স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ৯৫১ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের।
তাতে সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ ছিল।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারে চলতি বছরের শুরু থেকে দেশে আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকে দ্রুত। গত ৯ জানুয়ারি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৭ শতাংশ ছাড়ায়। ২৮ জানুয়ারি তা পৌঁছায় ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশের রেকর্ড উচ্চতায়।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ৩৫ হাজার ২৪২ জন। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ৯৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এ ভাইরাসে।
সরকারি হিসাবে এই সময়ে সেরে উঠেছেন ৮ হাজার ৬৭৪ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত ১৭ লাখ ৬৩ হাজার ২৫৮ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
সে হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৪৩ হাজার ১০ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। তবে উপসর্গবিহীন রোগীরা এই হিসাবে আসেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে কোভিড শনাক্ত হয়েছে ২৩ হাজার ৬২৭ জনের। এর আগে সপ্তাহে এই সংখ্যা ছিল ৪৮ হাজার ১৩২ জন। অর্থাৎ এক সপ্তাহে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে ৫০ শতাংশের বেশি।
গত সাত দিনে ১৪৬ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আগের সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছিল ২৩০ জনের। সে হিসাবে এক সপ্তাহে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।
বাংলাদেশে মহামারীর শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশর ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে।
এরপর আসে আরেক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এক পর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
এরপর সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে, ৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তা পাঁচ হাজারের নিচে নামে।
মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ১ হাজার ৩৬৫ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৭৪ শতাংশের বেশি।
যে নয় জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ এবং চারজন নারী। তাদের মধ্যে তিনজন জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। বাকী ছয়জন রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
তাদের মধ্যে ৫ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, দুইজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ থেকে বছর, একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর এবং একজনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৮ লাখ ৮৮ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪২ কোটি ৪৫ লাখের বেশি।