Published : 26 Oct 2018, 04:09 PM
বড় খামারিরা যারা প্রধানত খাবার এবং বাচ্চার ডিলার বা নিজেরাই বাচ্চা উৎপাদন করে তাদের কাছে গৃহস্থালী ভিত্তিক খামারিরা জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে বাগেরহাটের অনেক খামারিরাই জানিয়েছেন।
বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম হঠাৎ করে কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি অারও মারাত্মক হয়েছে। ছোটো খামারিরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। পরের মাসগুলোতেও লাভ হবে সে নিশ্চয়তা নেই। অথচ এই খামারিদের কাছ থেকে মুরগি প্রতি বাচ্চা, খাবার এবং ওষুধ সরবরাহ বাবদ অগ্রীম ঠিকই লাভ করে নিয়েছেন ডিলাররা, জানান ক্ষতিগ্রস্ত ছোট খামারিরা।
তাদের অভিযোগ, ডিলার এবং বড় খামারিরা বাজারটাও নিয়ন্ত্রণ করছে।
ব্রয়লার মুরগি দেড়-দুই কেজি হওয়ার পর সেগুলো রেখে দেওয়াটা ঝুঁকি। মরে যাওয়ার সম্ভাবনা যেমন রয়েছে পাশাপাশি যে হারে ব্রয়লার মুরগি খাবার খায় সে হারে আর বাড়ে না। তবে দাম মাঝে মাঝে কমিয়ে দিলে খামারিরা মুরগি আরও কিছুদিন রেখে দেওয়ার চেষ্টা করেন, তখন খাবারের চাহিদা বাড়ে।
বড় খামারিরা যারা নিজেই একজন ডিলার এবং বাচ্চা সরবরাহকারী, তাদের লাভ মূলত মুরগি বড় করে বিক্রি করায় নয়, তারা লাভ করে বাচ্চা, খাবার এবং লজিস্টিক বিক্রি করে।
খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখান থেকেই বাজার 'নিয়ন্ত্রণ' হয়।
বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা গেল গৃহস্থালী ভিত্তিক খামারিরা এখন ব্রয়লার চাষ ছেড়ে দেশি মুরগির দিকে ঝুঁকতে চাচ্ছেন। অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগে পালন করা ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ক্ষতির দিকটাও ইতোমধ্যে এদের অনেকেই জেনেছেন।
বাধাল গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, জয়ন্ত নামে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া শিক্ষার্থী মুরগির খামার নিয়ে কাজ করছেন। তার সঙ্গে কথা বলে জানলাম, এলাকার লোকের 'ক্ষতির' দিকটি তিনি জেনেছেন বলেই দেশি মুরগি পালনে এই খামার তৈরিতে লেগেছেন ।
জয়ন্ত যখন তার খামারের নকশাটি দেখাচ্ছিল অামি বেশ উৎসাহ বোধ করছিলাম। ইউটিউব ঘেঁটে দেখলাম দক্ষিণ আমেরিকার কিছু দেশে এ ধরনের খামার রয়েছে। সেখানে অর্গানিক পদ্ধতিতে স্থানীয় প্রজাতির মুরগির চাষ করা হয়।
জয়ন্তর মতো তরুণরা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে সহযোগিতা পেলে অর্গানিক পদ্ধতিতে মুরগি চাষ করে সাবলম্বী হতে পারবে। এতে মানুষের জন্য বিশুদ্ধ আমিষ জাতীয় খাবারের সরবরাহ নিশ্চিত হবে এবং ভেঙ্গে যাবে পোলট্রি শিল্পের অবৈধ সিন্ডিকেট।