নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যেতে সময় লাগবে: আতিক রহমান

জলবায়ু সঙ্কটে বাংলাদেশের অবস্থান ও করণীয় বিষয়ে ‘ইনসাইড আউট’ এর দ্বিতীয় পর্বে নিজের ভাবনা জানিয়েছেন আতিক রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2023, 03:57 PM
Updated : 12 March 2023, 03:57 PM

অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াতে ‘সময় লাগবে’ বলে মনে করছেন দেশের অগ্রগণ্য পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞানী আতিক রহমান।

তিনি বলেছেন, "নবায়নযোগ্য বা গ্রিন এনার্জির ধারণাটি নতুন এবং বাংলাদেশের বিদ্যমান অবকাঠামোর প্রেক্ষিতে সেদিকে যেতে বাংলাদেশের আরও সময় লাগবে।"

আতিক রহমানের ভাষায়, “আদর্শ পরিবেশ আছে এমন একটি গ্রামে ১০০ পরিবারের জন্য সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা হয়তো ভালো কাজ করতে পারে। কিন্তু যখন লক্ষাধিক পরিবারের শক্তির যোগান দেওয়ার বিষয় আসে, তখন সেটা কঠিন হয়ে যায়।”

রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোচনা অনুষ্ঠান ‘ইনসাইড আউট’ এর দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিয়ে জলবায়ু কূটনীতি আর বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন তিনি। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এবং ফেইসবুকে (https://www.facebook.com/bdnews24)  অনুষ্ঠানটি লাইভস্ট্রিম করা হয়।

আলোচনায় আতিক রহমান বলেন, প্রাযুক্তিগত এই পরিবর্তন এক দিনে সম্ভব নয়। সেটা করার জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রয়োজন।

“সৌর বিদ্যুৎ প্যানেলগুলো চীন থেকে আসে। চীনে যখন এসব প্যানেল তৈরি হবে তখন তা চীনের তাপমাত্রা বাড়াবে। তারও প্রভাব আছে জলবায়ুর ওপর। আবার আমাদের উন্নয়নকেও এগিয়ে নিতে হবে। সুতরাং এটি ছোট বিষয় না, আরও বড় পরিসরে ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

 ‘বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের’ প্রধান নির্বাহী আতিক রহমান এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের পরিবেশ ভাবনা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই উন্নয়নচিন্তার এক গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত করেছেন। 

অনুপ্রেরণাদায়ী নেতৃত্ব এবং পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা ও এর টেকসই ব্যবস্থাপনায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিতে ২০০৮ সালে তাকে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পরিবেশ সম্মাননা, ‘চ্যাম্পিয়ন অফ দ্য আর্থ’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। পরিবেশ ও প্রযুক্তি নিয়ে উদ্ভাবনী গবেষণার জন্য ওই বছরই বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় পরিবেশ পুরস্কার দেয়।

আতিক রহমান দীর্ঘদিন জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) প্রধান লেখক ছিলেন। আইপিসিসি এবং আল গোর ২০০৭ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পায়। ‘আইপিসিসি চতুর্থ পর্যালোচনা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক হিসেবে তিনিও ওই পুরস্কারের অংশীদার।

প্রাযুক্তিগত এই পরিবর্তন এক দিনে সম্ভব নয়। সেটা করার জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রয়োজন।
আতিক রহমান

ধনী দেশগুলো কী করছে?

 জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ আছে সামনের সারিতে। সঙ্গত কারণেই সেই ঝুঁকি মোকাবেলার বিষয়টিতে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

বাংলাদেশকে হিমালয়ের ‘ড্রেনেজ ইকোসিস্টেম’ হিসেবে বর্ণনা করে আতিক রহমান বলেন, “বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত, যথাসম্ভব সমতল এক দেশ। ফলে এই ভূমিটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরদিক এবং ত্রিপুরা থেকে ঢোকা হিমালয়ের নদীগুলোর বয়ে যাওয়ার ক্ষেত্র। সুবিশাল হিমালয় থেকে প্রচুর পানি এই পথে বয়ে যায়। ফলে হিমালয়ে সামান্য বিশৃঙ্খলা মানে এই দেশের জন্যে অনেক বড় বন্যা, কারণ আমরা একটা সমতল ভূমির দেশ।

