অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে এখনই মন্তব্য করতে চান না সাকিব

সবার সমর্থন পেলে নাজমুল হোসেন শান্ত অসাধারণ অধিনায়ক হয়ে উঠবেন বলে মনে করেন সাকিব আল হাসান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2024, 09:01 AM
Updated : 28 March 2024, 09:01 AM

আশা জাগিয়েও টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ হার। পরে ওয়ানডেতে দাপুটে জয়। টেস্টে আবার প্রথম ম্যাচে বিব্রতকর পরাজয়। তিন সংস্করণের অধিনায়ক হিসেবে নাজমুল হোসেন শান্তর শুরুটা বলা যায় অম্ল-মধুর। তার অধিনায়কত্বের নানা দিক নিয়ে বিশ্লেষণও শুরু হয়ে গেছে। তবে তার নেতৃত্ব নিয়ে মূল্যায়নের সময় এখনও আসেনি বলে মনে করেন সাকিব আল হাসান। 

গত বছর তামিম ইকবাল ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর থেকেই তিন সংস্করণে অধিনায়ক হিসেবে বিসিবির প্রথম পছন্দ ছিলেন সাকিব। ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপেও অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের নেতৃত্বে খেলেছে বাংলাদেশ। আর টি-টোয়েন্টি ও টেস্টে আগে থেকেই তার কাঁধে ছিল নেতৃত্ব।  

সব কিছু ঠিক থাকলে নতুন বছরেও হয়তো তিন সংস্করণে টস করতে দেখা যেত সাকিবকে। এতে বাগড়া দেয় সাকিবের চোখের সমস্যা। গত বছরের বিশ্বকাপ থেকেই এই কারণে ব্যাটিংয়ে ভুগছেন তিনি। গত মাসে শান্তকে অধিনায়কত্ব দেওয়ার সময় বিসিবির পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, সাকিবের চোখের সমস্যার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শান্ত নেতৃত্ব পেয়েছেন চলতি বছরের জন্য। শুরুটা হয়েছে শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়ে। এর আগে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে, বিশ্বকাপে দুটি ম্যাচ ও নিউ জিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে নেতৃত্ব দিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যান।

নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে একটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি জয়ে দারুণ অধিনায়কত্ব করেন শান্ত। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়েও মাঠ পরিচালনায় তার ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। ফিল্ডিং সাজানো, বোলিং পরিবর্তন কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বোলারদের সঙ্গে আলোচনায়ও বেশ সক্রিয় দেখা যায় তাকে।

টেস্টের কঠিন পরীক্ষায় অবশ্য শুরুতে হোঁচট খেয়েছেন শান্ত। ব্যাটিং ব্যর্থতায় বড় হারের ম্যাচে বোলিং ইনিংসের সময়ও ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের পাল্টা আক্রমণের কোনো জবাব যেন দিতে পারেনি বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য ভালো করার বাড়তি রসদ পাচ্ছেন শান্ত। চট্টগ্রাম টেস্টের দলে ফিরেছেন সাকিব। 

দলে যোগ দেওয়ার আগে বৃহস্পতিবার সকালে একটি অনুষ্ঠানে সাকিব বললেন, শান্তর অধিনায়কত্ব নিয়ে এখনই কোনো ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে যেতে চান না তিনি।

“(শান্তর অধিনায়কত্বের) খুবই প্রাথমিক পর্যায় এখন। আমি নিশ্চিত, বিসিবি ওকে লম্বা সময়ের কথা চিন্তা করেই (দায়িত্ব) দিয়েছে। ওর শুরুটা খুবই ভালো হয়েছে। কিছু ফলাফল ওর পক্ষে এসেছে, যেটা ওকে সাহায্য করবে আরও বেড়ে উঠতে। আমার ধারণা, সবার সমর্থন থাকলে শান্ত অসাধারণ একজন নেতা হবে।”

চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে প্রায় ৫ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন সাকিব। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি সবশেষ খেলেছেন গত বছরের এপ্রিলে। এই সিরিজের কোনো ম্যাচই অবশ্য খেলার কথা ছিল না তার। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস বলেছিলেন, পুরো সিরিজেই তাকে পাবে না বাংলাদেশ।

তবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুই ম্যাচ খেলার পর দ্বিতীয় টেস্টের জন্য ঘোষিত দলে রাখা হয় সাকিবকে। শেখ জামালের হয়ে খেলা তৃতীয় ম্যাচে ব্যাট হাতে ৫৩ রানের পর আঁটসাঁট বোলিংয়ে ২ উইকেট নেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। টেস্টে ফেরার প্রস্তুতিটা মূলত প্রিমিয়ার লিগের এই তিন ম্যাচ দিয়েই নিতে হয়েছে তাকে।

প্রায় এক বছর এবার টেস্ট ক্রিকেটে মাঠে নামার আগে সাকিব বললেন, দেশের হয়ে খেলার গর্ব নিয়েই তিনি ফিরছেন।

“ব্যক্তিগত কোনো লক্ষ্য নেই। আমার মনে হয় না, ক্রিকেট যতদিন খেলেছি, কোনো ব্যক্তিগত লক্ষ্য বা অর্জন নিয়ে আমার কোনো চিন্তা ছিল। সবসময় চেষ্টা করেছি, দলের জন্য কীভাবে অবদান রাখা যায়। দেশের হয়ে পারফর্ম করতে পারা কিংবা প্রতিনিধিত্ব করতে পারা সবসময় গর্বের একটা বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই টেস্ট দলে ফিরতে পেরে আমি আনন্দিত, একই সঙ্গে গর্বিত।”

সিলেটে প্রথম টেস্টে ব্যাটসম্যানদের নাজুক পারফরম্যান্সে তেমন লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ। বোলাররা দুই ইনিংসেই দারুণ শুরুর পর হতোদ্যম হয়ে পড়েন ধানাঞ্জয়া ও কামিন্দুর সামনে। সব মিলিয়ে ৩২৮ রানের পরাজয়ে শেষ হয় ম্যাচ। 

এই সংস্করণে বাংলাদেশের শক্তি-সামর্থ্যের বাস্তবতা মাথায় রেখেই সাকিব বলেছেন, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জেতা উচিত তাদের।

“আশা তো সবসময় করি যেন জিতব। তবে টেস্ট ক্রিকেটে আমরা সবসময় ‘স্ট্রাগল’ করেছি। আমাদের জন্য কঠিন। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের অনেক ভালো করা উচিত এবং টেস্ট ম্যাচ জেতা উচিত।”