‘পুরো বছর বয়ে নিয়ে বিশ্বকাপের আগে কেন?’ মাহমুদউল্লাহ-মুশফিককে নিয়ে তামিমের প্রশ্ন

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অভিজ্ঞদের খেলিয়ে সামনের বিশ্বকাপের জন্য নতুন পরিকল্পনা করা যেত, অভিমত বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2022, 05:35 PM
Updated : 7 Oct 2022, 05:35 PM

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগে মুশফিকুর রহিমের অবসর ও মাহমুদউল্লাহর বাদ পড়া নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের মতে, এই সিদ্ধান্তগুলি হতে পারত গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরপরই কিংবা এই বিশ্বকাপের পর।

গত মাসের শুরুতে এশিয়া কাপের প্রথম রাউন্ড থেকে বাংলাদেশ বাদ পড়ার পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নেন মুশফিক। এই সংস্করণে ভালো করতে না পারায় সমালোচনা ছিল তাকে নিয়ে। লম্বা সময় ফর্মে না থাকা আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ অবশ্য বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়ার আশায় ছিলেন। কিন্তু তাকে বাদ দেওয়া হয়।

টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ধুঁকতে থাকা দল এরপর নতুনভাবে ও নতুন মানসিকতায় সামনে এগোনোর তাড়নার কথা জানায়। যদিও মাঠের ক্রিকেটে এখনও সেসবের প্রতিফলন পড়েনি তেমন একটা।

তামিমের আপত্তি মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের বিদায় ও বাদের সময়টা নিয়ে। শুক্রবার একটি প্রতিষ্ঠনের পণ্যদূত হওয়ার আয়োজনে তিনি অবশ্য নতুনদের ওপর ভরসা রাখার কথাও বললেন।

“যে দলটা এখন খেলছে, তুলনামূলক অনেক নতুন, যদি কয়েকজনের কথা বাদ দিন। যে কোনো কিছুতে সময় দিতেই হবে। আগেও বলেছি, মুশফিক-রিয়াদ, এরা যদি বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে থাকত, আমার কাছে অবশ্যই ভালো মনে হতো। কারণ, যখন পুরো বছর একজন সিনিয়র ক্রিকেটারকে ক্যারি করেছেন, তাহলে বিশ্বকাপের আগেই কেন?”

“যদি পুরো বছর আগে হতো, তাহলে ঠিক ছিল। কারণ, এই বিশ্বকাপের পর কিন্তু দুই বছর আছে… সঙ্গে এটাও অবশ্যই বলব, যারা ওদের জায়গায় খেলছে, যেমন ইয়াসির রাব্বি, আই রেট হিম ভেরি ভেরি হাই। আফিফ খুবই ভালো খেলছে।”

তামিম নিজে এই সংস্করণ থেকে বিদায় নিয়েছেন আগেই। ২০২০ সালের মার্চের পর তিনি আর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেননি। তবে দল এখনও পর্যন্ত ধুঁকছে ওপেনিং নিয়ে। সবশেষ চার ম্যাচে মেকশিফট ওপেনার হিসেবে চেষ্টা করা হচ্ছে সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়ে। এখানেও সফল হওয়ার ইঙ্গিত ততটা নেই এখনও।

তামিমের নিজের অভিমত, নিয়মিত ওপেনারদেরই এই পজিশনে খেলানোর পক্ষে। তবে মেকশিফট ওপেনারের এই পরিকল্পনাও একদম উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি।

“যখন একটা নতুন কোচ আসেন, তিনি নতুন পরিকল্পনা নিয়ে আসেন। আমি দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই কোচের (শ্রীধরন শ্রীরাম) সঙ্গে কোনো কাজ করিনি, তার পরিকল্পনা কিছু জানি না। না জেনে যদি কিছু বলে দেই, এটা তো ঠিক হবে না। নিশ্চয়ই তাদের কোনো কারণ আছে এটার পেছনে। যদি তারা সফল না হয়, তাদের প্ল্যান ‘বি’ থাকা উচিত এবং আমি নিশ্চিত, তাদের আছে।”

“আমার কাছে মনে হয়, যারা ওপেন করে, তাদের দিয়েই ওপেন করানো উচিত। তবে এটার পেছনে (মেক-শিফট ওপেনার) যদি কোনো পরিকল্পনা থাকে, আমি সেটাকে ভুল বলতে পারব না।”

মিডল অর্ডার থেকে ওপেনিংয়ে উঠে এসে সফল হওয়ার ক্ষেত্রে রোহিত শর্মার উদাহরণ তুলে ধরলেন তামিম।

“রোহিত শর্মার উদাহরণ তো আছেই। ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ওপেনারদের একজন সে। সে তো ওপেনার ছিল না। কেউ পরিকল্পনা করেছে, সে ওপেন করেছে এবং ২৫টি সেঞ্চুরি করেছে (আসলে তিন সংস্করণ মিলিয়ে তার ওপেনিংয়ে সেঞ্চুরি ৩৬টি)। আমি কাউকে বাতিল করে দিতে চাই না। মিরাজকেও না, সাব্বিরকেও না। যথেষ্ট সুযোগ তাদেরকে দেওয়া হোক। যদি কাজে না দেয়, তখন বদলানো যাবে।”

সংবাদমাধ্যম, ক্রিকেট অনুসারীদের প্রতি ওয়ানডে অধিনায়কের অনুরোধ, পর্যাপ্ত পরখ করার আগেই যেন কোনো ক্রিকেটারকে শূলে চড়ানো না হয়।

“একটা অনুরোধ আমি করতে পারি… দেখুন, কে দলে থাকবে, কে থাকবে না, এসব কিন্তু সবারই প্রশ্ন। কেউ তো জোর করে দলে ঢোকে না! খেলার আগেই যেন একটা ছেলেকে আমরা উড়িয়ে না দেই। সে কেন দলে… নিশ্চয়ই তাকে নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে। হয়তো আমার মনে প্রশ্ন হতে পারে, কিন্তু আরেকজনের তো পরিকল্পনা আছে।”

“তো, ওই সুযোগটা তাকে দিয়েন। প্রথম বল খেলার আগেই তাকে শেষ করে দিয়েন না।”

বিশ্বকাপকে ঘিরেও তামিম বললেন, দ্রুতই ধৈর্য হারিয়ে সমালোচনার ঝড় বইয়ে না দিয়ে দলের পাশে যেন থাকেন সবাই।

“একটি-দুটি, পাঁচটি পারফরম্যান্স যদি খারাপ হয়, কারও ওপর লাফিয়ে না পড়ে সবার সাপোর্ট করা উচিত। আমরা সবাই চাই বিশ্বকাপে ভালো করতে। আমরা যদি তিন-চারটি, দুই-তিনটি ম্যাচ জিততে পারি, তাহলে এটা ভালো অর্জন হবে। বাংলাদেশ কখনও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খুব বেশি ম্যাচ জেতেনি। সবাই তাই ইতিবাচক থাকি।”