“কৃষিনির্ভর এই দেশে পানি কৃষিকাজের প্রথম চাহিদা। গত ১৫-২০ বছরে শিল্পের উন্নয়ন হয়েছে, যার বর্জ্য নিষ্কাশনের কাজটিও এই নদীগুলো করে। ফলে নদীগুলো একদিকে যেমন আমাদের জন্য কৃষির উপাদান বয়ে আনে তেমনি আমাদের রপ্তানি চালু রাখার ক্ষেত্রেও কাজ করে। অন্যতম জনবহুল এই দেশে জনসংখ্যার ঘনত্বও বেশি।… নীলনদ কিংবা মিসিসিপির চেয়েও বেশি জনবহুল এদেশের নদী তীর।”

জলবায়ু পরিবর্তনে ধনী দেশগুলোরই বড় ভূমিকা দেখেন আতিক রহমান। তিনি বলেন, “এই ক্ষতি কমাতে কঠিন কাজগুলো আসলে ধনী দেশগুলোর করার কথা। গরিব দেশগুলো তো এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত, আক্রান্ত, বিপর্যস্ত। যারা কি না ইউরোপ, জাপানের মত নিজেদের শিল্পকে আরও আগে বিকশিত করতে পারেনি। বড় দেশগুলোর হাতে মেওয়া ফলটা ছিল, তারাই আগে সব পেড়েছে।”

কিন্তু বড় দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সেভাবে উদ্যাগী হতে চায় না জানিয়ে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, “তারা যদি সস্তায় খেতে ও ব্যবসা করতে চায়, তাহলে কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সামনে আসতে দেওয়া ছাড়া তাদের সুযোগ নেই। কারণ এখানে অনেক মানুষ। এখানে একজন মানুষ যেমন খাওয়ার মুখ নিয়ে সামনে আসছে ঠিক তেমনি দুটো হাত নিয়েও আসছে, যে হাত দিয়ে সে অবদান রাখতে পারে।”

এই হাতগুলোকে পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রতি সহনশীল উপায়ে উৎপাদনে যুক্ত করে পরিবেশের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা হচ্ছে কি না সেদিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান আতিক রহমান।

জলবায়ু কূটনীতি কী তাহলে কাজ করছে?

আতিক রহমানের মতে, বাংলাদেশ জলবায়ু কূটনীতিতে সঠিক পথেই আছে।

“বাংলাদেশ ভালো নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমাদের জনসংখ্যা বেশি, তাই মাথাপিছু এলাকা, সম্পদ সবই কম। এমন বাস্তবতায় তাত্ত্বিক জায়গা থেকে বাংলাদেশ এখানে ঠিক পথেই আছে, কিন্তু সমাধান আমাদের হাতে নেই।

 “আমরা ধনী বা পশ্চিমের কাছে শুধুই সমাধান প্রস্তাব করতে পারি। দিন দিন বিষয়গুলো কঠিন হচ্ছে। কারণ, এখন আমাদের সম্পদ সীমিত, তাই আমরা যা করব তা নতুন করে জলবায়ু পরিবর্তনে নতুন উপাদান যোগ করবে।”

 তিনি বলেন, “বড় এই জনগোষ্ঠীর জন্য কলকারখানাগুলো কীভাবে আরও কার্যকর এবং কম শক্তি ব্যবহার করা প্রযুক্তি দিয়ে উৎপাদন করতে পারছে, তার ওপর নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ। আমরা অনেক ভাগ্যবান যে আমাদের এতগুলো নদী আছে তাই আমাদের নদীকেন্দ্রিক যোগযোগের সুবিধাটা নিতে হবে। এটা স্থল যোগাযোগের চেয়ে খরচেও কম। কোনো একটা গ্রুপ এটা করতে পারবে না, সবাইকে করতে হবে।

“সমস্যা বৈশ্বিক, তাই সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। জলবায়ু বা পরিবেশ কূটনীতির এটি শুরু মাত্র। আমরা যখন এটি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি তখন দেখেছি বিশ্বের অন্য দেশগুলোও অন্যভাবে ভাবা শুরু করেছে। কূটনীতিতে পরিবেশ যখন ভূমিকা রাখবে, তখন এর একটি অর্থনৈতিক দিকও জুড়ে যাবে, কারণ তখন পণ্য কিনতে ও নানা কাজে আরও বেশি অর্থ লাগবে ।”

বাংলাদশ ভালো নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমাদের জনসংখ্যা বেশি, তাই মাথাপিছু এলাকা, সম্পদ সবই কম। এমন বাস্তবতায় তাত্ত্বিক জায়গা থেকে বাংলাদেশ এখানে ঠিক পথেই আছে, কিন্তু সমাধান আমাদের হাতে নেই।
আতিক রহমান


জলবায়ুর তহবিল কতটা কাজে লাগানো যাবে?

আতিক রহমান বলেন, ‘ক্লাইমেট রেসিলিয়েন্ট ফান্ড’ করার ক্ষেত্রে বাংলাদশ সরকার এবং বিজ্ঞানীদের অনেক অবদান রয়েছে। যেসব দেশ এজন্য নেতৃত্ব দিয়েছে, বাংলাদেশ তাদের অন্যতম।

 “এটা বলে ফেলা খুব সহজ যে, একটি ফান্ড আছে। কিন্তু বিষয় হল, সেখানে কত টাকা আছে, কারা সেই টাকা দিচ্ছে, সেই টাকা উঠিয়ে নিজের দেশে আনার যে ‘গেইম’ সেটা কতটা সহজ সেই চিন্তাটাও করতে হবে। এখন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়ের দিকেও নজর দিতে হচ্ছে। প্রয়োজনের খাতিরেই এখন অনেক নিয়মকানুনও তৈরি হয়েছে।

“কতো টাকা আসবে, কীভাবে আসবে এসব নিয়ে আগে ভাবতে হবে। এখানে দেশের, সরকারের অনেক এজেন্সি এই পরিবেশ রক্ষার সাথে যুক্ত। তাদের আমরা কীভাবে ব্যবহার করব, প্রশিক্ষণ দেব সেটি গুরুত্বপূর্ণ। সব এজেন্সি যেন জানে, বোঝে সেটা দেখতে হবে।“

তিনি বলেন, “আমাদের বেসরকারি খাত দিন দিন বড় হচ্ছে। অর্থনীতি, উৎপাদন ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রও বাড়ছে তাদের। সরকারের যে দেশ চালানোর অর্থ, তা তো মানুষ আর এসব বেসরকারি খাতের রাজস্ব থেকেই আসে। তাই আমাদের আরও স্মার্ট ও স্বচ্ছ হতেই হবে। আমাদেরকে আরও স্পর্শকাতর হতে হবে, যাতে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় আমরা পরিবেশকে কেন্দ্রে রাখতে পারি।

“দেখা যায় এক জায়গায় শক্তির ব্যবহার কমাতে গেলে অন্য জায়গায় উৎপাদন কমে যায় বা সেটা কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়। তাই এ ব্যবস্থার মধ্যে আমরা কীভাবে আন্তঃমন্ত্রণালয় ভারসাম্য তৈরি করছি সেটা গুরুত্বপূর্ণ।”

চলমান ডলার সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে যে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে তার মধ্যে ১.৪ বিলিয়ন ডলার রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) এর আওতায় দেওয়া হচ্ছে। এই তহবিল তাহলে বাংলাদেশের কতটা কাজে লাগবে?

এই প্রশ্নের উত্তরে আতিক রহমান বাংলাদেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর বিপরীতে যথেষ্ট অর্থ আসবে কি না সেদিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।

কয়লায় উল্টোযাত্রা কেন

 সর্বশেষ জলবায়ু সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিশ্বকে সতর্ক করে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের এই বিপদে মানবজাতি এক ‘নরকের মহাসড়কে’ উঠে পড়েছে। এ বিপদ থেকে রেহাই চাইলে ২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বে কয়লার ব্যবহার ধাপে ধাপে কমিয়ে আনতে আনতে হবে।  

বাংলাদেশ যখন দশটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে, পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে অনেক দেশ নতুন করে এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার পথে হাঁটছে।

তাহলে উন্নত দেশগুলো কি জলবায়ু নিয়ে উদ্বেগের চেয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে?

আতিক রহমান বলেন, “প্রথমত এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে, কীভাবে কতটুকু কার্যকরভাবে চালালে, বা কতটুকু পরিবেশের ক্ষতি কমালে অর্থনীতি সচল থাকবে। গত দুই বছর কোভিডের সময়ে পুরো বিশ্বজুড়ে কম জ্বালানির প্রয়োজন হয়েছে, কিন্ত যখনই মহামারী চলে গেছে তখন আবার সব চালু হয়েছে, বেশি জ্বালানি লাগছে, পুড়ছেও বেশি।

 “বাংলাদেশের মত দেশে জনসংখ্যা বাড়তে থাকায় চাহিদার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে, আবার আমাদের মানুষ ও পণ্য যাতায়াতের জন্যেও অনেক জ্বালানি ব্যবহার করতে হচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষের জন্য নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থাও করতে হচ্ছে। এর সবকিছুতেই আমাদের জ্বালানি লাগে।”

তিনি বলেন, “দিনশেষে আমরা যাই করি, তার সবই আমাদের পরিবেশে যায়। যার ফলে, তাপমাত্রা বাড়ে। এটা কার কার্বন ডাই অক্সাইড তা বললে হবে না, সমস্যা বৈশ্বিক, এটা সবার কার্বন ডাই অক্সাইড। যারা আগে এসেছে তাদের কার্বন নিঃসরণ অনেক বেশি, আর চীন-ভারত-ব্রাজিলের মত যারা এখন এই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে তারা সাথে একটা বিশাল জনগোষ্ঠীকেও নিয়ে আসছে।”

কেমন হবে বাংলাদেশের কৌশল?

