রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিতরণ অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য দেশের ট্র্যাডিশনাল রপ্তানি পণ্যের পাশাপাশি নন-ট্র্যাডিশনাল আইটেম রপ্তানির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দেশের আইটি, ওষুধ, ফার্নিচার, কৃষিপণ্য এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে রপ্তানি ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকার জন্য ৬৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬২টি জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিতরণ করা হয়।
এর মধ্যে ২৯টি প্রতিষ্ঠান স্বর্ণপদক, ২০টি প্রতিষ্ঠান রৌপ্যপদক এবং ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে ব্রোঞ্জ পদক দেওয়া হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধির হাতে ট্রফি ও সনদ তুলে দেন।
সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের ভিত্তিতে এবারও সেরা রপ্তানিকারকের ট্রফি পেয়েছে হোম ও স্পেশালাইজড টেক্সটাইল খাতের কোম্পানি জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস লিমিটেড। এ নিয়ে টানা চতুর্থবারের মত সেরার পুরস্কার পেল প্রতিষ্ঠানটি।
তৈরি পোশাক (ওভেন)
এ খাতে একেএম নিটওয়্যার লিমিটেড স্বর্ণ, রিফাত গার্মেন্টস লিমিটেড রৌপ্য এবং অনন্ত অ্যাপারেলস লিমিটেড ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে।
তৈরি পোশাক (নিটওয়্যার)
ফকির নিটওয়্যার্স লিমিটেড এ খাতে স্বর্ণপদক, জিএমএস কম্পোজিট নিটিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড রৌপ্য এবং স্কয়ার ফ্যাশনস লিমিটেড ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে।
সুতা
এ খাতে কামাল ইয়ার্ন লিমিটেড স্বর্ণ, বাদশা টেক্সটাইল লিমিটেড রৌপ্য এবং সুফিয়া কটন মিলস লিমিটেড ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।
টেক্সটাইল ফেব্রিকস
এনভয় টেক্সটাইল লিমিটেড স্বর্ণ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল রৌপ্য এবং হামজা টেক্সটাইলস ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে এ খাতে।
হোম ও বিশেষায়িত টেক্সটাইল
এই ক্যাটাগরিতে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস লিমিটেড স্বর্ণ এবং এসিএস টেক্সটাইল লিমিটেড রৌপ্য পদক পেয়েছে।
টেরিটাওয়েল
এই খাতে নোমান টেরিটাওয়েল লিমিটেড স্বর্ণ পদক পেয়েছে।
কৃষি পণ্য
মনসুর জেনারেল ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড স্বর্ণ ও ব্রোঞ্জ পদক এবং হেরিটেজ এন্টারপ্রাইজ রৌপ্য পদক পেয়েছে।
অ্যাগ্রো প্রসেসিং
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের তিন কোম্পানি প্রাণ ডেইরি লিমিটেড এ খাতে স্বর্ণপদক, প্রাণ এগ্রো রৌপ্য পদক এবং ময়মনসিংহ এগ্রো ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে এবার।
হিমায়িত খাদ্য
জালালাবাদ ফ্রোজেন ফুডস লিমিটেড স্বর্ণ, মীনহার সি ফুডস লিমিটেড রৌপ্য এবং কুলিয়ারচর সি ফুডস লিমিটেড ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে এই খাতে।
কাঁচা পাট
পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ লিমিটেড ও মেসার্স বাবুল জুট ট্রেডিং এই খাতে স্বর্ণ ও রৌপ্য পদক পেয়েছে।
পাটজাত পণ্য
এই খাতে আকিজ জুট মিলস লিমিটেড স্বর্ণ, জনতা জুট মিলস লিমিটেড রৌপ্য এবং দ্য গোল্ডেন ফাইবার ট্রেড সেন্টার লিমিটেড ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।
ক্রাস্ট বা ফিনিশড লেদার
এসএএফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড স্বর্ণ এবং মেসার্স ঢাকা হাইড অ্যান্ড স্কিনস লিমিটেড রৌপ্য পদক পেয়েছে।
চামড়াজাত পণ্য
