এবার টেস্টে ঝড় তোলার অপেক্ষায় লিভিংস্টোন

টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ এই ক্রিকেটারকে এবার টেস্টের আঙিনায় নামিয়ে দিচ্ছে ইংল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2022, 04:28 AM
Updated : 30 Nov 2022, 04:28 AM

লিয়াম লিভিংস্টোনের মূল পরিচয় টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ। তবে ইংল্যান্ড তো এখন টেস্ট ব্যাটিংয়েও টি-টোয়েন্টি মানসিকতার ছাপ রাখছে। তাই লিভিংস্টোনের পরিচয়েও যোগ হচ্ছে নতুন মাত্রা। আগ্রাসী এই ব্যাটসম্যান এবার পেতে যাচ্ছেন টেস্ট ক্যাপ।

পাকিস্তানের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার শুরু হতে যাওয়া রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের একাদশ ঘোষণা করে দিয়েছে ইংল্যান্ড। সেখানে ঠাঁই মিলেছে লিভিংস্টোনের। ইংল্যান্ডের ৭০৮তম টেস্ট ক্রিকেটার হতে যাচ্ছেন ২৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।

ইংল্যান্ডের ওয়ানডে দলে এখনও জায়গা পাকা করার লড়াই চলছে লিভিংস্টোনের। তবে টি-টোয়েন্টি দলের তিনি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সম্প্রতি দলের হয়ে জিতেছেন ২০ ওভারের বিশ্বকাপ। ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতেও তিনি দারুণ কাঙ্ক্ষিত এক নাম। এর মধ্যেই তিনি পা রাখতে যাচ্ছেন সম্পূর্ণ ভিন্ন ঘরানার ক্রিকেটের জগতে। যেখানে চ্যালেঞ্জটা আরও বড় ও কঠিন।

লিভিংস্টোনের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রেকর্ড এমনিতে দুর্দান্ত না হলেও খারাপ নয়। ৬২ ম্যাচে ৭ সেঞ্চুরিতে ৩ হাজার ৬৯ রান তার ৩৮.৩৬ গড়ে। উইকেট ৪৩টি। তবে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তুমুল ব্যস্ততায় গত ১৫ মাসে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাকে দেখা যায়নি। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটীয় সংস্কৃতিতে এমন একজনকে টেস্টে নামিয়ে দেওয়া বিরল। তার পরও তাকে টেস্ট স্কোয়াডে নেওয়া এবং অভিষেক করিয়ে দেওয়ার কারণটি বুঝে নিতে সমস্যা হয় না।

ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও বেন স্টোকসের জমানায় টেস্ট ক্রিকেটের দর্শন যেভাবে বদলে ফেলেছে ইংল্যান্ড, সেটিরই প্রতিফলন লিভিংস্টোনের টেস্ট অভিষেকে। সাদা পোশাকেও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের যে চমক তা উপহার দিয়ে চলেছে, সেটিরই আরেকটি বার্তা মিলল এতে।

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিং ও ফিল্ডিং মিলিয়ে লিভিংস্টোন যে আকর্ষণীয় প্যাকেজ, সেটি ফুটে উঠল কোচ ম্যাককালামের কথায়।

“সে অফ স্পিন করে, লেগ স্পিন করে, ভালো ফিল্ডিং করে এবং দুর্দান্ত আক্রমণে বল সীমানা ছাড়া করে- এমন একজন ক্রিকেটারকে বেছে না নেওয়া কঠিন।”

ইংল্যান্ডের স্কোয়াডে অবশ্য আরও একজন ছিলেন অনেকটা এরকমই। ২৪ বছর বয়সী উইল জ্যাকসও আগ্রাসী ব্যাটসম্যান ও অফ স্পিনার। অধিনায়ক বেন স্টোকস জানালেন, শেষ পর্যন্ত লিভিংস্টোন এগিয়ে গেছেন অফ ও লেগ, দুই ধরনের স্পিন করার সামর্থ্যে।

“আমাদের সত্যিকারের আলোচনা ছিল জ্যাকসি (জ্যাকস) ও লিভির (লিভিংস্টোন) মধ্যে কাকে বেছে নেব। শেষ পর্যন্ত লিভির দিকে পাল্লা হেলে পড়েছে তার ব্যাটিং পজিশন ও তৃতীয় স্পিনার হিসেবে সম্ভাব্য ভূমিকার কারণে। দুই দিকেই বল টার্ন করাতে পারে, এমন একজনকে পাওয়া দারুণ ব্যাপার।”

“ব্যাট হাতে লিভি যেভাবে নিজেকে মেলে ধরে, তা অনেকটা জ্যাকসির মতোই। তবে লিভি লেগ স্পিন ও অফ স্পিন দুটোই করতে পারে, যা আমাদের জন্য বাড়তি পাওয়া।”

লিভিংস্টোন তৃতীয় স্পিনার হলেও ইংল্যান্ডের একাদশে বিশেষজ্ঞ স্পিনার একজনই, বাঁহাতি স্পিনার জ্যাক লিচ। দ্বিতীয় স্পিনারের কাজ চালাবেন জো রুট। ব্যাটিং অর্ডারে লিভিংস্টোনকে রাখা হচ্ছে ৮ নম্বরে। কিপার বেন ফোকস থাকবেন ৭ নম্বরে।

একাদশে পেসারও থাকছেন দুই জন- জেমস অ্যান্ডারসন ও অলিভার স্টোন। সঙ্গে তৃতীয় পেসার অধিনায়ক অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। একাদশে বিশেষজ্ঞ বোলার তাই বলতে গেলে স্রেফ ৩ জন।

বড় একটি পরিবর্তন আসছে ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারেও। ৬ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরতে যাচ্ছেন বেন ডাকেট। ওপেনিংয়ে জ্যাক ক্রলির সঙ্গে জুটি গড়বেন বাঁহাতি এই আগ্রাসী ব্যাটসম্যান।

ঘরোয়া ক্রিকেটে ও ইংল্যান্ড লায়ন্সের হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় ডাকেটের। তবে সেভাবে ছাপ রাখতে পারেননি তখন। বাংলাদেশের বিপক্ষে চার ইনিংসে ফিফটি করেন কেবল একটি। পরে ভারত সফরে দুই টেস্টে রান না পাওয়ার পর বাদ পড়ে যান।

পরে ঘরোয়া ক্রিকেট আর লায়ন্সের হয়ে পারফর্ম করেই আবার আদায় করে নিয়েছেন নিজের জায়গা। ২৮ বছর বয়সে এখন তিনি আরও পরিণত। চার টেস্টে থমকে থাকা ক্যারিয়ারে নতুন গতি আনার সুযোগ তার সামনে।