হিরো আনল নতুন ৩টি মোটর বাইক

বাংলাদেশের বাজারে নতুন তিনটি মডেলের মোটর বাইক এনেছে হিরো।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2019, 01:19 PM
Updated : 9 April 2019, 01:21 PM

স্কুটার প্যাশন এক্সপ্রো, স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট প্লাস মডেলের স্কুটার এবং মায়েস্ত্রো এইজ মডেলের মোটর সাইকেল আগামী ১০ এপ্রিল থেকে বাজারে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে হিরো মোটোকর্প।

তারা বলছে, “১১০ সিসি মোটরসাইকেলের বাজারে হিরোর অবস্থান জোরদার করতে অবদান রাখবে প্যাশন এক্সপ্রো এবং স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট প্লাসের। অন্য দিকে ১১০ সিসি মায়েস্ত্রো এইজের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশের স্কুটার বাজারে কোম্পানির অবস্থান শক্ত করা।”

প্যাশন এক্সপ্রোর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৯৯০ টাকা, স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট প্লাসের দাম ১ লাখ ১ হাজার ৯৯০ টাকা এবং মায়েস্ত্রো এইজের দাম ১ লাখ ২৯ হাজার ৯৯০ টাকা।

উত্তর ভারতের জয়পুরে হিরো মোটোকর্পের গবেষণা সংস্থা 'সেন্টার ফর ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি'-তে (সিআইটি) এই তিনটি মডেলেরই নকশা প্রস্তুতিসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়।

হিরো মোটরকর্পের গ্লোবাল বিজনেস, স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পারফর্মেন্স ট্রান্সফরমেশন বিভাগের প্রধান জনাব রজত ভার্গব বলেন, “বিশ্ববাজারের জন্য বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের কাছে। এ দেশের বাজারে মোটরসাইকেল আর স্কুটারের চাহিদা যে হারে বেড়ে চলেছে, তার সাথে তাল মেলাতে আমরা এখানে একটি বিশ্বমানের উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরি করেছি।”

প্যাশন এক্সপ্রো

প্যাশন এক্সপ্রোতে রয়েছে ১১০ সিসি টিওডি ইঞ্জিন, যেটি ৭ কিলোওয়াটের সর্বোচ্চ পাওয়ার উৎপাদন করতে পারে, দিতে পারে ৫,৫৫০ আরপিএম-এ ৯ নিউটন-মিটার টর্ক। মাত্র ৭.৪৫ সেকেন্ডেই শূন্য থেকে ৬০ কিমি গতিবেগ অর্জন করতে পারে বাইকটি।

এই মোটরসাইকেলে হিরো'র আইথ্রিএস (আইডেল-স্টপ-স্টার্ট) সিস্টেমও আছে, যা জ্বালানি বাঁচাবে জ্যামে।

এ বাইকে আছে শক্তিশালী আবরণের ফুয়েল ট্যাংক, ডুয়াল টোন কালার স্কিম; সেইসাথে আধুনিক, হালকা ও সেরা গুণগত মানের এলইডি টেইল ল্যাম্প।

নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এ মোটরসাইকেলে রয়েছে ডিজিয়াল-অ্যানালগ মিটার, ডিজিটাল ফুয়েল গেজ, ট্রিপ মিটার, অলটাইম হেডল্যাম্প অন (এএইচও), ফ্রন্ট ডিস্ক ব্রেক, টিউবলেস টায়ার এবং সাইড স্ট্যান্ড ইনডিকেটর।

কালোর মাঝে লাল ডোরা, টেকনো ব্লু মেটালিক এবং স্পোর্টস রেড- এ তিন রঙে বাইকটি পাওয়া যাচ্ছে।

মায়েস্ত্রো এইজ

হিরো মায়েস্ত্রো এইজের রয়েছে ১১০ সিসি এয়ারকুলড ফোর-স্ট্রোক সিংগেল সিলিন্ডার ওএইচসি ইঞ্জিন, যা ৬ কিলোওয়াটের সর্বোচ্চ পাওয়ার উৎপাদন করতে পারে, আর দিতে পারে ৭,৫০০ আরপিএম-এ ৮.৯ নিউটন-মিটার টর্ক।

স্টাইলিশ এই স্কুটারের আছে মোবাইল চার্জিং পোর্ট আর বুট ল্যাম্প, এক্সটারনাল ফুয়েল ফিলিং, ইন্টিগ্রেটেড ব্রেকিং, রিমোট সিট এবং ফুয়েল লিড ওপেনিং, ডিজি-অ্যানালগ স্পিডোমিটার। সঙ্গে থাকছে সাইড স্ট্যান্ড ও সার্ভিস ডিউ ইনডিকেটর এবং টুইন এলইডি টেইল ল্যাম্প।

হিরো মায়েস্ত্রো এজ আসছে দুটো রঙে- ক্যান্ডি ব্লেজিং রেড এবং ম্যাট ব্লু।

স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট প্লাস

স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট প্লাস মডেলের মোটর সাইকেলে শক্তিশালী কমিউটারের সঙ্গে আছে নতুন এয়ারকুলড ফোর স্ট্রোক সিঙ্গেল সিলিন্ডার ওএইচসি ১১০ সিসি টিওডি ইঞ্জিন। রয়েছে কার্যকরী আইথ্রিএস প্রযুক্তি।

নির্ঝঞ্ঝাটভাবে চালানোর উপযোগী করে ইঞ্জিনটি ডিজাইন করা হয়েছে, এর পরিশোধনের ক্ষমতাও থাকছে উচ্চমাত্রার।

ইঞ্জিনটি ৬.৭ কিলোওয়াটের সর্বোচ্চ পাওয়ার উৎপাদন করতে পারে ৭,৫০০ আরপিএম-এ, আর দিতে পারে ৫,৫০০ আরপিএম-এ ৯ নিউটন-মিটার টর্ক।

স্টাইলিশ এই নতুন মোটরসাইকেলের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে রয়েছে নানা ফিচার। এতে রয়েছে অলটাইম হেডল্যাম্প অন (এএইচও), ডিজিটাল অ্যানালগ মিটার এবং সাইড স্ট্যান্ড ইনডিকেটর। স্প্লিট গ্র্যাব রেইল ফিচারও রয়েছে এই মোটরসাইকেলে।

স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট প্লাস মোটরসাইকেল পাওয়া যাচ্ছে তিনটি রঙে- টেকনো ব্লু মেটালিক, ব্ল্যাক স্পোর্টস রেড এবং স্পোর্টস রেড।

হিরো মোটোকর্প লিমিটেডের সদর দপ্তর নয়াদিল্লিতে। ১৮ বছর আগে যাত্রা শুরু করা এ কোম্পানিটি বিক্রি করেছে ৮ কোটি ৫০ লাখ মোটর সাইকেল ও স্কুটার। কোম্পানিটির রয়েছে মোট ৭টি অত্যাধুনিক কারখানা, যার মাঝে পাঁচটি ভারতে, একটি কলম্বিয়াতে এবং একটি বাংলাদেশে।

বাংলাদেশে হিরো মোটোকর্পের যাত্রা শুরু ২০১৪ সালের এপ্রিলে। নিটল-নিলয় গ্রুপের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। পরে তারা যশোরে একটি কারখানা স্থাপন করে। কারখানাটি বছরে প্রায় দেড় লাখ মোটরসাইকেল উৎপাদন করতে সক্ষম বলে দাবি করে হিরো মোটোকর্প।

দেশজুড়ে ৩৫০টিরও বেশি গ্রাহক কেন্দ্রে বিক্রি হয় হিরোর পণ্য। হিরো মোটোকর্প মোটরসাইকেলের জন্য পাঁচ বছরের ওয়ারেন্টি প্রদানের পাশাপাশি 'আমার হিরো' নামে একটি বিশেষ প্যাকেজের মাধ্যমে গ্রাহকদের ইএমআই সুবিধা দিচ্ছে।