নিত্যপণ্যের দাম ‘যৌক্তিক পর্যায়ে’ চলে আসবে, আশা টিটুর

“প্রাইস ডিসকভারিটা হুট করে হয় না। আমাদের দায়িত্ব হবে উৎপাদক পর্যায়ে থেকে পাইকারি এবং পরে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত বাজার মনিটর করা।”

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 March 2024, 12:40 PM
Updated : 17 March 2024, 12:40 PM

নিত্যপণ্যের দাম ‘যৌক্তিক পর্যায়ে’ রাখতে সাড়ে পাঁচ বছর আগে যে কৃষি বিপণন আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

তিনি বলেছেন, “একটা জিনিস আপনি যখন যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করবেন, সঙ্গে সঙ্গে এটি বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। আগে এটা (যৌক্তিক মূল্য) নির্ধারণ করা জরুরি ছিল। অনেকদিন ধরে আইনটা ছিল, কিন্তু (বাস্তবায়ন) করা হয়নি।

“আমরা এখন সমন্বিতভাবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিদপ্তর, ইউএনও, ডিসি সবাই মিলে সমন্বয় করব। আশা করি, এটা একটা যৌক্তিক পর্যায়ে চলে আসবে।”

বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার টিসিবি ভবনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন টিটু।

কৃষক, উৎপাদক, কৃষি ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের সহায়ক হিসেবে এবং কৃষি বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদে কৃষি বিপণন বিল পাস করা হয়। পরে ১ অক্টোবর গেজেট হলে তা আইনে রূপ পায়।

তবে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় আইনটি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছিল না। সাড়ে তিন বছরের মাথায় ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর ‘কৃষি বিপণন বিধিমালা’ প্রণয়ন করে কৃষি মন্ত্রণালয়।

অবশ্য তার আগের বছর থেকে কৃষিপণ্যের ‘যৌক্তিক মূল্য’ প্রকাশ করে আসছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই তালিকায় পাইকারি দরের তথ্য দেওয়া হয় । যদিও বাস্তবে যৌক্তিক মূল্য বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার।

কৃষি বিপণন বিধিমালা ২০২১ অনুযায়ী- উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে পণ্যভেদে মুনাফার সর্বোচ্চ হার বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী সবশেষ ১৫ মার্চ গরুর মাংসসহ ২৯টি পণ্যের যৌক্তিক দাম প্রকাশ করেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর; যদিও বাজারে তা মানা হয় না।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী টিটু বলেন, “কৃষি বিপণন অধিদপ্তর পণ্যের একটা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। এই অধিদপ্তরের নিজস্ব জেলা, উপজেলা এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কমিটি আছে। আমরা যেহেতু বাজার মনিটরিং করি, আমরা সমন্বয় করে মনিটরিং শুরু করব।”

তবে কৃষি বিপণন আইন বাস্তবায়নে কত সময় লাগবে তা স্পষ্ট করেননি প্রতিমন্ত্রী।

তার ভাষ্য, “প্রাইস ডিসকভারিটা হুট করে হয় না। আমাদের দায়িত্ব হবে উৎপাদক পর্যায়ে থেকে পাইকারি এবং পরে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত বাজার মনিটর করা।”

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, “আমরা যেখানে যাচ্ছি- বাজার কমিটিকে নিয়ে বসছি, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসছি, তাদেরকে এনকারেজ করতেছি। তাদের সমস্যার সমাধান করে এটা আমরা বাস্তবায়ন করতেছি। আমরা কোনো জায়গায় কোনো দোকান বন্ধ করে দিচ্ছি না বা তালাবদ্ধ করে দিচ্ছি না।

“যারা একেবারেই আইন মানছেন না, যেমন- পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে যখন বিক্রি করতে হবে, তখন আপনাকে রশিদ রাখতে হবে। আপনি যখন পাইকারি চালান করবেন, তখন আপনাকে রশিদ দিতে হবে। এই জিনিসগুলো না করলে আমরা শাস্তির আওতায় আনছি।”

টিসিবি চত্বরে সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর টিসিবি অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা হয়।  

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।