মিশর থেকে ভাড়ায় আনা ২ বোয়িং চালিয়ে বিমানের ১১শ’ কোটি টাকা ক্ষতি

মিশর থেকে ভাড়ায় আনা দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজের পেছনে পাঁচ বছরে বাংলাদেশ বিমানের নিট ক্ষতি হয়েছে ১১শ কোটি টাকা।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2020, 11:55 AM
Updated : 4 Oct 2020, 11:56 AM

রোববার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গত মাসে কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে জানানো হয়, এই উড়োজাহাজ দুটি চালিয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২২শ কোটি টাকা আর ওই দুটির পেছনে খরচ হয়েছিল ৩৩শ কোটি টাকা।

ওই দুটি উড়োজাহাজের জন্য প্রতিমাসে বিমান ১১ কোটি টাকা করে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল। সেই দায় থেকে গত মার্চ মাস হতে বিমান মুক্ত হতে পেরেছে।

বৈঠকে বিমান মন্ত্রাণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মহিবুল হক বলেন, বিমান এই লিজ সংস্কৃতি থেকে একেবারে বেরিয়ে আসতে চাইছে। এ বছরে নতুন ৩টি ড্যাশ-৮ বিমান আসার কথা ছিল। তার মধ্যে দুটি এ বছরের মধ্যে বিমান বহরে যুক্ত হবে, একটি আগামী জানুয়ারিতে বিমান বহরে যুক্ত হবে বলে আশা করা যায়। এ বিমানগুলো ২৪ মিলিয়ন ডলার দিয়ে কেনা হয়েছে।

ওই বৈঠকে কমিটির সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার বলেন, বিমানের লিজ প্রক্রিয়াটা তার কাছে স্পষ্ট নয়। এই প্রক্রিয়ার সময় বিষয়টা নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা করার প্রয়োজন ছিল বলে তিনি মনে করেন।

গত দশম সংসদের বিমান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি এই বিমান দুটি লিজ নেওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।

পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআরিউড়োজাহাজ দুটি লিজ নেয় বিমান। এর একটি বিমানের বহরে যুক্ত হয় ২০১৪ সালের মার্চে এবং অন্যটি একই বছরের মে মাসে।

এক বছরের কম সময় অর্থাৎ ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন।

দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে আবারও ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। গত ডিসেম্বরে নষ্ট হয়ে যায় ভাড়ায় আনা ইঞ্জিনও। পরে ইঞ্জিন মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। তবে কোন সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। সে কারণে লিজ নেয়া প্রতিষ্ঠান ও মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান উভয়কেই অর্থ দিতে হয় বিমানকে।

বৈঠকে জানানো হয়, গত জুলাই মাসে বিমান ১৮৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে। তার আগের মাসে আয় ছিল ১৬৯ কোটি টাকার মতো।

কোভিড-১৯ মহামারীরকে বিমান কোনো কর্মাচারী ছাঁটাই করেনি। তবে বেতন কিছুটা কাট-ছাঁট করেছে।

বৈঠকে জানানো হয়, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বিমান সরকারের কাছ থেকে এক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল, যার মধ্যে ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, বাকি টাকা খরচ হবে না।