ঢাকায় এখন করোনাভাইরাসের উপ-ধরন বিএ.৫ এর দাপট

ঢাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপ-ধরন বিএ.৫ এর প্রভাবে দেখতে পেয়েছেন গবেষকরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2022, 07:19 PM
Updated : 5 July 2022, 07:20 PM

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, আইসিডিডিআর,বির গবেষকরা বলছেন, গত ৬ সপ্তাহ ধরে ওমিক্রনের এই উপ-ধরনটি প্রাধান্য বিস্তার করছে।

তারা একই সঙ্গে বলেছেন, ওমিক্রনের এই উপধরনটি অতিমাত্রায় সংক্রামক হলেও এতে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর হার কম।

মহামারী শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে ২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে পরের বছর অবস্থা হয়ে ওঠে সঙ্গিন। ওই বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপটে গত বছরের মাঝামাঝিতে আবার রোগী বেড়েছিল। এরপর বছরের শেষ ভাগ থেকে রোগী কমতে শুরু করলেও এখন আবার বাড়ছে।

গত কয়েকদিন ধরে প্রায় প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হওয়ার এই পরিস্থিতিকে দেশে মহামারীর ‘চতুর্থ ঢেউ’ বলা হচ্ছে।

এর মধ্যে ওমিক্রনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট বা উপ-ধরনে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের কথা জানান যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

মঙ্গলবার আইসিডিডিআর,বির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ বিএ.১ উপধরনের প্রাধান্য ছিল। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকে বিএ.২ উপধরন প্রাধান্য বিস্তার করে। এই উপধরনটি বিএ.১ উপধরনকে হটিয়ে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সংক্রমণ ঘটায়।

এ বছরের ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসের শনাক্তের হার খুব কম থাকায় সিকোয়েন্সিং করা সম্ভব হয়নি বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে আইসিডিডিআর,বি।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে, গত ১৯ মে ঢাকায় ওমিক্রনের উপধরন বিএ.৫ এ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। এরপর গত ছয় সপ্তাহে, ১৪ মে থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত সময়ে বিএ.৫ প্রভাব বিস্তার করছে।

এমনকি এই সময়ের মধ্যে ৫২টি করোনাভাইরাস রোগীর জেনোম সিকোয়েন্স করে ৫১টিতে বিএ.৫ পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে। বিএ.২ পাওয়া গেছে একটিতে।

বিএ.৫ উপধরনে সংক্রমিত ৪০ জন রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ ও ২৪ জন নারী। তাদের ৩৯ জনের করোনাভাইরাসের মৃদু উপসর্গ দেখা গেছে, একজনের মধ্যে কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি। এই ৪০ জনের মধ্যে মাত্র একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে।

আক্রান্তদের ১১ জন দ্বিতীয়বারের মতো এবং সাতজন তৃতীয়বারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই ৪০ জনের মধ্যে ৩৮ জন করোনাভাইরাসের টিকার অন্তত এক ডোজ নিয়েছিলেন। যাদের ১৬ জন বুস্টার ডোজ নিয়েছেন, ২১ জন নিয়েছেন দুই ডোজ টিকা, মাত্র একজন এক ডোজ টিকা নিয়েছিলেন।