গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৯৪ জনের মধ্যে ৪৫ জন ছিলেন পুরুষ এবং ৪৯ জন নারী। এ নিয়ে সপ্তমবারের মত দৈনিক মৃত্যুতে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি হল।
মহামারীর দেড় বছরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে যত পুরুষ মারা গেছে, নারী মারা গেছে তার অর্ধেকেরও কম। কিন্তু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের পর অগাস্ট মাসেই নারীর মৃত্যুহার বেড়ে গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৩০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে দেশে ৩ হাজার ৩৭২৪ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
এ নিয়ে দেশে মোট ১৪ লাখ ৯৭ হাজার ২৬১ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হল; আর আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হল মোট ২৬ হাজার ১০৯ জনের।
শনিবার ২৪ ঘণ্টায় ৮০ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যা গত ৯ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন। রোববার ৮৯ জনের মৃত্যু হয়, শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৯৪৮ নতুন রোগী। সেই হিসেবে সোমবার মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে, তবে নতুন রোগীর সংখ্যা এবং শনাক্তের হার কমেছে।
সোমবার শনাক্ত রোগীর হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ০৭ শতাংশ, আগের দিন তা ১৪ দশমিক ১৪ শতাংশ ছিল।
গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ২ হাজার ৮১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দিনের মোট আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি। আগের দিন এ বিভাগে ২ হাজার ৪৬৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
গত এক দিনে মারা যাওয়া ৯৪ জনের মধ্যে ৪৩ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সরকারি হিসাবে, দেশে কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬ হাজার ১৮৬ জন সুস্থ হয়েছেন । এ নিয়ে মোট ১৪ লাখ ২১ হাজার ৮৮৩ জন সেরে উঠলেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে গত জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু হু করে বেড়ে ১৪ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১৩ অগাস্ট। তার আগে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ অগাস্ট তা ২৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৫ লাখ ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২১ কোটি ৬৩ লাখের বেশি রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ৩০ হাজার ৮৫৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৮৯ লাখ ২৪৮টি নমুনা।
নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় দৈনিক শনাক্তের হার ১২ দশমিক ০৭ শতাংশ, এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের ঢাকা ৪৩ জন ঢাকা বিভাগের। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ২৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬ জন, খুলনা বিভাগে ৫ জন, বরিশাল বিভাগে ১ জন, সিলেট বিভাগে ৭ জন, রংপুর বিভাগে ১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন ৪ জন।
মৃত ৯৪ জনের মধ্যে ৪৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৪ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং ৩ ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২১ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের মধ্যে ৪৫ জন ছিলেন পুরুষ, ৪৯ জন ছিলেন নারী। ৭৬ জন সরকারি হাসপাতালে, ১৭ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ১ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।