“সব দিক বিবেচনায় বলতে পারি- আমাদের দেশে আপনার বিনিয়োগ হবে নিরাপদ, আকর্ষণীয় ও সাশ্রয়ী।”
Published : 12 Mar 2023, 11:03 PM
বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে যেসব দিক দিয়ে লাভবান হবেন তা বিনিয়োগ সম্মেলনে তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে শ্রম মজুরিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় ৪৭ থেকে ৮৪ শতাংশ সাশ্রয় হবে। আর ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক পর্যায়ের কর্মরতদের বেতনে সাশ্রয় থাকবে ৪১ থেকে ৬৯ শতাংশ।
“এছাড়া ৬ থেকে ৮৯ শতাংশ পানিতে, বিদ্যুতে ১০ থেকে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয় হবে, যা অন্য দেশের তুলনায় বেশি মুনাফা দিতে পারবে।”
ঢাকায় এফবিসিসিআই আয়োজিত তিন দিনের ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট ২০২৩’ এর দ্বিতীয় দিন রোববার ‘বাংলাদেশ: হান্ড্রেড বিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজি ইন কি সেক্টসর ফর ইনভেস্টরস টু লিভারেজ’ শীর্ষক অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকার আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনে সালমান রহমান বলেন, “অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে নানা খাতে সুবিধা রয়েছে। এখানে বিনিয়োগ করলে শুধু সাশ্রয় আর সাশ্রয়। দ্বৈত কর পরিহার সুবিধা রয়েছে দেশে, তাই আপনার ট্রেন মিস কইরেন না।”
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সরকার দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করছে। কম খরচে পানি, তুলনামূলক সহজলভ্য ও সস্তা শ্রমবাজার, কম দামের বিদ্যুৎ এবং যাতায়াত ব্যবস্থা অন্যান্য যেকোনো দেশের তুলনায় ভালো।
“সব দিক বিবেচনায় বলতে পারি- আমাদের দেশে আপনার বিনিয়োগ হবে নিরাপদ, আকর্ষণীয় ও সাশ্রয়ী।”
জ্বালানি নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, “জ্বালানি সংকট বর্তমান সময়ে সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ সংকট কাটাতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, কাতারসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানি কেনার জন্য চুক্তি করতে আলোচনা করছে বাংলাদেশ।”
সেমিনারে জাপানি কোম্পানি মারুবেনি করপোরেশনের আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকেশি মামিইয়া বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বেসরকারি খাত আগ্রাসী হয়ে বিনিয়োগ করছে। বাংলাদেশে প্রযুক্তি খাতে যথেষ্ট বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
“বাংলাদেশ ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছে। এখানে প্রযুক্তি লাগবেই। সম্ভাবনাময় এ খাত সম্পর্কে বিদেশিদের জানাতে হবে।”
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ যে সম্ভাবনাময় তা উঠে আসে কোরিয়া ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন অথোরিটির মহাপরিচালক জং ওন কিমের কথায়।
তিনি বলেন, আগামীতে ঢাকার পাশাপাশি খুলনায় বিনিয়োগের বড় সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বিত নীতিমালা হলে বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে পারবে।
বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘ বন্ধুত্বের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলের প্রতিমন্ত্রী অ্যানে মেরি ট্রেভেলাইন বলেন, “বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা, আর্থিক খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। সামনের দিনে বাংলাদেশ পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে যেতে পারবে।”
তৈরি পোশাকের প্রধান কাঁচামাল ম্যানমেইড ফাইবারের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে উল্লেখ করে হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ বলেন, “ক্রেতারা ম্যানমেইড ফাইবার পণ্য চায়। সম্ভাবনমায় এ খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।”
হালাল পণ্যের সনদ দেওয়ার পথে বাংলাদেশ রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, “এ খাতেও বিনিয়োগ করতে পারেন বিদেশিরা।”
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “বিশ্বের সবচেয়ে পরিষ্কার ও সবুজ কারখানাটিও আমাদের দেশে রয়েছে। এ নিরাপদ কর্মপরিবেশ বেছে নিতে পারেন আপনারা।”