২, ওখানে সে একটা ছক্কা ও একটা চার খেয়ে গিয়েছে। ওখানেই আমাদের ম্যাচ অনেকটা ছুটে গিয়েছে। এরকম একজন অভিজ্ঞ বোলারকে এমন মুহূর্তে এসে যদি বোলাররা ছক্কা-চার মেরে দেয়, তাহলে তো আমাদের দলের জন্য কাজটা কঠিন।”
“এরপর হাসান বেশি ভালো বোলিং করেছে বলে শেষ ওভারে ১৫ রানে গিয়েছে। ওখানে যদি মুশফিককে করাতাম (১৯তম ওভারে), যদি ১২-১৩ রান দিয়ে দিত, তাহলে শেষ ওভারে একই রকম রান লাগত। এজন্য আমি ভরসা পাচ্ছিলাম না (হোল্ডারের ওপর)। কারণ, ওই দুটি বল যেভাবে করেছে, যেখানে করেছে…।”
নিজের প্রথম দুই ওভারে হোল্ডার দিয়েছিলেন কেবল ১০ রান। পরে ছক্কা ও চার হজম করা ওই ওভার থেকে আসে ১৩ রান। সেটি ছিল ম্যাচের ১৮তম ওভার। পরের ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ে হাসান মাহমুদ রান দেন কেবল ছয়।
১৯তম ওভারটি মুশফিককে করিয়ে শেষ ওভারে হাসানকে দেওয়াও হতে পারত একটি পরিকল্পনা। এখানেও পরিকল্পনায় গড়বড় হওয়ার পেছনে হোল্ডারকে দায় দিলেন মিরাজ।
“হোল্ডার যদি ওই দুটি বল ভালো করত, তাহলে পরের ওভার আমি হাসানকে করাতাম না। ওই ছয় ও চার যখন হয়ে গিয়েছে, তখন ১৩ বলে লাগে ২২ রান। তখন আমি কী করব? আমার সেরা বোলারকেই তো করাব! যদি রান লাগত ৩০-২৮, তাহলে ওই ওভার মুশফিককে দিতাম। বেশি হলে সে ১৫ রান দিত। তখন শেষ ওভার হাসানকে দিতাম, ও এসে ১৫ রান ডিফেন্ড করত। কিন্তু দুই ওভারে যখন ২১ লাগে, তখন আমার আর বিকল্প ছিল না (হাসানকে দেওয়া ছাড়া)।”
মুশফিক নিজের প্রথম ওভারে রান দিয়েছিলেন ১২। তার পর আবার তাকে আক্রমণে আনা হয় ১৬তম ওভারে। এবার প্রথম বলেই ফেরান তিনি বড় বাধা হয়ে থাকা ৫৭ রান করা খাওয়াজা নাফেকে। এক বল পরই বিদায় করেন সৈয়দ খালেদ আহমেদকে। জোড়া উইকেট নিয়ে ওভারে রান দেন কেবল পাঁচ।
মিরাজ জানালেন, মুশফিকের অমন বোলিংও প্রভাবিত করেছিল শেষ ওভারটিতে এই তরুণের ওপর ভরসা রাখতে।
“মুশফিক তো আগের দুটি ওভার খুব ভালো করেছে। ওদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যানের উইকেটও নিয়েছে। ওইভাবে চিন্তা করে শেষ ওভারটি দিয়েছিলাম (মুশফিককে)।”