পিকার্ড বাংলাদেশ লিমিটেড, আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও এবিসি ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এই খাতে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে।
ফুটওয়্যার
এই খাতে বে ফুটওয়্যার লিমিটেড স্বর্ণ, ফুটবেড ফুটওয়্যার লিমিটেড রৌপ্য এবং আকিজ ফুটওয়্যার লিমিটেড ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।
প্লাস্টিক পণ্য
বেঙ্গল প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ইউনিট-৩ স্বর্ণপদক, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ডিউরেবল প্লাস্টিক লিমিটেড রৌপ্য পদক পেয়েছে এই খাতে।
ফুল-ফলিয়েজ
রাজধানী এন্টারপ্রাইজ স্বর্ণ এবং ক্যাপিটাল এন্টারপ্রাইজ রৌপ্য ট্রফি পেয়েছে।
হস্তশিল্প
কারুপণ্য রংপুর লিমিটেড স্বর্ণ, ক্ল্যাসিক্যাল হ্যান্ডমেইড প্রডাক্টস বিডি রৌপ্য এবং বিডি ক্রিয়েশন ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে।
সিরামিক
শাইনপুকুর সিরামিকস লিমিটেড স্বর্ণ, প্রতীক সিরামিকস লিমিটেড রৌপ্য পদক পেয়েছে।
লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং
ইউনিগ্লোরি সাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড স্বর্ণ পেয়েছে।
ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস
বিআরবি কেব্ল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড স্বর্ণ পেয়েছে।
শিল্পজাত শ্রেণি
বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেড স্বর্ণপদক পেয়েছে।
ফার্মাসিউটিক্যালস
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড স্বর্ণ, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড রৌপ্য, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।
কম্পিউটার সফটওয়্যার
সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড স্বর্ণ পদক পেয়েছে।
প্যাকেজিং ও এক্সেসরিজ
মন ট্রিমস লিমিটেড স্বর্ণ, ইউনিগ্লোরি পেপার অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড রৌপ্য, জাবের অ্যান্ড জোবায়ের অ্যাকসেসরিজ লিমিটেড ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে।
প্রাথমিক পণ্য শ্রেণি
গাজী এন্টারপ্রাইজ স্বর্ণ পদক পেয়েছে।
সংরক্ষিত স্বর্ণ ট্রফি
নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সংরক্ষিত স্বর্ণ ট্রফি পেয়েছে ফেক্সিনকো।
ইপিজেডের শতভাগ বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান
তৈরি পোশাক (নিট ও ওভেন) খাতে ইউনিভার্সেল জিনস লিমিটেড স্বর্ণ, প্যাসিফিক জিনস লিমিটেড রৌপ্য, ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও লিমিটেড ব্রোঞ্জ এবং অন্যান্য পণ্য ও সেবা খাতে আরএম ইন্টারলাইনিংস লিমিটেড স্বর্ণ পদক পেয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, দেশের রপ্তানি খাতকে উৎসাহিত করার জন্য আগামীতে ইপিজেড থেকেও রপ্তানিকারকদের জাতীয় রপ্তানি ট্রফি দেওয়া হবে।
দেশের অর্থনীতির ধারাবাহিক অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ১৯৭২-৭৩ অর্থ বছরে দেশের পাট, চা ও চামড়া খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩৪৮ কোটি টাকা। আর এখন ১৯৯টি দেশে বাংলাদেশের ৭৭২টি পণ্য রপ্তানি করে আয় করছে প্রায় ৩৭ বিলিয়ন ডলার।
“২০২১ সালে এ রপ্তানি ৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। শুধু তৈরি পোশাক রপ্তানি করে আয় হবে ৫০ বিলিয়ন ডলার। পোশাক খাত থেকে গত বছর ৩০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আয় হয়েছে ৩৩.৬৬ বিলিয়ন ডলার।”
বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসুর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য্য অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।