বৃহস্পতিবার স্মার্টফোন ও ট্যাব এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “সরকার যখন গ্রাহক পর্যায়ে ভ্যাট কমিয়েছে, তখন অপারেটরদেরও ইন্টারনেট ভ্যাট ৫ পারসেন্টে নামিয়ে আনতে হবে। প্রয়োজনে তাদের বাধ্য করা হবে। এক্ষেত্রে নিস্কৃতির সুযোগ নাই।
“ইতোমধ্যে বিভিন্ন জনকে (মোবাইল অপারেটরগুলোর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা) ডেকে স্বাভাবিক গলায় বলেছি। প্রয়োজনে গলার স্বর আরও উঁচু করব। প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেব।”
ইন্টারনেটের খরচ না কমার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধতার জন্য অপারেটরদের দায়ী করেন টেলিযোগাযোগমন্ত্রী।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, “ইন্টারনেটের ভ্যাট নিয়ে অপারেটররা নানা সঙ্কটে আছে। ইতোপূর্বে তাদের ভ্যাট কেটে নিয়ে যাওয়ার পর তারা রিবেট পেত। যখন ভ্যাট ফাইভ পারসেন্টে নেমে আসল, তখন তারা অঙ্ক করে দেখল তাদের বিভিন্ন খাতের খরচ ভ্যাটের আওতায় রয়ে গেছে। তারা ইন্টারনেটের নামে যে ভ্যাট কেটে রাখতে পারত, এখন তা পারছে না। আর তাই তারা নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রেখেছে।”
জব্বার বলেন, “যখন আমাদের মোবাইল ডিভাইসের বাজারে লগ্নি সাড়ে ৩ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫০ কোটিতে উন্নীত করার কথা বলছি, তখন বাংলাদেশ দেশে হার্ডওয়ার উৎপাদনের ক্ষেত্রে টেন পারসেন্ট ক্যাশ ইনসেনটিভ দিচ্ছে। মোবাইল ডিভাইস উৎপাদন আর সংযোজনের ক্ষেত্রে ভ্যাট যখন তুলে ফেলেছি, তখন স্মার্টফোন উৎপাদন আর সংযোজনের ক্ষেত্রে আর কোনো সমস্যা আছে বলে আমার মনে হয় না।”
স্যামসাং, হুয়াওয়ের মতো আন্তর্জাতিক স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলো যখন বাংলাদেশে মোবাইল ডিভাইস উৎপাদন করতে আগ্রহী হচ্ছে, তখন নীতি পরিবর্তনে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ভূমিকা রাখবে বলে আশ্বস্ত করেন জব্বার।
মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি দেশের অনেক মোবাইল ফোন কোম্পানিও ফোরজি প্রযুক্তির মোবাইল ডিভাইস উৎপাদনের কথা বলেছে এই অনুষ্ঠানে।
“আমরা আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে চাই। উৎপাদন সংযোজন খাতকে প্রসারিত করতে চাই,” বলেন তিনি।
বাংলা ডট গভ, ইনফো সরকার-২, ইনফো সরকার-৩ প্রকল্পের আওতায় সরকার দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড কানেকভিটি পৌঁছে দিচ্ছে।
তবে পাহাড়, হাওর আর ছিটমহলের মতো দুর্গম এলাকাগুলোতে মোট ৭৭২টি ইউনিয়নে মোবাইল ইন্টারনেট কানেকভিটি পৌঁছে দিতে আইসিটি বিভাগ এখন সরকারের সোশ্যাল অবলিগেশন ফান্ডের (এসওএফ) সহযোগিতা নিচ্ছে বলে জানান জব্বার।
পরে জানান, ডিজিটাল কমার্স নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। মন্ত্রিসভায় তা উত্থাপন করবেন তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হুয়াওয়ে কনজ্যুমার বিজনেস গ্রুপ বাংলাদেশের ক্যান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যারন শি, অপ্পো বাংলাদেশের মার্কেটিং ডিরেক্টর ব্রুস লি, স্যামসাং মোবাইল বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সেংওয়ান, ট্রানশান বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও রেজওয়ানুল হক, এডিসন গ্রুপের সিনিয়র ডিরেক্টর (হেড অব বিজনেস) মাকসুদুর রহমান, উই স্মার্ট সল্যুউশনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ও হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন মুনতাসির আহমেদ, নকিয়া বাংলাদেশের হেড অব মার্কেটিং ইফাত জহুর, ভিভো বাংলাদেশের ক্যান্ট্রি সেলস ডিরেক্টর শ্যারন ওয়েন।
স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট কম্পিউটার নিয়ে দেশে এক্সপো মেকারের আয়োজনে এটি দশম প্রদর্শনী।
এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে স্যামসাং, টেকনো, সিম্ফনি, উই, হুয়াওয়ে, নকিয়া, অপ্পো, ভিভো, আইফোন, লাভা, উইনম্যাক্স, লেনেভো, ডিটেইল, উইমিডিজি, সোলার ইলেক্ট্রোসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও প্রতিষ্ঠান।
এই মেলা চলবে শনিবার পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।