টিকা না নিলে সেবাও নেই, সিদ্ধান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায়

মহামারীর এই কালে মাস্ক না পরলে সরকারি কোনো সংস্থায় সেবা মেলে না; এখন সেবা নিতে কোভিড টিকা গ্রহণও বাধ্যতামূলক হচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2021, 10:46 AM
Updated : 30 Nov 2021, 12:26 PM

করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, “এখনও অনেকেই টিকা নেয়নি। অনেকের টিকা নিতে আগ্রহ কম। এ কারণে সভায় ‘নো ভ্যাকসিন-নো সার্ভিস’ নিয়ম চালুরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

“আগে আমাদের স্লোগান ছিল- ‘নো মাস্ক-নো সার্ভিস’, এখন থেকে আমরা বলতে যাচ্ছি ‘নো ভ্যাকসিন, নো সার্ভিস’। আজকে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়ে তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেব।”

প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশে সোমবার অবধি এক-তৃতীয়াংশ মানুষ কোভিড টিকার অন্তত এক ডোজ নিয়েছেন। টিকা নিতে নিবন্ধন করিয়েছেন ৭ কোটি ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৪৩৯ জন।

৬ কোটি ২৩ লাখ ৬ হাজার ১৮ জন কোভিড টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। এর  মধ্যে ৩ কোটি ৬৬ লাখ ৮২ হাজার ৭৬৬ জন দ্বিতীয় ডোজও নিয়েছেন। শতকরা হিসেবে প্রথম ডোজ নিয়েছেন দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৫ দশমিক ৬২ শতাংশ, আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২১ দশমিক ৬৯ শতাংশ মানুষ।

১৩ কোটি নাগরিককে কোভিড টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা সাজিয়ে এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে টিকাদান শুরু হয় বাংলাদেশে। এই টিকা সরকারিভাবে বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে।

আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।

ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

“আমরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, যাতে বুস্টার ডোজ দিতে পারি। ভারত, থাইল্যান্ডসহ আশপাশের কয়েকটি দেশ বুস্টার ডোজ দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা মোটামুটি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

দেশে ওমিক্রন সংক্রমণ ঠেকাতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয় সভায়। যে দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি প্রথম শনাক্ত হয়েছে, সেই দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কেউ এলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে সভা-সমাবেশে জনসমাগম কমিয়ে আনার সুপারিশ করেছে।

এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো বা স্থগিতের কোনো পরামর্শ স্বাস্থ্য বিভাগ দিয়েছে কি না- এ প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, “এখন যেভাবে আছে সেভাবে চলবে। পরীক্ষাও চলবে, যেখানে সতর্ক হওয়া দরকার সেখানে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আমরা বলেছি।”

বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, করোনাভাইরাস সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন।