“এই বন্দর জিডিপিতে অন্তত ২ শতাংশ অবদান রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে,” বলেন ড. হাইডে সাকাগুচি।
Published : 19 Mar 2024, 08:19 PM
কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের উদ্যোগকে সঠিক সময়ে সঠিক স্থানে সঠিক পরিকল্পনা বলে বর্ণনা করেছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
তার কথায়, “বঙ্গোপসাগর হচ্ছে ভারত মহাসাগরের গ্রেট মিডল বে অঞ্চলের কেন্দ্রবিন্দু। ফলে পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের বাণিজ্যিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও এই সাগর ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল, ভুটান ও ভারতের সেভেন সিস্টার্সের সমুদ্র যোগাযোগের দ্বারও উন্মুক্ত করবে মাতারবাড়ীর এই গভীর সমুদ্র বন্দর। এসব কিছু বিবেচনা করে বলা যায়, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরটি সঠিক সময়ে, সঠিক ভৌগলিক অবস্থানে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত।”
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে ‘বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর: মাতারবাড়ী, বঙ্গোপসাগরে নতুন দৃশ্যের সূচনা' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাপানের সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশনের ওশান পলিসি রিসার্চ ইউনিট এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে ২০২০ সালে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান।
ইতোমধ্যে গভীর সমুদ্র বন্দরের ৩৫০ মিটার প্রশস্ত ও ১৬ মিটার গভীরতার ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ চ্যানেল নির্মাণ করা হয়েছে। গত ১১ নভেম্বর এই গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনালের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে স্পিকার বলেন, “এই অঞ্চলের সঙ্গে জাপান ও এর প্রতিবেশী দেশগুলোও মাতারবাড়ী বন্দরের মাধ্যমে তাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সহজ করতে হবে। সে কারণে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরকে গেইম চেইঞ্জার হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন।”
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, “মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি ঘটাবে। এছাড়া এই অঞ্চলের অন্যান্য স্থলবেষ্টিত দেশগুলোর জন্যও এই বন্দর উপযোগী হবে। এটি এমন একটি গেটওয়ে, যা বাংলাদেশের মাধ্যমে নেপাল, ভুটানের মতো স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্রগুলোর সাথে সংযোগ রক্ষাকে সহজতর করবে৷”
ওশান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ড. হাইডে সাকাগুচি বলেন, “১৯৮০ এর দশকে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নতি করতে গিয়ে জাপান পরিবেশের বেশ খানিকটা ক্ষতি করেছিল। আর এখন বাংলাদেশ এসব বিষয়ে সতর্ক থেকেই এখনকার উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো নিচ্ছে। সমুদ্র যোগাযোগের ক্ষেত্রে বঙ্গোপসাগরের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।”
ড. হাইডে বলেন, “মাতাবাড়ীতে জাপানের বিনিয়োগ বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রা ও গভীর সমুদ্রবন্দরের অভাব ঘুচাতে সাহায্য করবে। কলম্বো ও সিঙ্গাপুরের সমুদ্রবন্দরের ওপর নির্ভরশীলতাও কমে আসবে।
“পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি পোশাক শিল্পের রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে এই বন্দর সহযোগিতা করবে। এই বন্দর জিডিপিতে অন্তত ২ শতাংশ অবদান রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে।”
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশেদ আলম, ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি ইওয়ামা এবং জাইকা বাংলাদেশের চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ তমোহিডে ইচিগুছি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।