 বাংলাদেশের জ্বালানি ব্যবহার ও কার্বন নিঃসরণ প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে আতিক রহমান বলেন, “জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা আরও কৌশলী হতে পারি। তবে আমরা যে কার্বন নিঃসরণ করি, তা নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম, ৩০ শতাংশেরও নিচে। সুতরাং জ্বালানি ব্যবহার বাড়ানোর অধিকার আমাদের আছে। শিল্পোন্নত দেশ বা ভারত, চীনের মত বড় দেশের চেয়ে আমরা এখনও কম ব্যবহার করি। আমাদের বেশি শক্তি যায় শহরাঞ্চলে, আর গ্রামীণ কৃষিতে।

 “আমাদের মূল ক্ষতিটা হয় আমাদের রান্নার আগুন জ্বালানো থেকে। আমরা রান্না করব, কিন্ত এতে যেন আমাদের গাছ ধ্বংস না করি। আমরা যদি আমাদের রান্নার চুলাটি আধুনিকভাবে ডিজাইন করি শুধু তাতেই আমরা তিনগুণ কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে ফেলতে পারি। আমাদের রান্নার সময় যে হিটটা বাইরে চলে যায়, সেটা কমাতে পারলে আমাদের পরে আরও কম জ্বালানি পোড়াতে হয়।”

দিনশেষে আমরা যাই করি, তার সবই আমাদের পরিবেশে যায়। যার ফলে, তাপমাত্রা বাড়ে। এটা কার কার্বন ডাই অক্সাইড তা বললে হবে না, সমস্যা বৈশ্বিক, এটা সবার কার্বন ডাই অক্সাইড।
আতিক রহমান

তার ভাষায়, “আমরা পরিবেশের ক্ষতিটা বুঝি, কিন্তু একটা পর্যায়ে গিয়ে পশ্চিমের সাথে তুলনা করি যে তারা কতটা ক্ষতি করছে। হ্যাঁ তারা খারাপ করছে, আমাদেরও ভাবনার জায়গা আছে। আমরা কীভাবে আমাদের উন্নয়নের ধারাকে চলতে দেব, বিকল্প কীভাবে ভাবব, কীভাবে আমরা পরিবেশের প্রতি সহনশীল হয়ে উন্নয়ন করব । আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা, উন্নয়ন, নিরাপদ পানি নিশ্চিতসহ সব লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। কিন্তু সেটা পরিবেশের ক্ষতি কমিয়ে।”


তবুও আশাবদী

সরকারি পর্যায়ে পরিবেশ সচেতনতার পরামর্শ রেখে আতিক রহমান বলেন, “আমাদের উপকূলীয় এলাকার মানুষ সচেতন, আমরা অনেক ভাগ্যবান যে আমাদের অনেক এনজিও আছে যারা পরিবেশ নিয়ে কাজ করছে, অনেক বিজ্ঞানী, পরিবেশকর্মীও কাজ করছেন। তাই মানুষের সাথে আমাদের যোগাযোগটাও অনেক দেশের চেয়ে ভালো।

“আমাদের নারী-পুরুষ সমানভাবে স্মার্ট, দুই লিঙ্গের মানুষই কাজ করছে, স্কুলে যাচ্ছে, এটাও আমাদের জন্য ইতিবাচক যে ছেলে মেয়ে সবাই পরিবেশ নিয়ে প্রচলিত প্রাথমিক জ্ঞান পাচ্ছে। বাড়ি থেকেও পরিবেশ নিয়ে বাচ্চাদের সচেতন করতে হবে। পরিবেশ নিয়ে কাজের ক্ষেত্রে আমরা অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে আছি।“

আতিক রহমান বলেন, “আমাদের আরও বেশি করে গাছ লাগাতে হবে, যোগাযোগ খাতে পুরনো বাজে গাড়ি কমিয়ে আধুনিক কম জ্বালানি ব্যবহার করা ও কম কার্বন নিঃসরণ করা গাড়ির ব্যবহার বাড়াতে হবে।”