“ঘটনাস্থলে উপস্থিত এবং ষড়যন্ত্রের শিকার বিডিআর সদস্যদের পিলখানা হত্যায় গঠিত তদন্ত কমিশনে যুক্ত করতে হবে।”
Published : 19 Jan 2025, 11:35 PM
প্রায় দেড় দশক আগের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলার রায় বাতিল করে আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে কারাবন্দি বিডিআর সদস্যদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহিন সরকার।
রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে মোট ছয়টি দাবি তুলে ধরেন তিনি।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা।
ক্ষমতার পালাবদলে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পুনঃতদন্তের দাবি জোরাল হয়।
২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধানের দায়িত্ব দিয়ে কমিশন গঠন করে ৯০ দিন সময় বেঁধে দিয়েছে সরকার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মাহিন সরকার বাকি পাঁচ দাবি সম্পর্কে বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত এবং ষড়যন্ত্রের শিকার বিডিআর সদস্যদের পিলখানা হত্যাকাণ্ডে গঠিত তদন্ত কমিশনে যুক্ত করতে হবে।
“জেলে মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মাহিন বলেন, “জুলাই-অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করা বিজিবির নাম পরিবর্তন করে বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনতে হবে।
“জাতীয় দিবস চালু করতে হবে পিলখানার ভেতরে ও বাইরে সব শহীদের স্মরণে।”
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রোববার বিস্ফোরক আইনের মামলায় মুক্তি পান দুই শতাধিক আসামি।
এই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে কাজ করা আইনজীবী পারভেজ হোসেন বলেন, “আজ যারা মুক্তি পেয়েছেন, তাদের মুক্তির মাধ্যমে বিডিআর বিদ্রোহের বিচারের বন্ধ থাকা দরজা খুলতে পেরেছি।”
সংবাদ সম্মেলনে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় কারাগারে থাকা বিডিআর সদস্যদের কয়েকজন স্বজনও উপস্থিত ছিলেন।
পিলখানার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাই কোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন।
হাই কোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন।
অন্যদিকে হাই কোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।
অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলার বিচার চলছে কেরাণীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে।