Published : 27 Mar 2025, 06:13 PM
বিদ্যুৎ সংযোগ ও ফাইবার কেবল কেটে দেওয়ায় গত তিন মাসে দেশের পার্বত্য অঞ্চলে নিজেদের অর্ধশতাধিক টাওয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছে মোবাইল ফোন অপারেটর- রবি।
কোম্পানিটি বলছে, এ ধরনের কার্যকলাপে ‘চাঁদাবাজির উদ্দেশ্য’ রয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রবি বলেছে, গত তিন মাসে বিভিন্ন স্থানে দুর্বৃত্তরা রবির মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ফাইবার কেবল কেটে ফেলেছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় অর্ধশত টাওয়ার।
“এমনকি অপরাধী চক্র কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মীকে অপহরণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে টাওয়ারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না টাওয়ার কোম্পানি ইডটকো বাংলাদেশ লিমিটেড।”
রবি বলছে, বিদ্যুৎ সংযোগ কিংবা ফাইবার কেটে ফেলার ঘটনাগুলো ঘটেছে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, লক্ষ্মীছড়ি, পানিছড়ি, দিঘীনালা, মানিকছড়ি, নানিয়ার চড়, রাওজান, ফটিকছড়ি, বাঘাইছড়িসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায়।
“প্রায় তিন মাস ধরে চলতে থাকা এ ধরনের কার্যকলাপের পেছনে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্য রয়েছে বলে জানা গেছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খাগড়াছড়িতেই ৩২টি টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে সাতটি সচল করা সম্ভব হয়েছে।
“এছাড়া পার্বত্য তিন জেলার সরকারি সংস্থা বিটিসিএলের অন্তত ২৬টি টাওয়ারের ফাইবার কেটে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা। কোথাও কোথাও দেখা গেছে, ফাইবারগুলো ঠিক করার ওই দিনই তা আবার কেটে দেওয়া হয়েছে।”
রবি বলছে, মোবাইল ও ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়ছেন স্থানীয়রা। সেখানে পণ্য পরিবহন ও ব্যবসা-বাণিজ্যও মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। সবমিলিয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে পার্বত্য তিন জেলা।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে কাজ করছে। তবে এখনও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থান থেকে টাওয়ারের তিন নিরাপত্তাকর্মী অপহৃত হয়েছেন। অপরিচিত নম্বর থেকে রবির কর্মীদের নানা হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
“এমন স্পর্শকতার পরিস্থিতিতে টাওয়ার পুনরুদ্ধার কাজেও কোনো অগ্রগতি নেই। ইডটকো সাইটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকলেও তা ঠিকভাবে পালন করতে পারছে না তারা। এতে আরও বেশি রাজস্ব হারানোর শঙ্কায় পড়েছে রবি।”
রবি বলছে, “ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, ইডটকোর নিরাপত্তা দল ও স্থানীয় প্রশাসন সমস্যাটি সমাধানে কাজ করছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকটির লক্ষ্য ছিল সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্যা সমাধান করা।
"আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় ইডটকো কিছু টাওয়ার পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হলেও দুর্বৃত্তদের আক্রমণে পুনরায় সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইডটকো ইতোমধ্যে বিটিআরসিকে চিঠির মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়েছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইডটকো, রবি ও সংশ্লিষ্ট অন্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সম্প্রতি এ বিষয়ে ডিজিএফআই কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এছাড়া ইডটকো ও রবি টিম প্রতিদিন যৌথভাবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে।
এ বিষয়ে রাঙামাটির পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন বলেন, রবি তাদের কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ জানায়নি।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, "রবি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমরা খবর পেয়ে থানা ও ফাঁড়ির আশপাশের টাওয়ারগুলোর নিরাপত্তার বিষয়ে তাদের কিছু গাইডলাইন দিয়েছি।"