দিল্লির সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ঢাবি শিক্ষার্থীদের সংহতি

সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়াসহ বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2022, 04:57 PM
Updated : 24 Nov 2022, 04:57 PM

বৃত্তির পরিমাণ বাড়ানোসহ ব্শ্বিবিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবিতে দিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করে।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়াসহ বহিস্কৃত শিক্ষার্থীদের পুনর্বহালের দাবি জানান। একই সঙ্গে নব্য-উদারবাদী অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারন এবং এর প্রয়োগের ফলে সারা বিশ্বব্যাপী শিক্ষা-চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সামাজিক সেবা খাতে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ কমানোর প্রতিবাদ জানান তারা।

মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী জাবির আহমেদ জুবেলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অর্ণি আনজুম, মোজাম্মেল হক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরমানুল হক।

২০১০ সালে সার্কভুক্ত দেশগুলোর (সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কোঅপারেশন) মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। নয়াদিল্লির চাণক্যপুরীতে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্কভুক্ত দেশের শিক্ষার্থীরা স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগ্রামে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে যান।

এর আগে গত ১৩ অক্টোবর থেকে শিক্ষার্থীরা মেধা বৃত্তি বৃদ্ধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার কাজে প্রতিনিধিত্বের জন্য আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় গত ৪ নভেম্বর শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাংলাদেশের এক শিক্ষার্থীসহ পাঁচজনকে বহিষ্কার করে।

পরে শিক্ষার্থীরা বহিষ্কৃতদের পুনর্বহালসহ বৃত্তির পরিমাণ বাড়ানো এবং নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে গত ১৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছিলেন, স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের মাসিক ৭ হাজার রুপি স্টাইপেন্ড ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের ভাতার ক্ষেত্রে ভারতের জেআরএফ (জুনিয়র রিসার্চ ফেলো)- প্রক্রিয়া অনুসরণ করার দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স শিক্ষার্থীরা দুটি ক্যাটাগড়িতে যথাক্রমে ৫০০০ ও ৭০০০ হাজার রুপি স্টাইপেন্ড পেয়ে থাকে। আর পিএইচডি শিক্ষার্থীদের মাসিক ভাতা দেওয়া হয় ২৫ হাজার রুপি।

এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি, মাস্টার্সের অধ্যয়নরত বিদেশি সব শিক্ষার্থীকে ৭০০০ রুপি বৃত্তি দিতে হবে। আর পিএচডি শিক্ষার্থীদেরকে জেআরএফ অর্থাৎ মাসিক ৩১০০০ রুপির পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিতে হবে।

এদিকে আন্দোলনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশের বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী সুদীপ্ত দাস। ২০২১ সালে অর্থনীতি বিভাগে পিএইচডিতে ভর্তি হন এ শিক্ষার্থী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের এ স্বতঃস্ফুর্ত আন্দোলন দীর্ঘদিন চলার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে প্রশাসনের পক্ষে বারবার এ বিষয়ে আলোচনা করার কথা বলা হলেও এর কোনো প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।

”আমাকে কোনো শোকজ ছাড়াই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এমনকি আমাকে হোস্টেল থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। আমার পরিবারকেও এ বিষয়ে নোটিস পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।”

তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে বলে জানান এ শিক্ষার্থী। অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির দিয়ে লাগাতার আন্দোলনের মধ্যেই তারা আছেন বলে শিক্ষার্থীদের ভাষ্য।