ফ্রিল্যান্সার, সফটওয়্যার রপ্তানি, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদেশ থেকে আসা পরামর্শক ফি, গবেষণা ফি, ব্যবসা সেবা থেকে যে অর্থ বিদেশ থেকে রেমিটেন্স হিসেবে আসে, সেটির একটি অংশ এখন বিদেশে খরচ করার সুযোগ দিতে পারবে নন-এডি ব্যাংক শাখাও।
এতে ইআরকিউ হিসাবের মাধ্যমে রেমিট্যান্স হিসেবে আসা বৈদেশিক মুদ্রার একটি অংশ ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিদেশে সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যয় করার ব্যবস্থা সহজ হল।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার দিয়ে বলছে, নন-এডি ব্যাংক শাখা নিকটস্থ কোনো বৈদেশিক বাণিজ্য পরিচালনা ব্যাংকের এডি শাখা বা প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে হিসাব খোলার মাধ্যমে ইআরকিউ হিসাব পরিচালনা করতে পারবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র ও পরিচালক সরোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘ইআরকিউ হিসাবের মাধ্যমে বিদেশি রপ্তানি আয়ের একটি অংশ সংশ্লিষ্ট কাজে বিদেশে খরচ করার সুযোগ আগে থেকেই ছিল। এখন নন-এডিশাখায়ও ইআরকিউ হিসাব পরিচালনা করার সুযোগ দেওয়া হল।’’
ইআরকিউ (এক্সপোর্টারস রিটেনশন কোটা) বা রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন হচ্ছে, রপ্তানি আয় দেশে আসার পর তার একটি অংশ আবার বিদেশে নিয়ে ব্যবসার উন্নয়নসহ অফিস পরিচালনা করতে খরচ করার সুযোগ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন এ সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক কার্ড, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড, প্রিপেইড কার্ড ইস্যু ও অনলাইন পদ্ধতিতে ব্যয় করার সুযোগের পরিসর বাড়ল।
একইসঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক সেবাদাতা এমএফএস কোম্পানিগুলো এ সুবিধা দিতে পারবে বলে সার্কুলারে বলা হয়েছে।
পণ্য ও সেবা রপ্তানি ভেদে ইআরকিউ হিসাবে রপ্তানি আয়ের মোট অংশের ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত রেখে পরে তা বিদেশে নেওয়া যায়।
ফ্রিল্যান্সার, সফটওয়্যার রপ্তানি, আইসিটি, বিদেশ থেকে আসা পরামর্শক ফি, গবেষণা ফি বাবদ আসা অর্থের মধ্যে প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ অর্থ বিদেশে নিতে পারবেন। এটি পুঁজি আকারে নেওয়ার সুযোগ নেই। শুধু পণ্য বা সেবা কেনার ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যাবে এ অর্থ।
এ অর্থ বিদেশে নিতে হলে দেশি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিশ্বের স্বীকৃত কোনো অর্থপরিশোধকারী সংস্থা, ব্যাংক বা পেমেন্ট গেটওয়ের সঙ্গে হিসাব থাকতে হয়।
গ্রাহকদের চাহিদার বিপরীতে সেবা দিতে সফটওয়্যার কোম্পানি ও ফ্রিল্যান্সারদের নিয়মিত বিভিন্ন সফটওয়্যার কিনতে হয়।এজন্য তাদের ডলার কিনে অর্থ পরিশোধ করতে হয়। এতে বিনিময় হারে তাদের লোকসান হচ্ছিল। তারা বৈদেশিক মুদ্রা আয় করলেও অর্থ পরিশোধে তা ব্যবহার করতে পারছিল না।
সেই মুদ্রা খরচ করার সুযোগ চেয়ে তাদের দাবির মুখে স্বল্প আকারে তাদের ইআরকিউ হিসাব পরিচালনা করার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
অনেক ব্যাংক সেই নির্দেশনা মানছে না। ব্যাংকগুলোকে আবার বিষয়টি মনে করিয়ে দিতে এ ‘সার্কুলার লেটার’ পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অপরদিকে নতুন অনুমোদন পাওয়া কয়েকটি ব্যাংক এখনও এডি শাখার সুবিধা নিতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে।
ইআরকিউ হিসাব আরও সহজে পরিচালনা করতে এসব বিষয়কে বিবেচনায় রেখে নন-এডি শাখাকেও এ সুযোগ দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।