সোনার দাম কমল

বাড়তে বাড়তে চূড়ায় ওঠার পর সোনার দাম কমেছে।

আবদুর রহিম হারমাছি প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2020, 06:18 PM
Updated : 12 August 2020, 06:43 PM

বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বাজারে সব ধরনের সোনা ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা কমে বিক্রি হবে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি-বাজুস।

আন্তর্জাতিক বাজারে দর কিছুটা নিম্নমুখী হওয়ায় স্থানীয় বাজারে দর কমানোর ইঙ্গিত একদিন আগেই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দিয়েছিলেন বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।

বুধবার তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার পর তিনি বিডিনিউজ টোয়ন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত তিন-চার দিন আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম খুব উঠা-নামা করছে। একবার কমছে, তো আবার বাড়ছে। একেবারেই অস্থির হয়ে উঠেছে বাজার।

“আমরা এই করোনাভাইরাস মহামারীকালে আমাদের ক্রেতাদের ধরে রাখতেই এবার গোল্ডের দাম কমিয়েছি। এখানে আমরা আমাদের লাভ-ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে ক্রেতাদের বাজারমুখী করতে দাম কমিয়েছি।”  

বৃহস্পতিবার থেকে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার গহনা ৭৩ হাজার ৭১৬ টাকায় বিক্রি হবে। এছাড়া ২১ ক্যারেটের গহনা কিনতে লাগবে ৭০ হাজার ৫৬৭ টাকা। ১৮ ক্যারেটের সোনার অলংকারের জন্য লাগবে ৬১ হাজার ৮১৯ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার গহনা কিনতে ৫১ হাজার ৪৯৭ টাকা লাগবে।

বুধবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা ৭৭ হাজার ২১৬ টাকা, ২১ ক্যারেট ৭৪ হাজার ৬৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৬৫ হাজার ৩১৯ টাকায় এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা বিক্রি হয়েছে ৫৪ হাজার ৯৯৬ টাকায়।

বাজুসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বৈশ্বিক স্থবিরতা, ডলার ও তেলের দরপতন, আন্তর্জাতিক স্বর্ণবাজারে নজিরবিহীন উত্থান-পতন সত্বেও দেশীয় স্বর্ণ বাজারের মন্দাভাব ও ভোক্তা সাধারণের কথা চিন্তা করে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও সোনার দাম কমানো হয়েছে।”

কোভিড-১৯ মহামারীতে অর্থনীতিতে স্থবিরতার মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের বাজারেও সোনার দাম বাড়তে থাকে লাফিয়ে লাফিয়ে।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ২২ ক্যারেটের সোনার ভরি ছিল ৫৮ হাজার ২৮ টাকা। তারপর এপ্রিল ও মে ছাড়া প্রত্যেক মাসেই দাম বেড়েছে। মাঝে ফেব্রুয়ারিতে একবার কমেছিল। সবমিলিয়ে সাত মাসে সোনার দাম ভরিতে ১৯ হাজার ১৮৮ টাকা বাড়ে।

গত ৫ অগাস্ট প্রতি ভরিতে চার হাজার ৪৩২ টাকা বাড়ানোয় সবচেয়ে ভালো মানের সোনার দাম ৭৭ হাজার ২১৬ টাকায় উঠেছিল।

এই অব স্থায় সোনার দোকানগুলোতে বিক্রি প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসে।

ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের কর্ণধার আগরওয়ালা বলেন, “একেবারে ক্রেতা শূণ্য হয়ে গিয়েছিল জুয়েলারি দোকানগুলো। উল্টো পুরনো গহনা বিক্রি করতে ভিড় বেড়ে গিয়েছিল।

“প্রতিবার আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়া-কমার সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয় বাজারে দাম বাড়াতাম-কমাতাম। এবার দাম কমানোর পেছনে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে ক্রেতাদের ধরে রাখার বিষয়টিকেও বিবেচনা করা হয়েছে।”

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার এখন একটু নিম্নমুখী। তবে অস্থির।

“গত ১০ জুলাই প্রতি আউন্সের (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম, ২.৬৫ ভরি) দাম ২০২৭ ডলারে উঠেছিল। ১১ জুলাই ১৯১০ ডলারে নেমে আসে। বুধবার রাত ১০টায় তা আবার ১৯৪৬ ডলারে উঠে যায়। প্রতি ঘণ্টায় দর এমন উঠা-নামা করছে।”

“মহামারীর এই পাঁচ মাসে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আরও ক্ষতি দিয়ে হলেও আমরা ক্রেতা হারাতে চাই না। তাদের ধরে রাখতে চাই। সে কারণেই বিশ্ববজারে উত্থান-পতনের মধ্যেই আমরা কমিয়েছি,” বলেন আগাওয়ালা।