বীমা খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকায় কোম্পানিগুলো গ্রাহকের টাকা দিতে পারছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “দাবি পূরণ না হলে জনমনে হতাশা তৈরি হয়।”
Published : 11 Mar 2025, 04:33 PM
সাধারণ ও জীবন বীমা উভয় খাতেই বীমা সংগ্রহে এক ধরনের অসম প্রতিযোগিতা হচ্ছে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন, বিআইএ সভাপতি সাঈদ আহমদ।
এই প্রতিযোগিতা বন্ধে নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে পুঁজিবাজারভিত্তিক সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম, সিএমজেএফ কার্যালয়ে ‘সিএমজেএফ টক’ এ বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।
১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিআইএতে কখনো নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব তৈরি হয়নি। গত ফেব্রুয়ারি প্রথমবার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
সেই নির্বাচনে বিআইএ সভাপতি হওয়া গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সাঈদ আহমদ বলেন, “বীমা খাতে কোনো দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। নিজে দুর্নীতি করব না, অন্যকে দুর্নীতি করতে দেব না।”
সাধারণ ও জীবন বীমা মিলিয়ে দেশে বীমা গ্রাহকের মোট সংখ্যা এক কোটি ৮৯ লাখ মাত্র। জিডিপিতে এই খাতের অবদান শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।
বীমা খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকায় কোম্পানিগুলো গ্রাহকের টাকা দিতে পারছে না মন্তব্য করে সাঈদ আহমদ বলেন, “দাবি পূরণ না হলে জনমনে হতাশা তৈরি হয়।”
গ্রাহকের টাকা নিয়ে অনেক বীমা কোম্পানির পরিচালক দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। কয়েকটি কোম্পানিতে বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে। এতে বীমা খাতের ওপর মানুষের আস্থা কমেছে।
সেই আস্থা ফেরাতে বিআইএ কাজ করবে মন্তব্য করে সাঈদ আহমদ বলেন, “জনগণের আস্থা বৃদ্ধিতে সকলের সহযোগিতা চাই। অনিয়ম লুটপাট যারা করেছে তাদের শাস্তি হতে হবে।”
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সব কোম্পানির গ্রাহকদের পলিসি সংক্রান্ত তথ্য নিয়মিত দেয়। এই কাজটি বীমা কোম্পানিগুলোও করে। এতে গ্রাহকের একই তথ্য পেতে দুই বার মাশুল গুনতে হচ্ছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই কার্যক্রমটি বন্ধ করতে বিআইএ উদ্যোগ নেবে জানিয়ে তিনি বলেন, “গ্রাহকের তথ্য সংরক্ষণ করার দায়িত্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থার। সেই তথ্য সরংক্ষণ ও ব্যবহারে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকেও সার্ভিস ফি দিতে হচ্ছে। এটি দিতে আমরা রাজি না, এটি নিয়ে আমরা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়াম্যানের সঙ্গে বৈঠক করব।”
ব্যক্তি জীবন, ভবন ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য বীমার কোনো বিকল্প নেই। সরকারি ভবনসহ সব ধরনের অবকাঠামো বীমার আওতায় আনতে আইন করার সুপারিশ করেন বিআইএ সভাপতি।
এতে বীমার পরিধি বাড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দেশের অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আমাদেরে দেশের বীমা খাত বৃদ্ধি পাচ্ছে না। বাংলাদেশের বীমা খাতের এক অসাধারণ পরিবর্তনের সাক্ষী আমরা।”
চাকরির ক্ষেত্রে সুবিধা নিশ্চিতসহ আর্থিক সুবিধা বাড়ানো ও নতুনদের বীমা পেশায় আগ্রহী করে তুলেতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে বীমা অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেন তিনি।