“প্রশাসনের কেউ শিক্ষার্থীদের সাথে বিদ্বেষমূলক ও অন্যায় আচরণ করলে আমরা ক্যাম্পাস থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে দেব,” বলেন এক শিক্ষার্থী।
Published : 06 Oct 2024, 02:14 PM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দুই দশক হতে চললেও অতীতে দায়িত্বশীলরা শিক্ষালয়টির উন্নয়নে ভূমিকা রাখেনি বলে দাবি করেছেন এক অধ্যাপক।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান রইছ উদদীন বলেছেন, “১৯ বছর পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণের ভাবনা আসলো কেন? তার মূল কারণ হলো, অতীতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ নিজেদেরকে জমিদার ভাবতো, আর বাকিদের প্রজা ভাবতো।”
রোববার দুপুরে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণ ভাবনা' শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছিলেন অধ্যাপক রইছ।
নিজের কর্মস্থলের অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি উপাচার্য অফিসে নির্দিষ্ট কিছু মানুষ সিন্ডিকেট পরিচালনা করতো। আমরা দেখেছি একটি দলের স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের স্বার্থের জন্য সবকিছু করেছে, কেবল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নটুকু করে নাই। এজন্যই এখন এই বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণের ভাবনা আসছে।”
এতোদিন যারা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে লিপ্ত ছিল তাদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “অতীতে যাদের দ্বারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্য হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে ভবিষ্যতে আমাদের দ্বারা বৈষম্য পুনরায় উদ্ভব হতে পারে। তাই ভবিষ্যতের বৈষম্য দূর করার জন্য অতীতে যারা বৈষম্য সৃষ্টি করেছে, তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শাস্তি নিশ্চিত করতে চাই।
“এক্ষেত্রেও আমরা বৈষম্য করতে চাই না, যারা প্রকৃত দোষী তারাই শাস্তি পাক। তাই আমরা সবাই দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে কীভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের তরফে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসাইন বলেন, “বন্দুকের নলের মুখে দাঁড়িয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশে নতুন ক্যাম্পাস পেয়েছি। চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা দায়িত্বরত যেই হোন না কেন, শিক্ষার্থীদের সাথে বিদ্বেষমূলক ও অন্যায় আচরণ করলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে দেব।“
ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাছির আহমদ বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী কারও জন্যেই নির্দিষ্ট বাসস্থান নেই, আমাদের ১৩টি হল আছে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যান্টিন উন্নতকরণ, ক্যাম্পাসকে মাদকমুক্ত করা এবং দ্রুত নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের দিকে নজর দিতে চাই। আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি সমস্যাকে চিহ্নিত করতে চাই এবং ধরে ধরে সমাধান করতে চাই।”
মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ইমরানুল হক বলেন, “আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের দিকটা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
“আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে চেষ্টা করলে এই ক্যাম্পাসকে শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের মধ্যে একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে করতে পারব।'
ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমদ বলেন, “আমাদের কর্মকাণ্ড থাকবে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে ভাববে বিশ্ববিদ্যালয়; আর ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ভাবব আমরা।
“আমাদের মূল ক্যাম্পাস আমাদেরই থাকবে, এখানে আমরা হল করতে পারি। আর নতুন ক্যাম্পাসে অ্যাকাডেমিক ভবনগুলো নির্মাণ করা যেতে পারে। আমাদের কেনা জায়গায় প্রয়োজন হলে টিনশেডের স্থাপনা করে ছাত্র-ছাত্রীদের থাকার জায়গা করে দিতে পারি।”