৮০ টাকার কমে সবজি পাওয়াই দায়

“কৃষকের কাছে সবজি যদি না থাকে, তাইলে বাজারে আসব ক্যাম্নে,” বললেন এক বিক্রেতা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2023, 12:21 PM
Updated : 20 Oct 2023, 12:21 PM

বাজারে শীতের সবজি উঠতে শুরু করলেও মুখ ভার করেই ফিরতে হচ্ছে ক্রেতাদের। ঢাকার বিভিন্ন কাঁচাবাজারে ৮০ টাকার নিচে এক কেজি সবজিও মিলছে না, কোনোটা আবার ১০০ টাকাও ছাড়িয়েছে।

শুক্রবার কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেল, কম দামের সবজি বলতে বাজারে আছে কেবল পটল, আলু, পেঁপে ও লম্বা বেগুন। বাকি সবকিছুর দাম কেজি প্রতি ৮০ থেকে ১২০ টাকা।

বিক্রেতারা কচুমুখী, ঢেঁড়স, করলা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা বিক্রি করছেন ৮০ টাকা কেজিতে। পটল বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৬০ টাকা, লাল আলু ৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, পেঁপেও ৬০ টাকা।

এর বাইরে দেশি টমেটোর দাম কেজিতে ১০০-১২০ টাকা। শীতের সবজি শিমের দাম ১৬০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, উচ্ছে ১২০ টাকা, কাঁচামরিচের দাম দোকানভেদে ২০০-২২০ টাকা, গোল বেগুন ১২০ টাকা। আর রান্নার ‘অপরিহার্য’ অনুষঙ্গ পেঁয়াজের দাম এখন ৮০-১০০ টাকা।

বর্ষা শেষে দেশের বিভিন্ন এলাকায় শীতের আমেজ শুরু করেছে, কম হলেও আসতে ‍শুরু করেছে শীতের সবজি। তাহলে দাম এত কেন?

ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, টানা বৃষ্টিতে ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চাহিদা মত সবজি ঢাকায় আসছে না। আর তাতে সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকার মত বেড়েছে।

আগামী এক মাস সবজির দাম বাড়তিই থাকবে বলে মনে করছেন কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা রাসেল।

তার কথায়, “বাজারে সাপ্লাই কম। টানা যখন বৃষ্টি হইল, ওই সময় কোনো সবজি ঢাকায় আসতে পারে নাই।  অনেক সবজি পইচা গেছে। এখন কৃষকের কাছে সবজিই যদি না থাকে, তাইলে বাজারে আসব ক্যাম্নে?”

বাড়তি দাম নিয়ে যে ‘যুক্তি’ই দেখানো হোক, এ পরিস্থিতিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বেশিরভাগ ক্রেতাকে। চড়া বাজারে কিছুটা কম দামের আশায় কারওয়ান বাজারে আসেন আশপাশের অনেকেই।

হাতিরপুল থেকে আসা সরকারি চাকরিজীবী মামুন বলেন, “কারওয়ান বাজারে আসার কারণ- হাতিরপুল বাজারে জিনিসপত্রের দাম এখানের চেয়ে বেশি। সেক্ষেত্রে ৩০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে যদি অন্তত ৩০০ টাকা বাঁচে, ক্ষতি কি!”

সবজি কিনতে গিয়ে হিমশিম খাওয়ার দশা জানিয়ে তিনি বলেন, “বাচ্চা বেগুন ভাজি খেতে পছন্দ করে বলে বেগুন কিনলাম। কিন্তু বেগুনের দাম পড়েছে ১১০ টাকা। বাসার ওখান থেকে কিনলে এই বেগুনের দাম অন্তত আরও ২০ টাকা বেশি পড়ত।”

ডিম ও মুরগি এখনও বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা গেল, লাল ও সাদা- দুই ধরনের ডিমই বিক্রি হচ্ছে ডজন ১৫০ টাকায়।

ডিম বিক্রেতা জুয়েল শিকদার বলেন, “ডিমের দাম দুই দিন ধইরা তো তাও কম। মাঝে ১৫৫ টাকা হইয়া গেছিল।”

দাম বাড়তি কেন জানতে চাইলে বললেন, “তা আমরা বলতে পারব না। আমাদের কেনা পড়ে ১৪৫ কইরা। পাইকাররা বলে যে বাজারে ডিমের আমদানি কম।”

এ বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি এখন ১৯০ টাকা, সোনালি মুরগির দাম ৩০০ টাকা। বড় রুই ও কাতল মাছের কেজি ৪০০-৪৫০ টাকা, মাঝারি আকারের পাবদার কেজি ৪৫০-৫০০ টাকা, বড় গলদা চিংড়ির দাম ১৪০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেল।