গভর্নর বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার কথা বলেছেন, ভাষ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুখপাত্রের।
Published : 11 Nov 2024, 11:22 PM
সিনিয়র অফিসারের ওপরের সকল পদে পদোন্নতিতে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা ডিগ্রি বাধ্যতামূলক না রাখার প্রস্তাব করেছেন ১৭টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকে গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে এক সভায় তারা এ প্রস্তাব করেছেন বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা পরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
শিখা বলেন, “ডিপ্লোমা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক না রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা। এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করার কথাও গভর্নরকে বলেছেন তারা। গভর্নর বলেছেন এ বিষয়ে বিবেচনা করে দেখবেন।”
২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকিং পেশায় সব ধরনের পদোন্নতিতে ব্যাংকিং বিষয়ে ডিপ্লোমা সনদের বাধ্যবাধকতা আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তখন এক আদেশে বলা হয়, “দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ব্যাংকিং খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যাংকিং খাতে মৌলিক ব্যাংকিং জ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির আবশ্যকতা অনস্বীকার্য।
“ব্যাংক কর্মকর্তাদের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিনিয়র অফিসার অথবা সমতুল্য পদের পরবর্তী সকল পদে পদোন্নতির যোগ্যতার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য ব্যাংকিং ডিপ্লোমা উভয় পর্ব পাস বাধ্যতামূলক করা হল।”
তবে ব্যাংকাররা ওই সার্কুলার বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই দাবি পুরোটা মেনে না নিলেও ছয় মাস পর কিছুটা ছাড় দিয়ে নতুন সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ওই বছরের ২৩ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক করা সংক্রান্ত সার্কুলার জারির আগে নিয়োগ ও পদোন্নতি পাওয়া ব্যাংকারদের নিজ ব্যাংকে পরবর্তী এক ধাপের পদোন্নতিতে ব্যাংকিং প্রফেশনাল এক্সাম পাস করা লাগবে না।
এক্ষেত্রে এক ধাপ পদোন্নতি নিতে ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া লাগবে না। তবে পরবর্তী পদোন্নতিতে ওই পরীক্ষায় পাস বাধ্যতামূলক হবে।
সোমবার গভর্নরের সঙ্গে সভায় চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও ১৩টি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উপস্থিতি ছিলেন।
সভায় তারল্য সংকটের মধ্যে দিয়ে যাওয়া দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সহায়তার পরামর্শ দিয়েছেন গভর্নর। হুসনে আরা শিখা বলেন, “যেসব ব্যাংকে আমানতের অবস্থান তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে রয়েছে, তারা যেন দুর্বল ব্যাংকদের তারল্য সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রাখে।”
বর্তমানে ইসলামী ধারা ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সংকট চলছে। গ্রাহকরা ব্যাংকে গিয়ে প্রয়োজন মোতাবেক টাকা পাচ্ছেন না। নতুন গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব ব্যাংকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেন আহসান এইচ মনসুর।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা দেওয়ার বদলে আন্তঃব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা দেওয়ার কথা বলেন তিনি। সে অনুযায়ী ইস্টার্ন ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, সোনালী ব্যাংক, ডাচ বাংলা ও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে মোট ৪ হাজার ৬৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার জন্য চুক্তি করেছে।
পুরনো খবর-