Published : 07 Feb 2022, 06:28 PM
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় গ্রামীণ মেলা সাধারণত এক দিনের হয়ে থাকে। আবার কোথাও একাধিক দিনও মেলা চলে। মেলার সময় ব্যস্ততা তুঙ্গে উঠে কুটিরশিল্পীদের।
পৌষ-মাঘ শুরু হতেই কুটিরশিল্পীরা ফেরেন পুরনো পেশায়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বানান নানা শিল্প সামগ্রী। মাঘের প্রথম দিন বিভিন্ন জায়গার মেলায় পসরা সাজানো হয়।
বাশাটি, পাহাড়পাবইজান, কাঠবওলা, কালিবাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় শীতের সময় এক দিনের মেলা বসে। উপজেলার রওয়ারচর , কান্দিগাও, পালপাড়ায় কুম্ভকার, কোচ সম্প্রদায়ের বাস। এক সময় ওইসব পাড়ার বাসিন্দাদের বাঁশের ঝুড়ি-কুলো, মাটির আসবাবপত্র সহ বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি ছিল একমাত্র জীবিকা। চাহিদা কমে যাওয়ায় পরিবারের মহিলারা টুকটাক কাজ করলেও বেশির ভাগ পুরুষই চলে গিয়েছেন অন্য পেশায়। কিন্তু মেলায় বিক্রির জন্য মাস খানেক আগে থেকে ওই সব পুরুষও ফিরেন পারিবারিক পেশায়।
এক দিনের মেলায় এখনও মোটামুটি বিক্রিবাটা হয় বলেই মাস খানেক আগে থেকে শিল্প সামগ্রী তৈরি করে রাখেন বলে জানালেন বেশ কয়েকজন কুটিরশিল্পী।
"লাভ যাই হোক না কেন, ধারাবাহিকতার কারণে শিল্পসামগ্রী নিয়ে মেলায় যাওয়াটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে ।"
আগে বায়োস্কোপ, সার্কাস, ম্যাজিক এমন নানা রকম খেলা নিয়ে মেলার কয়েকটা দিন এলাকা জমজমাট হয়ে থাকত। এখন আর সেই জমাটে দশা নেই। কুটিরশিল্পীদের মতো হারিয়ে গেছে ওই সব বিনোদনও।
যন্ত্র সভ্যতার যুগেও হাতা, খন্তি, ঝুড়ি, কুলা, বেলনা, দা-বটির মতো কিছু সামগ্রীর উপযুক্ত বিকল্প নেই। তাই সারা বছরের প্রয়োজনের জন্য ওই সব সামগ্রী কেনার জন্য মেলায় যেতেই হয়।
গ্রামের লোকেদের মিলিত হওয়ার সব থেকে বড় জায়গা গ্রামীণ মেলা। এখানে মানুষ মেলামেশা করতে পারে। হস্তশিল্পী-সহ বিভিন্ন মানুষ নিজেদের তৈরি জিনিস বিক্রি করেন মেলায়। এই মেলাগুলি মুক্তাগাছার অর্থনীতির ফুসফুস।