সেই পাইলটের চুক্তি নবায়ন করেনি বিমান

মাঝ আকাশে শিক্ষানবিশের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার তদন্তও চলছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2023, 05:10 PM
Updated : 31 May 2023, 05:10 PM

আন্তর্জাতিক একটি ফ্লাইটে নিজের আসন ছেড়ে উড়োজাহাজের নিয়ন্ত্রণ একজন শিক্ষানবিশ ও একজন লাইসেন্সবিহীন পাইলটের হাতে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট দিলদার আহমেদ তোফায়েলের বিরুদ্ধে। সেই ফ্লাইটে একজন যাত্রী অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছিলেন। এরপর থেকেই ‘গ্রাউন্ডেড’ ছিলেন ক্যাপ্টেন দিলদার।

চলতি মাসে তার চাকরির চুক্তির মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও তা আর নবায়ন করেনি বিমান। সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, এখন দিলদারের আর চাকরি নেই বিমানে, তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর তদন্ত এখনও চলছে।

অভিযোগের বিষয় পাইলট দিলদারের কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।

বিমানের কর্মকর্তারা জানান, গত ১৫ জানুয়ারি জেদ্দা ছেড়ে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-৩৩৬ ফ্লাইটটির পাইলট-ইন-কমান্ড ছিলেন ক্যাপ্টেন দিলদার। তিনি বিমানের চুক্তিভিত্তিক পাইলটদের একজন। ওই ফ্লাইটে শিক্ষানবিশ কো-পাইলটের পরীক্ষক (ট্রেইনি এক্সামিনার) হিসাবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। সেই ফ্লাইটে পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) একজন ফ্লাইট অপারেশন ইন্সেপেক্টর, যার যাত্রীবাহী বিমান চালানোর লাইসেন্স নেই। ফ্লাইটটি মাঝপথে থাকা অবস্থায় ওই দুজনের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে মূল পাইলট দিলদার নিজের আসন ছেড়ে বিশ্রামকক্ষে চলে গিয়েছিলেন।

প্রাথমিক তদন্তে ক্যাপ্টেন দিলদারের বিরুদ্ধে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর বা এসওপি লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক ছিদ্দিকুর রহমান জানিয়েছেন।

তার চুক্তির মেয়াদ না বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, “ক্যাপ্টেন দিলদার আসলে কন্ট্রাক্টচুয়াল ছিল। অভিযোগ ওঠার পর তাকে গ্রাউন্ডেড করা হয়। এরপর তার কন্ট্রাক্টের ডেট পার হয়ে গেলেও তা আর রিনিউ করা হয়নি। এমনিতে এক বছর পরপর কন্ট্রাক্ট রিনিউ হত। তিনি এখন চাকরিচ্যুত।”

অভিযোগের তদন্ত এখনও চলছে জানিয়ে যুগ্ম সচিব ছিদ্দিকুর বলেন, “তার অপরাধের মাত্রা কতটুকু … সামগ্রিক বিষয়গুলো নিয়েই এখন তদন্ত হচ্ছে। যাত্রী মারা যাওয়া একটা কো-ইন্সিডেন্স। এখানে তার দায় কতটা সেটা তদন্তে দেখা হচ্ছে। কখন উনি বাংকে গিয়েছেন। উনার নির্দেশনা কী ছিল। উনার দায়িত্বে অবহেলা ছিল কি না, ইত্যাদি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

“প্রথমে ইনিশিয়াল ইনকোয়্যারি করা হয়েছিল। ইনিশিয়াল ইনকোয়্যারিতে পরিষ্কারভাবে কিছু আসেনি। এজন্য ফারদার ইনকোয়্যারি করা হচ্ছে। বিমানও করছে, সিভিল এভিয়েশন থেকেও করা হচ্ছে।”

ক্যাপ্টেন দিলদার চাকরিতে না থাকলে তদন্তে দায়ী হলে শাস্তি কেমন করে নেওয়া হবে- প্রশ্নে ছিদ্দিকুর বলেন, “তখন সিভিল এভিয়েশন অ্যাক্টে যা আছে, তারা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান আছে।”

বিমান কর্মকর্তারা জানান, ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনাকে বড় ধরনের অবহেলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। প্রমাণ হলে পাইলট লাইসেন্সও হারাতে পারেন ওই বৈমানিক।