বইমেলায় প্যাভিলিয়ন বন্ধ চায় লেখক পাঠক প্রকাশক পরিষদ

সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকায় স্টল বরাদ্দের দাবি জানানো হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2022, 01:43 PM
Updated : 27 Nov 2022, 01:43 PM

সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় সবার জন্য একই ধরনের স্টল বরাদ্দের দাবি জানিয়ে ২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলায় প্যাভিলিয়ন প্রথা বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ লেখক পাঠক প্রকাশক পরিষদ।

শনিবার বিকালে ঢাকার কাঁটাবনের পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হয়।

এতে করোনাভাইরাস মহামারীর মন্দা ও ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে কাগজের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় প্রকাশনা শিল্প সংকটে পড়েছে দাবি করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে পরিষদের আহ্বায়ক ও শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবিন আহসান বলেন, গত তিন বছর করোনাভাইরাস মহামারীর ফলে দেশের প্রকাশনা শিল্প ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাম্প্রতিক বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রভাবও পড়েছে দেশে। কাগজসহ প্রকাশনা সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক সব কিছুর (প্লেট, ছাপা, বাঁধাই) মূল্য বেড়েছে।

ব্যাংক ঋণ ও বই বিক্রির হার কমে যাওয়ায় গত দুই বইমেলায় প্রকাশকরা লোকসান ও ক্ষতির মুখে আছেন দাবি করে তিনি এবারের অমর একুশে বইমেলা ছোট পরিসরে আয়োজনের আহ্বান জানান।

২০২৩ সালের বইমেলার প্রস্তাবিত একটি খসড়া প্রদর্শন করে তিনি বলেন, “এই লে-আউটটিকে আদর্শ ধরে নিয়ে মেলার ডিজাইন করতে হবে। সেক্ষেত্রে মেলার পরিসর ছোট হয়ে আসবে এবং পাঠক ও মেলায় আগতদের জন্য স্টল ও পুরো মেলা ঘুরে দেখার সুযোগ বাড়বে। প্রকাশকরা সকলেই লাভবান হবে।”

তাদের এ প্রস্তাব বাংলা একাডেমি, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

পরিষদের সদস্য সচিব এসএম মাসুদুল ইসলাম নীলসহ কয়েকটি প্রকাশনা কোম্পানির প্রকাশকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে-

>> প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া বন্ধ রাখতে হবে এবং সব প্রকাশনার জন্য একটি নির্দিষ্ট মাপ (১৬ ফুট বাই ৮ ফুট) সাইজের স্টল বরাদ্দ করতে হবে।

>> প্রকাশনা শিল্পের ক্ষতির কথা বিবেচনায় নিয়ে আসন্ন একুশে বইমেলায় স্টল ভাড়া সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করতে হবে।

>> সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব পাশে ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের পার্শ্বে কোনো বইয়ের স্টল বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। গত দুটি মেলায় সেই স্থানে যে সকল প্রকাশক স্টল বরাদ্দ পেয়েছিলেন, তারা সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

>> বইমেলায় খাবারের দোকান নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

>> প্রবেশ ও বাহির এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে টিএসসির গেইট ও বাংলা একাডেমির গেইটটিকে প্রাধান্য দিয়ে মেলার লে-আউট করতে হবে।

>> বইমেলায় নিরাপত্তার ইস্যুটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে এবং মেলায় আগতদের প্রবেশ ও বাহির পথে সবদিকে ট্রাফিক কন্ট্রোল সুশৃঙ্খল যথাযথ করতে হবে। ছুটির দিনে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।

>> পাঠকদের সামর্থ্য বিবেচনায় নিয়ে প্রকাশকরা বইয়ের মূল্য নির্ধারণ করবেন।

>> কাগজ সংকট ও অন্যান্য কারণে বই প্রকাশের সংখ্যা কমে গেলে লেখক/কবি সাহিত্যিক যারা আছেন তারা সরাসরি ক্ষতিগস্ত হবেন। বাংলাদেশে রয়্যালটি প্রদান নিয়ে লেখকদের নানা আপত্তি রয়েছে। বাংলাদেশ লেখক পাঠক প্রকাশক পরিষদ আশা করে সকল প্রকাশনা সংস্থা লেখকদের প্রদেয় রয়্যালটি প্রদানে স্বচ্ছতা বজায় রাখবেন।

>> শিশুদের জন্য মেলার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বতন্ত্র আঙ্গিনা বরাদ্দ করতে হবে।

>> লিটল ম্যাগ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে লিটল ম্যাগের জন্য স্বতন্ত্র জায়গা বরাদ্দ রাখতে হবে।

>> গাড়ি, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল ইত্যাদি যানবাহন পার্কিং- এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।