কোভিড: এক দিনে শনাক্ত বেড়েছে, মৃত্যু ৪১

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে আরও ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে; সংক্রমণ ধরা পড়েছে আরও ১ হাজার ৯৫৩ জনের মধ্যে, যা আগের দিনের তুলনায় বেশি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2021, 12:05 PM
Updated : 13 Sept 2021, 12:44 PM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৩২ হাজার ৩৬৬ জনে। আর তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৬ হাজার ৯৭২ জনের।

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৭১ জন নতুন রোগী শনাক্ত এবং ৫১ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল। সে হিসেবে গত এক দিনে মৃত্যু কমলেও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।  

গত এক দিনে সারা দেশে সোয়া ২৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ, যা আগের দিন ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ ছিল।

গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ১ হাজার ৩১৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে যা দিনের মোট আক্রান্তের দুই তৃতীয়াংশ।

যে ৪১ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ১৪ জন ঢাকা এবং ১৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ৪ হাজার ১১২ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৪ লাখ ৮২ হাজার ৯৩৩ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।

মহামারীর দেড় বছরে সবচেয়ে বাজে সময়টা বাংলাদেশ পার করেছে এ বছর জুলাই মাসে। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপটে ওই এক মাসেই ৩ লাখ ৩৬ হাজার রোগী শনাক্ত হয়, মৃত্যু হয় ৬ হাজার ১৭৬ জনের।

গত বছর মার্চে মহামারী শুরুর পর আর কোনো মাসে এত বেশি আক্রান্ত বা মৃত্যু বাংলাদেশকে দেখতে হয়নি। অগাস্টের শুরু থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই ধীরে ধীরে কমে আসছে। সেপ্টেম্বরে তা আরও কমছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের কোভিড পরিস্থিতির সাপ্তাহিক যে পরিসংখ্যান দিয়েছে, তাতে গত এক সপ্তাহে (৬ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর) দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আগের সপ্তাহের তুলনায় (৩০ অগাস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর) ২৩ দশমিক ৭২ শতাংশ কমেছে; মৃত্যু কমেছে ৩২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। 

গত সপ্তাহে মোট ১৫ হাজার ৯৫৭ জনের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল, মৃত্যু হয়েছিল ৩৬৮ জনের। তার আগের সপ্তাহে ২০ হাজার ৯১৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, মারা গিয়েছিরেন ৫৪৮ জন।  

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ২৫ হাজার ৩৮৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯২ লাখ ৭২ হাজার ১২১টি নমুনা।

এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ; মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ১৪ ঢাকা বিভাগের, ১৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ৬ জন খুলনা বিভাগের, ১ জন বরিশাল বিভাগের, ১ জন সিলেট বিভাগের এবং ২ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

মৃত ৪১ জনের ১৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ১৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।

তাদের মধ্যে ৩৪ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ৬ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আর বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে। 

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে সবচেয়ে বাজে সময়টা পার করে এসে ৩১ অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ অগাস্ট তা ২৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২২ কোটি ৪৬ লাখের বেশি রোগী।